“জয় বাংলা” ধ্বনি কোন অলৌকিক গ্রন্থের পরলৌকিক বাণী নয়। মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ বাঙালী “জয় বাংলা” পড়ে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে শতভাগ ধর্মনিরপক্ষ মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে । বাহাত্তরের সংবিধানই বাংলাদেশ রাষ্ট্র পরিচালনার চুড়ান্ত পথ।
বাহাত্তরের সংবিধান অস্বীকার করে বাংলাদেশে কেঊ রাজনৈতিক দল গঠন করতে পারবে না । জাতীয় সংসদে যে দলই সংখ্যাগরিষ্ঠ হোক ধর্মনিরপক্ষতায় অটল থাকার শর্তে সরকার গঠন করবে । গঠিত সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার সঙ্গে ধর্মকে কোন ভাবেই সম্পৃক্ত করবে না । কোন্ ধর্মের নিয়মে কী আছে তা রাষ্টীয় বিষয় নয়, ধার্মিকের ব্যক্তিগত উপলব্ধির ব্যাপার । বাংলাদেশে যে ধর্মের যত ভাগ মানুষই থাকুক না কেনো যার যার ধর্ম সে সে ব্যক্তিগতভাবে পালন করবে ।নিজের ধর্ম অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা অমার্জনীয় অপরাধ। রাষ্ট্র বাহাত্তরের সংবিধান দিয়েই পরিচালিত হবে চিরদিন ।
বাংলদেশ বঙ্গালীর ইহলৌকিক মুক্তিসংগ্রামে অর্জিত রাষ্ট্র । বাংলাদেশে শিশুরা বড় হবে খাঁটি বাঙ্গালীর বোধ ধারন করে। করো সঙ্গে শত্রুতা নয়, পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের যা কিছু সুন্দর তা গ্রহনের জন্য বঙালী শিশুদের থাকবে সর্বদা খোলা মন ।
বাংলদেশ কোনো ধর্মগ্রন্থ শাসিত দেশ নয় । এদেশে বাউলরা আসর জমাবে, শিল্পীরা ছবি আঁকবে নতুন নতুন ভাষ্কর্য বানাবে, লেখকরা নির্ভয়ে লিখবে, দর্শন যুক্তির চর্চা হবে, প্রকৌশল প্রযুক্তির গবেষনা হবে।
নারী-পুরুষ-তৃতীয়লিঙ্গ সবাইকে সামাজিক নিরাপত্তা সমান পেতে হবে । নারী ধর্ষন যারা করে, শিশু ধর্ষন যারা করে তাদের কোন ক্ষমা নাই। দেশের স্বাধীনতা যারা খর্ব করে তাদের ক্ষমা নাই। ঘুষ দুর্নীতি মাদক ভেজালবাণিজ্য যারাই করবে তাদের বিচার হতেই হবে । হোক সে সুপ্রিম আমলা, হোক বিশাল রাজনীতিক । কেউ আইনের উর্ধে থাকবে না। সুযোগ সন্ধান আর আপোশের পথ নয় বাহাত্তরের সংবিধানই বাংলাদেশ রাষ্ট্র পরিচালনার চুড়ান্ত পথ ।