ভাদ্রের এমনি এক দিনে বিদায় নেন নিপীড়িত মানুষের দীপ্তশিখা বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। আজ ১২ ভাদ্র, তার ৪৪তম প্রয়াণ দিবস। ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ অবিভক্ত বাংলার বর্ধমান জেলার চুরুলিয়ায় যে কবির আবির্ভাব ঘটেছিল, ঢাকার পিজি হাসপাতালে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্রে ৭৭ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। নজরুলের ২৩ বছরের সাহিত্য জীবনের সৃষ্টিকর্ম বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ।
পুরো জাতি আজ যথাযোগ্য মর্যাদায় গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করবে জাতীয় কবিকে। সারাদেশে কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দিনটি পালিত হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত কবির সমাধি ছেয়ে যাবে বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর ভালোবাসার ফুলে।
জাতীয় কবি মাথানত করেননি অর্থবিত্ত বৈভবের কাছে। ‘চির উন্নত মম শির’ খ্যাত এ কবি সংগ্রাম করে গেছেন মানবতার মুক্তির জন্য। কখনো সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সোচ্চার, আবার কখনো মুক্তবুদ্ধি ও চিন্তার নির্ভীক কান্ডারী। তার রচিত ‘চল্? চল্? চল্?’ গানটি আমাদের রণসংগীত।
বাংলা সাহিত্যে স্বতন্ত্র ভাষারীতি ও শব্দের প্রয়োগে এক নতুন কাব্যধারার সংযোগ করেছিলেন নজরুল। বাংলা কবিতাকে সমৃদ্ধের পাশাপাশি উত্তর ভারতীয় রাগসংগীতের ওপর রচনা করেছিলেন আধুনিক বাংলা গানের নতুন অধ্যায়। শুধু তাই নয়, নজরুলের হাত ধরেই এসেছিল বাংলা গজল।
বিশেষ এই দিনটিকে ঘিরে থাকে বিভিন্ন আয়োজন। কিন্তু করোনাকালীন পরিস্থিতির কারণে এবার তা সীমিত আকারে পালন করা হবে। প্রিয় কবিকে এবার স্মরণ করা হবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃতু্যবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বুধবার দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। এছাড়া কবির পরিবারের সদস্যরাসহ বিভিন্ন অনুরাগীরাও শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন ‘গাহি সাম্যের গান, মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই; নহে কিছু মহীয়ান’ খ্যাত বিদ্রোহী বীরের সমাধিতে। এ সময় ফাতেহা পাঠ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া বিভিন্ন টিভি চ্যানেল এরই মধ্যে কবির জীবন ও সাহিত্যকর্ম নিয়ে নির্মাণ করেছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও নাটক।