প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সরকারের জারি করা করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিধি নিষেধের বিরুদ্ধে কানাডার রাজধানী অটোয়াতে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন হাজার হাজার মানুষ।
শনিবার (২৯ জানুয়ারি) দেশটির পার্লামেন্টের সামনে তীব্র শীত উপেক্ষা করে বিক্ষোভে অংশ নেন সেখানকার বাসিন্দারা।
এদিকে নিরাপত্তা জনিত কারণে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো ও তার পরিবারের সদস্যদের রাজধানী অটোয়া থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সিবিসি সংবাদ মাধ্যম। নিরাপত্তা জনিত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতেও রাজি হয়নি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
আন্দোলনকারীদের দাবি, তারা শান্তিপূর্ণভাবে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে রাস্তায় নেমেছেন। পুলিশ জানায়, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। এছাড়াও সহিংসতা প্রতিরোধে প্রস্তুত রাখা হয়েছে পুরিশ সদস্যদের।
চলতি মাসের শুরুর দিকে সরকার যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সীমান্ত অতিক্রমকারী ট্রাক চালকদের জন্য করোনার টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করে দেশটির লিবারেল সরকার। এরপর থেকেই দেশটির পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে শত শত ট্রাকচালক রাজধানী অটোয়ায় পার্লামেন্ট ভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন। এ সময় সরকার তাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। নতুন বিধিনিষেধ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত কোনোভাবেই অটোয়া ছাড়বেন না বলে জানিয়েছেন আন্দোলনের আয়োজকরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, অটোয়ার রাস্তার পাশে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে বড়বড় ট্রাক। এ সময় ওভারপাসে জড়ো হওয়া লোকজন কানাডার জাতীয় পতাকা উড়িয়ে তাদের স্বাগত জানায়। এ সময় অনেককেই ট্রুডো বিরোধী বিভিন্ন গান গাইতেও দেখা গেছে।
এদিকে ৯৯ হাজার দাতার কাছ থেকে এগোফান্ড মিয়ে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সাড়ে ৫৪ লাখ মার্কিন ডলার সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া আন্দোলনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র এবং যুক্তরাজ্যের কৌতুক অভিনেতা রুসেল ব্রান্ড।
উইন্ডসর থেকে আসা এক ট্রাক চালক বলেন, ‘সীমান্ত অতিক্রম করতে না পারায় আমার উপার্যন একদম বন্ধ হয়ে গেছে। আমি আমার পরিবারের একমাত্র উপার্যন করা ব্যক্তি।’ তিনি পার্লামেন্টের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের ভেতর থেকে টিকা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় এটি খুবই বিপদজনক একটি বিষয়।’
ব্রোকভিল থেকে ১১৫ কিলোমিটার ট্রাক চালিয়ে আন্দোলনে অংশ নিতে আসাা হ্যারন্ড জনকার বলেন, ‘আমরা মুক্ত হতে চাই, আমরা আবার আমাদের পছন্দ অনুযায়ী কাজ করতে চাই। আমরা বেঁচে থাকার আশা চাই। কিন্তু সরকার তার সবকিছুই কেড়ে নিচ্ছে।’