করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের ফলে পথশিশু, শ্রমজীবী মানুষ ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সৃষ্ট খাদ্য সমস্যার সমাধানে বিদ্যানন্দের সহায়তায় প্রায় ৯০০০ মানুষের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করেছে ‘করোনা মোকাবিলায় আমরা, বাংলাদেশ কর্মসূচি’। ২২ এপ্রিল পর্যন্ত গাজীপুর জেলার টঙ্গী ও ঢাকা শহরের প্রায় ৩০টি এলাকাতে রান্না করা খাবার ও সবজি বিতরণ করা হয়। জেসিজেআই’র সুলতান জানান, এই করোনা সঙ্কটে আমাদের কৃষকরাও মহাসঙ্কটে আছে, বিক্রয় করতে পারছে না ফসল, ফেলে দিচ্ছে। আমরা ঐ সকল কৃষকের কাছ থেকে সবজি নিয়ে ঢাকা ও গাজীপুরের সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছি। এতে করে সম্ভাব্য নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবারগুলোরও একটা সদ্যবহার হচ্ছে, কৃষকরাও এই সঙ্কটে অবদান রাখতে পারছে।
‘করোনা মোকাবিলায় আমরা, বাংলাদেশ কর্মসূচি’তে ২৩টি স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংগঠন কাজ করছে। তিনি আরো বলেন, কার্যক্রমটি সুষ্ঠভাবে পরিচালনার জন্য কবি নীল সাধুকে আহ্বায়ক ও ঢাকা আহছানিয়া মিশনের শেখ মহব্বত হোসেনকে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি বাংলাদেশে যতদিন করোনা সঙ্কট থাকবে ততদিন সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করে যাবে। বিশেষ এই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২০ এপ্রিল একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।এ প্রসঙ্গে স্ট্রিট চিল্ড্রেন এক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক, স্ক্যান বাংলাদেশের সেক্রেটারি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, কভিড-১৯ এর কারণে পথশিশুরা চরম ঝুকির মধ্যে আছে। একদিকে যেমন তাদের খাবারের সঙ্কট রয়েছে, অন্যদিকে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এমন অবস্থায় আমরা বিদ্যানন্দের সাথে যোগাযোগ করলে তারা পথশিশুদের জন্য খাদ্য সহায়তার প্রস্তাব দেয়। কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে পরবর্তীতে শ্রমজীবী ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে এই খাদ্য সহায়তার আওতায় নিয়ে আসি ও অন্যান্য সংগঠনকে যুক্ত করি।
স্ক্যানের সভাপতি জাহাংগীর নাকিরের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, ‘বাংলাদেশে সবচেয়ে করোনা ঝুঁকিতে রয়েছে পথশিশুরা। বিভিন্ন সূত্রমতে ঢাকাতেই প্রায় চার লক্ষ পথশিশু আছে। তাদের ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে তাদের মাধ্যমে গণমানুষের মধ্যে ব্যাপকাকারে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে এ ভাইরাস।’ বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সমন্বিত প্রচেষ্টায় অস্থায়ী শেলটার ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা কেন্দ্র গড়ে তাদের নিরাপদ আবাসন নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানান তিনি।নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক নীলসাধু বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশে ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য ও অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে, অনাহারী মানুষের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এটি বেশ কিছুদিন চলবে বলেই আমাদের মনে হয়েছে। আমরা এই ফোরামে তৃণমূলের সংগঠনকেও যুক্ত করেছি, এই দূর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাথে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সুরক্ষায় কাজ করতে চায়।করোনা এখন শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়, এটি এখন বৈশ্বিক সমস্যা। তাই সকলে মিলে এটিকে মোকাবিলা করা জরুরি।