সৌদি আরব জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় সফররত সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সাউদ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে তেল সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হবে না। ভবিষ্যতে নিরাপত্তা ও বহুজাতিক সম্পর্ক আরো জোরদার করতে ঢাকা ও রিয়াদ একসঙ্গে কাজ করবে।
বুধবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় রাজনৈতিক আলোচনা শেষে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, তার দেশ বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ বাড়াতে চায়।
বাংলাদেশি হজ যাত্রীদের জন্য ভিসা ক্লিয়ারেন্সের শতভাগ কার্যক্রম ঢাকায় সম্পন্ন করার বিষয়েও আশ্বাস দিয়েছেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
রাজনৈতিক সংলাপের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশে বিশেষায়িত শিল্পাঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহী সৌদি আরবের ২৮টি কোম্পানি। এ দ্বিপক্ষীয় রাজনৈতিক আলোচনায় দুই দেশের মধ্যে দুটি সমঝোতা স্মারক চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে একটি কাস্টমস ম্যানেজমেন্ট নিয়ে, অন্যটি বাংলাদেশ-সৌদি আরবের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে।
ড. মোমেন বলেন, হজে যারা যাবেন, তারা যেন এ দেশে সহজে ভিসা করে যেতে পারেন সে বিষয়ে আমরা বলেছি। যেন হয়রানি কম হয় তাদের। সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, শতভাগ ভিসা ক্লিয়ারেন্স বাংলাদেশে হয় সেজন্য তারা সহযোগিতা করবেন। সব কার্যক্রম এখানে হলে কোনো হয়রানি হবে না। এতে আমাদের হাজিরা খুব খুশি হবে।
বৈঠকে আলোচনার প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য সৌদি আরবের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। সৌদি আরব ৫০ বিলিয়ন বৃক্ষরোপনের উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা এ উদ্যোগে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছি।
মোমেন বলেন, প্রতি বছর ২৬৫ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে স্কলারশিপ দেয় সৌদি আরব। তবে মাত্র ৮০ জন শিক্ষার্থী যায়। কোটা কেন পূরণ হয় না? এ বিষয়ে আমরা আলাপ করেছি।
বেলা পৌনে ১১টায় বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে প্রথম দ্বিপক্ষীয় পলিটিক্যাল কনসালটেশনট শুরু হয়। এক ঘণ্টার কম সময় ধরে চলে এ বৈঠক। বৈঠক শেষে শুল্ক খাতে সহযোগিতা বাড়াতে চুক্তি ও বাংলাদেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমি ও বাদশা ফয়সাল ইনস্টিটিউটের মধ্যে সহযোগিতা স্মারক সই করে ঢাকা ও রিয়াদ।
উল্লেখ্য, প্রথমবারের মতো মোমেন ও সাউদের মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে সকালে ঢাকা সফররত সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনের আমন্ত্রণে দুই দিনের সফরে মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকায় আসেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিমানবন্দরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৌদি মন্ত্রী আল সাউদকে স্বাগত জানান।
২০১৬ সালের মার্চে তৎকালীন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল বিন আহমেদ আল-যুবায়ের ঢাকা সফর করেছিলেন। প্রায় ছয় বছর পর দেশটির কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে এলেন।