বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হারের পর রোববার ভোরে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলতে মাঠে নেমেছিল ব্রাজিল। কিন্তু ভাগ্য তাদের বদলায়নি। আবারও হার সঙ্গী হয়েছে। কাতার বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলা মরোক্কো তাদের হারিয়ে দিয়েছে ২-১ গোলে। যা মরোক্কোর ফুটবল ইতিহাসে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের বিপক্ষে পাওয়া প্রথম জয়।
ইবনে বতুতা স্টেডিয়ামে এই ম্যাচ দেখতে হাজির হয়েছিল ৬৫ হাজার দর্শক। তাদের গর্জনের ঢেউয়ে ভেসে দারুণ লড়াই করছিল মরোক্কোর খেলোয়াড়রা। একটা সময় দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে হাতাহাতির মতোও পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছিল। ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা রেফারির কাছে বারবার বাজে ট্যাকেলের অভিযোগ তুলতে থাকে। ব্রাজিল অবশ্য বেশ আক্রমণাত্মক খেলছিল। অন্যদিকে পাল্টা আক্রমণে জোর দিয়ে খেলছিল মরোক্কো।
ম্যাচের ১৩ মিনিটে ব্রাজিলের হয়ে এই ম্যাচে অভিষেক হওয়া রনি খুব কাছ থেকে নিশ্চিত গোলের সুযোগ মিস করেন। ২২ মিনিটে মরোক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনুর হাস্যকর ভুলে গোল খেতে বসেছিল তারা। কিন্তু ভিনিসিউস জুনিয়রের নেওয়া শট কোনোরকমে ফিরিয়ে দেন মরোক্কোর রক্ষণভাগের খেলোয়াড়।
এক মিনিট পরে আবারও ভুল করেন বুনু। এবার ভিনিসিউস জুনিয়র বল জালেও জড়ান। কিন্তু বিতর্কিত ভিএআর সিদ্ধান্তে সেটি বাতিল হয়।
ম্যাচের ২৯ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যায় মরোক্কো। এ সময় বল নিয়ে ডি বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়া বিলাল এল খানোয়াস ডানদিকে বল বাড়িয়ে দেন সোফিয়ানে বোফালের দিকে। তিনি পায়ে বল সিরিভ করে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে ডান পায়ের শটে জালে জড়ান। ব্রাজিলের গোলরক্ষক উইভারটনের চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।
বিরতিতে যাওয়ার আগে দারুণ দুটি সুযোগ মিস করেন মরোক্কোর হাকিম জিয়েখ। অন্যদিকে রদ্রিগোর নেওয়া অসাধারণ শট হলিউড স্টাইলে সেভ করেন বুনু।
বিরতির পর ৬৭ মিনিটে সমতায় ফেরে ব্রাজিল। এবারও তারা গোলটি পায় বুনুর ভুলে। এ সময় কাসেমিরোর নেওয়া দুর্বল শট হাস্যকরভাবে বুনুর হাত ফঁসকে জালে জড়ায়।
তবে ৭৯ মিনিটের মাথায় বদলি খেলোয়াড় আব্দেলহামিদ সাবিরি ডি বক্সের মধ্যে সতীর্থের কাছ থেকে পাওয়া বলে ডানপায়ের জোরালো শটে জালে পাঠান। তাতে প্রথমবার ব্রাজিলের মতো শক্তিশালী দলকে তারা হারায় ২-১ গোলে।
প্রথম কোনো আরব ও আফ্রিকান দেশ হিসেবে মরোক্কো প্রথমবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলেছিল কাতারে। তাদের সেই সাফল্যের উচ্ছ্বাসে উচ্ছ্বসিত হয়েছিল সবাই। ব্রাজিলের মতো পরাশক্তির দলকে হারিয়ে আরও একবার তাদের ভক্ত-সমর্থকদের উল্লাসের উপলক্ষ্য এনে দিলো জিয়েখ-বোফালেরা।