টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশের সফলতা জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পুরস্কার দিয়েছে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই)।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ‘ইমিউনাইজেশনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের স্বীকৃতি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
‘ইমিউনাইজেশনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের স্বীকৃতি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাকে এ পুরস্কার দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনের (জিএভিআই) বোর্ড সভাপতি ড. এনগোজি অকোনজো ইবিলা এবং সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেথ ফ্রাংকিলন বার্ক্লে।
ড. এনগোজি অকোনজো তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়ার আগে একটি এ বিষয়ে একটি সম্মাননাপত্র পাঠ করেন ড. এনগোজি অকোনজো ইবিলা।
সম্মাননাপত্রে বলা হয়, টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে সারা বিশ্বে কোটি কোটি শিশুর জীবন বাঁচাতে বিশ্ব ব্যক্তিত্বদের ত্যাগ ও সফলতার স্বীকৃতি দিতে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পুরস্কার চালু করে জিএভিআই। এই পুরস্কার তাদের জন্য যাদের পরিষ্কার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে এবং শিশুদের জীবন রক্ষাকারী জরুরি টিকাদানে কাজ করেন এবং একটি শিশুও বাদ যাবে তা নিশ্চিত করে।
সম্মাননাপত্রে শেখ হাসিনা ইমিউনাইজেশনের ক্ষেত্রে সত্যিকারের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
সম্মাননাপত্র পাঠ ও সম্মাননা পদক হাতে তুলে দেওয়ার আগে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন অ্যা ইমিউনাইজেশনের (জিএভিআই) বোর্ড সভাপতি ড. এনগোজি অকোনজো ইবিলা এবং সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেথ ফ্রাংকিলন বার্ক্লে বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বক্তব্যে ড. এনগোজি ইবিলা বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচির ব্যাপক সফলতা, বিশেষ করে পোলিও, ডিপথেরিয়া, হেপাটাইটিস বি ও রুবেলার মতো মরণব্যাধি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখায় শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন।
পুরস্কার গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা বাংলাদেশের জনগণের জন্য উৎসর্গ করেন। তিনি বলেন, এই পুরস্কার আমার নয়, এ পুরস্কার বাংলাদেশের জনগণের।
শেখ হাসিনা বলেন, টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশের সফলতা আজ সারা বিশ্ব স্বীকৃত।
স্বাস্থ্যবান নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলতে দেশের জনগণকে টিকাদান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন প্রজন্মই জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবে। ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য টিকা এ লক্ষ্যে পৌঁছানোর বিষয়ে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সেবা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত হয়ে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া ১.১ মিলিয়ন রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের জন্য ভয়ানক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে, যদিও মিয়ানমারে তারা যথাযথ স্বাস্থ্য সেবা পায়নি।
শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের ইমিউনিটি বাড়াতে টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার অসাধারণ ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরা সফলতার সঙ্গে ক্যাম্পে কলেরা, ডিপথেরিয়া ও হাম ঠেকাতে পেরেছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশই প্রথম গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনের (জিএভিআই) সহায়তায় রোহিঙ্গাদের উদ্বাস্তুদের টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে।
সরকারের এ উদ্যোগকে সহায়তার জন্য জিএভিআই’কে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকারের কঠোর পরিশ্রম বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের পক্ষে ভ্যাকসিন হিরো এ পুরস্কার গ্রহণ করে আমি সম্মানিত বোধ করছি।
হাম, রুবেলা, জন্মগত রুবেলা নির্মূলে বাংলাদেশের ২০২০ লক্ষ্য অর্জনের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে তিনি জিএভিআই সংস্থাটির সহায়তার প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০০ সাল থেকে জিএভিআই সংস্থাটির সহায়তায় ৭৬০ মিলিয়ন মানুষকে রোগী প্রতিরোধী করার পাশাপাশি আরও ১৩ মিলিয়ন জীবন বাঁচিয়েছে।
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।