কম্বোডিয়ায় রোববার জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। তবে এই নির্বাচনে দেশটির দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের কার্যত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীই নেই।
রাজধানী নমপেনের ভোটে অংশ নেওয়া লোকজন বিবিসিকে বলেছেন, তারা আশা করছেন ক্ষমতাসীন কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) পার্লামেন্টের সবকটি ১২৫টি আসনে আবারও জয়লাভ করবে।
৩৮ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন হুন সেন। গত মে মাসে দেশটির একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য বিরোধী দলকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে দেশটিতে হুন সেনকে চ্যালেঞ্জ করবে এমন কোনো রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ত্বই নেই। সমালোচকরা তাই এই ভোটকে প্রতারণা বলে অভিহিত করেছেন।
নমপেনের একজন ত্রাণকর্মী চলতি সপ্তাহের শুরুতে বিবিসিকে বলেছেন ‘এটি কারচুপির নির্বাচন, কারণ এখানে কোনো শক্তিশালী বিরোধী দল নেই।’
যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জনগণকে যখন প্রার্থী বাছাইয়েরই সুয়োগ দেওয়া হচ্ছে না তখন সর্বোচ্চ সম্ভাব্য ভোটদান নিশ্চিত করার জন্য, সরকার নির্বাচন বর্জন বা ব্যালট পেপার নষ্ট করার যেকোনো প্রচেষ্টাকে অপরাধ বলে ঘোষণা দিয়েছে।
চলতি বছর বিরোধী আইনপ্রণেতারা তাদের ওপর সহিংস হামলার খবর দিয়েছেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক বিরোধীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে ও নির্বিচারে গ্রেপ্তার করেছে।
মে মাসে সরকার দেশের প্রধান বিরোধী দল ক্যান্ডেললাইট পার্টিকে কৌশলে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করে। দেশটির জাতীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, দলটির কিছু কাগজপত্র পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ গত নির্বাচনে এসব কাগজপত্রের কোনো প্রয়োজনই ছিল না। গত বছর স্থানীয় নির্বাচনে দলটি ২২ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। বিশ্লেষকরা বলছেন, হুন সেন তার শাসনের জন্য দলটিকে সম্ভাব্য হুমকি হিসেবে দেখেছেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে নেতৃস্থানীয় বিরোধী দলীয় ব্যক্তিত্ব কেম সোখাকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ২৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সময় দেশটির মূল সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব ডেমোক্রেসি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, হুন সেনা তার বড় ছেলে হুন মানেটের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা করছেন। সম্ভবত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এটি ঘটবে। সেনাপ্রধান হুন মানেট তার বাবার পাশাপাশি সিপিপির প্রচারণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন।