সম্পর্ক ডেস্ক:যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী রোববার থেকে সীমিত পরিসরে যাত্রীবাহী ৮টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে। প্রতিটি ট্রেনে আসন সংখ্যা অনুযায়ী ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি করা যাবে।এজন্য আজ শনিবার থেকেই শুরু হয়েছে টিকিট বিক্রি কার্যক্রম।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে প্রথম দফায় রোববার থেকে আন্তঃনগর সুবর্ণ এক্সপ্রেস (চট্টগ্রাম-ঢাকা-চট্টগ্রাম), উদয়ন এক্সপ্রেস (চট্টগ্রাম-সিলেট-চট্টগ্রাম), লালমনি এক্সপ্রেস (লালমনিরহাট-ঢাকা-লালমনিরহাট), কালনী এক্সপ্রেস (সিলেট-ঢাকা-সিলেট), চিত্রা এক্সপ্রেস (খুলনা-ঢাকা-খুলনা), সোনার বাংলা এক্সপ্রেস (ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা), বনলতা এক্সপ্রেস (চাপাইনবয়াবগঞ্জ-ঢাকা-চাপাইনবয়াবগঞ্জ) ও পঞ্চগড় এক্সপ্রেস (পঞ্চগড়-ঢাকা-পঞ্চগড়) চলবে।
আগামী ৩ জুন থেকে দ্বিতীয় দফায় আরো ৯টি আন্তঃনগর ট্রেন চালু হবে। সেগুলো হলো ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ বাজার রুটের তিস্তা এক্সপ্রেস, ঢাকা-বেনাপোলের বেনাপোল এক্সপ্রেস, ঢাকা-চিলহাটির নীলসাগর এক্সপ্রেস, খুলনা-চিলহাটির রূপসা এক্সপ্রেস, খুলনা-রাজশাহীর কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস, রাজশাহী-গোয়ালন্দঘাটের মধুমতি এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে মেঘনা এক্সপ্রেস, ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটে কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ও ঢাকা-নোয়াখালী রুটের উপকূল এক্সপ্রেস।
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের জানান , প্রাথমিকভাবে ১৫ জুন পর্যন্ত ট্রেন চলবে। তারপর সরকার থেকে নতুন কোনও নির্দেশনা আসলে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করা হবে।
রেল মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ট্রেন পরিচালনায় রেল বিভাগ প্রস্তুত। ইতিমধ্যে কোন রুটে কয়টি ট্রেন চলবে তার রোডম্যাপ তৈরি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী রেলপথে যাত্রী পরিবহনে কয়েকটি নির্দেশনা মানতে বলেছে।
সেগুলো হচ্ছে.. স্টেশনগুলোতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম সংরক্ষণ,জরুরি পরিকল্পনা প্রণয়ন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্র স্থাপন, প্রতিটি ইউনিটের জবাবদিহি নিশ্চিত করা,রেলওয়ে কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা,রেলকর্মীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক অবস্থা নথিভুক্ত করা,অসুস্থতা অনুভবকারীদের সঠিক সময়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া, তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণের সরঞ্জাম স্টেশনগুলোর প্রবেশপথে স্থাপন করা, স্টেশনে আগত সবার তাপমাত্রা পরীক্ষা করা, যেসব যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকবে- তাদের অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইনে রাখা এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করা, ট্রেনে বায়ু চলাচল বৃদ্ধি। সেন্ট্রাল এয়ারকন্ডিশনার ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক মাত্রায় চালানো এবং বিশুদ্ধ বাতাস চলাচল বৃদ্ধি করা। সব এয়ার সিস্টেমের ফিরতি বাতাস বন্ধ রাখতে হবে, জনসাধারণের ব্যবহারের স্থানগুলো জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে, টয়লেটগুলোতে তরল সাবান থাকতে হবে, সম্ভব হলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং হাত জীবাণুনাশক যন্ত্র স্থাপন করা যেতে পারে।যাত্রীদের অপেক্ষা করার জন্য ট্রেন কম্পার্টমেন্ট ও অন্যান্য এলাকা যথাযথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। প্রতিটি ট্রেন যাত্রা শুরুর আগে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। সিট কভারগুলোকে প্রতিনিয়ত ধোয়া, পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করতে হবে। প্রতিটি ট্রেনে হাতে-ধরা থার্মোমিটার থাকতে হবে। যথাযথ স্থানে একটি জরুরি এলাকা স্থাপন করতে হবে। যেখানে সন্দেহজনক উপসর্গ আছে এমন যাত্রীদের অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইনে রাখা যাবে।যাত্রীদের অনলাইনে টিকিট ক্রয় করার জন্য পরামর্শ দিতে হবে। সারিবদ্ধভাবে ওঠানামার সময়ে যাত্রীদের পরস্পর থেকে এক মিটারেরও বেশি দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। যাত্রী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষার ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে। মাস্ক পরতে হবে এবং হাতের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর রাখতে হবে। প্রত্যেক যাত্রী এবং রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে হাঁচি দেওয়ার সময় মুখ এবং নাক টিস্যু বা কনুই দিয়ে ঢেকে নিতে হবে। পোস্টার ও ইলেকট্রনিক স্ক্রিনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য জ্ঞান পরিবেশন জোরদার করতে হবে। মাঝারি ও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা দিয়ে যাতায়াত করা ট্রেনে টিকিটের মাধ্যমে যাত্রী সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও যথাসম্ভব যাত্রীদের আলাদা বসার ব্যবস্থা করতে হবে। যদি করোনা রোগী পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে টার্মিনালগুলোকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের গাইডলাইন অনুযায়ী জীবাণুমুক্ত করতে হবে