বাড়িতে কেউ বাস না করলেও একটি আবাসিক ভবনের মিটারে আগস্ট মাসের বিদ্যুৎ বিল এসেছে প্রায় ১১ লাখ টাকা। ভুলবশত এমনটি হয়েছে বলে জানিয়েছে পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১।
পাবনার চাটমোহর পৌর সদরে জিরো পয়েন্ট এলাকার অধীর কুমার সরকার নামের এক বিদ্যুৎ গ্রাহকের ক্ষেত্রে ঘটেছে এমনই তুঘলঘি ঘটনা।
বাড়ির মালিক অধীর কুমার সরকার মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। কিন্তু, বাড়ির বৈদ্যুতিক সংযোগটি তার নামে রয়ে গেছে। তার তিন ছেলের মধ্যে সবার ছোট অনুপ কুমার সরকার বাড়িটি দেখভাল করেন। তিনি চাকরির সুবাদে ঢাকায় বাস করেন। গত ৬ মাস ধরে পাবনার ওই বাড়িতে থাকেন না কেউ।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পাবনা পল্লী বিদ্যুত সমিতি-১ এর মিটার রিডার কাম ম্যাসেঞ্জার রেজাউল করিম অধীর কুমার সরকারের বাড়ির বিদ্যুতের মিটারের আগস্ট মাসের বিল প্রতিবেশী বকুল রহমানের কাছে দেন। বকুল বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ দেখে আঁতকে ওঠেন। তিনি বিষয়টি মোবাইল ফোনে অনুপ কুমার সরকারকে জানান।
বিল হাতে পাওয়ার পর মিটার রিডার রেজাউলকে ডেকে জিজ্ঞাসা করা হয়। তিনি বিলের কপিটি ফেরত নিতে চান। পরে রাতে আবার নতুন করে প্রিন্ট দেওয়া হয় এই বিল। সকালে পাবনা পল্লী বিদ্যুত সমিতি-১ এর সহকারী মহাব্যবস্থাপককে (এজিএম-অর্থ) দিয়ে জোরপূর্বক নতুন বিল চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন মিটার রিডার।
বিদ্যুৎ বিলের কপিতে দেখা যায়, আগস্ট মাসের বিল এসেছ ১০ লাখ ৮২ হাজার ৬১ টাকা! বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়েছে ৯০ হাজার ১৫০ ইউনিট। বিল প্রস্তুতকারক আসমা খাতুন। এজিএম (অর্থ) ওই বিলে স্বাক্ষর করেছেন।
অনুপ কুমার সরকার জানিয়েছেন, তাদের পরিবারের কোনো সদস্যই ৬ মাস ধরে পাবনার ওই বাড়িতে থাকেন না। এরকম ভুতুড়ে বিল পেয়ে তারা ক্ষুব্ধ।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারসহ এলাকাবাসী অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর গ্রাহকরা।
এ বিষয়ে বিল প্রস্তুতকারী আসমা খাতুন বলেছেন, ‘মানুষই তো ভুল করে। কাজ করতে গেলে একটু ভুল হতেই পারে।’ এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান তিনি।
পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) আকমল হোসেন বলেছেন, ‘বিলটি কেউ ক্রসচেক করলে এমনটি হতো না। যদি কারো দোষ থাকে, খতিয়ে দেখে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’