বাংলাদেশে বিজয়ের ৫০ বছর উৎযাপিত হয়ে গেলো লাল সবুজের আলোতে আলোকিত হয়ে। আনন্দ উৎসবে মুখরিত হয়ে। নানা রকমের অর্জন এবং প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি রয়েছে এই ৫০ বছরে।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ পায় স্বাধীনতার পদধ্বনি। তারপর ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন , ১৯৬৯ সালের গন অভূ্যত্থান সব কিছুর মাঝেই বাংলাদেশের মানুষের মনে জেগে উঠেছিলো স্বাধীনতার আকাংখা ।
১৯৭১ সালের ২৫সে মার্চ ছিলো বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ কালো রাত্রি। পাক সেনাবাহিনী চালাতে শুরু করে গণহত্যা ও অমানবিক নির্যাতন । সে থেকেই মুক্তিযুদ্ধের সূচনা । বাংলাদেশের কৃষক, শ্রমিক, কুলি, মুজুর, ছাত্র ও সাধারন মানুষ প্রানের ঝুকি নিয়ে পাড়ি জমায় ভারতে। তাঁরা সবাই প্রশিক্ষণ নেয় মুক্তিযুদ্ধের । থ্রি নট নট থ্রি রাইফেল নিয়ে মুক্তিযুদ্ধারা ধান ক্ষেত , পাট ক্ষেত , নদী নালা অতিক্রম করে ছুটে নানাভাবে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর চলার পথ রোধ করার জন্য ও দেশের ভেতরে যারা ছিলেন তাদের নিরপত্তার জন্য।
নয় মাসের সংগ্রাম ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মুক্তি লাভ করে বাংলাদেশ পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর হাত থেকে । পুরো ডিসেম্বর মাসটাই ছিলো আমাদের বিজয়ের মাস। সে থেকেই আমরা ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস পালন করি।
তবে মনে প্রশ্ন জাগে যে আশা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ সংগ্রাম করে দেশ স্বাধীন করেছিলো তাদের কি সে আশা পুরন হয়েছে?তারা কি ঠিক এমন বাংলাদেশই চেয়েছিলো ? ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট নিষ্ঠুর ঘাতক দল নিশংস ভাবে হত্যা করে পুরো পরিবার সহ বঙ্গবন্ধুকে। সেটা বাংলাদেশের ইতিহাসে সব চাইতে কলঙ্কময় অধ্যায় ।
তারপর নানা মতাবলম্বি সরকার দেশ শাসন করেন তাদের নিজস্ব চিন্তাধারায় । তবে এই কথা অনিস্বিকার্য গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের অর্জন প্রচুর । অর্থনৈতিক ভাবে বাংলাদেশ প্রচুর উন্নতি করেছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমেরিকার পররাষ্ট মন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে তলাহীন বাস্কেট বলেছিলেন। এই ৫০ বছরে বাংলাদেশ কথাটা যে কতবড় ভুল সেটা প্রমান করেছে। বিশেষ করে নারী উন্নয়নে ও অগ্রগতিতে আমরা প্রচুর এগিয়ে এসেছি । বড় বড় পদে নিযুক্তে আছেন নারীরা ।তাছাড়াও নারীরা পাচ্ছে নানা রকমের কাজের সুবিধা। কিন্তু তাই বলে নারী নির্যাতন থেমে গেছে সে কথাও বলা যাবে না। নারী নির্যাতিত হচ্ছে বহু ভাবে বহু ক্ষেত্রে।
৫৫ হাজার বর্গ মাইলের একটি ছোট দেশে ১৭ কোটি মানুষের বসবাস । যার ফলে যানজটে মানুষের জীবন দুর্বিষহ ।
এখনো বাংলাদেশে সুশাসনের প্রচুর ঘাটতি রয়েছে। দেশে আইন আছে কিন্তু আইনের ব্যাবহার নাই বিচার নাই। অর্থ বলে এবং ক্ষমতা বলে বড় বড় অপরাধীরাও মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে । স্বজন প্রীতি , খুন ডাকাতি , দুর্নীতি , কালোবাজারি , ধর্ষণে ভরে গেছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে বলতে হবে সরকারী দলের সুশাসনের অভাব রয়েছে প্রচুর । নিচু পর্যায় থেকে উচু পর্যায় পর্যন্ত বিনা ঘুষে কোন কাজ হয় না। এটা খুবই দুঃখ জনক এই ব্যাপার গুলোতে সরকার তেমন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না ।
এতো কিছুর পরও আমাদের স্বীকার করতেই হবে যেখান থেকে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিলো তার থেকে শতগুন এগিয়েছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উন্নতির শীর্ষে উঠেছে । সে জন্য এখনো আমরা প্রান খুলে গাইতে পারি “ আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি”।