সাঈদ তারেক: বিসিএস ক্যাডার হলেও এরা দলীয় ক্যাডারের চরিত্র ভুলতে পারে নাই। ক’দিন আগে কুড়িগ্রামে ডিসি এডিসির মাস্তানীর পর গতকাল দেখা গেল মানুষের এই বিপদেও আর এক ক্যাডার গুন্ডামী করছে। কত বড় পাষন্ড- বাবার বয়সী দুই বৃদ্ধকে কান ধরে দাঁড় করিয়ে রেখে নিজেই তার ছবি তুলিয়েছে, ফেসবুকে আপলোডও দিয়েছে! টিভি নিউজের স্ক্রলে দেখলাম আর এক ভ্রাম্যমান আদালত (নিশ্চয়ই সেও এক ক্যাডার) হুকুম অমান্য করে যাত্রী নিয়ে দক্ষিনাঞ্চলে রওনা হওয়ার অভিযোগে একটি লঞ্চকে আটক করে মাঝ নদীতে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন দিয়েছে। কয়েক শত যাত্রী নিয়ে ওই লঞ্চকে ১৪ দিন মাঝ নদীতে নোঙর করে বসে থাকতে হবে! বুঝুন অবস্থা!
আমার সন্দেহ এইসব ক্যাডার আগে দলীয় ক্যাডার ছিল কিনা! গুন্ডামী মাস্তানী করে হাত পাকানোর পর বিশেষ বিবেচনায় সরকারি ক্যাডারের পদ বাগিয়েছে! যদি লেখাপড়া করে যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ পেতো- তাহলে এমন করতে পারতো না। সব বিসিএস ক্যাডারই কিন্তু এমন করে না, অযোগ্য অপদার্থরাই মনে করে মুই কি হনুরে।
পুলিশ ভাইদের মনের অবস্থা বুঝি। করোনার ভয় তাদেরও আছে। সতর্কতা হিসেবে গোটা জনগোষ্ঠী ঘরে বসে থাকলেও তাদেরকে ঝুঁকি নিয়ে ডিউটি করতে হচ্ছে। মানুষের প্রয়োজনে ছুটে যেতে হচ্ছে। সব সময় মাথা ঠান্ডা রাখা যায় না। তারপরও বলবো, মানবিক হোন। এই মহা দুর্যোগেও যারা পথে বেড়োয় তারা হাওয়া খেতে যায়না, নেহায়েৎ প্রয়োজনে বা বিপদে পড়েই ঘরের বাইরে আসে। এরা বিত্তহীন, নিম্নবিত্ত। কারও খাবার দরকার অষুধ দরকার। কেউ হয়তো টাকার সন্ধানে বের হয়। অসুস্থ আত্মীয়কে দেখতে যায়।
রাস্তায় পেলেই ধরে ধরে পেটাতে হবে কান ধরে উঠবোস করাতে হবে চুল কেটে দিতে হবে- এ সব করতে দেখেছি একাত্তুরে খানসেনাদেরকে, মার্শাল ল’কালে। জনগনের পুলিশদেরকে এসব মানায় না। আপনারা বিপদাপন্নদের সাথে ভাল ব্যবহার করুন। জানতে চান কেন সে পথে বেড়িয়েছে। পারলে তাকে সাহায্য করুন। কারও খাদ্যের দরকার হলে যোগাড় করে বাড়ীতে পৌঁছে দিয়ে আসুন।
সে সুবাদে খবর নিয়ে আসুন ওই এলাকায় কার কার জরুরী সহায়তা লাগবে। এগুলোই জনসেবা। বিপদের দিনে পাশে দাঁড়ালে মানুষ মনে রাখে। তাতে পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে।
তবে হ্যাঁ, অনেকদিন পাবলিক পেটানো হয়না বলে যাদের হাত নিশপিশ করছে, একটু ধৈর্য্য ধরুন, এই বালা মুসিবত কেটে গেলে আবার রাজনীতি শুরু হবে, আবার বিরোধী দল মাঠে নামবে, তখন মনের সুখে পেটাতে পারবেন! মানুষ পেটানোর সময় এখন না।