সঙ্গটে বিধ্বস্ত শ্রীলঙ্কা। দেশে মজুত পেট্রোল ফুরিয়ে গেছে। পেট্রোল আমদানি যখন অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন প্রয়োজনীয় টাকা বা ডলার হাতে নেই। নতুন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে সোমবার (১৬ মে) জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে এমনই ভয়ঙ্কর ছবি তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেছেন, আমাদের পেট্রোল ফুরিয়ে গেছে। এই মুহূর্তে যা রয়েছে তাতে মাত্র একদিন কাজ চালান যাবে।
রনিল বিক্রমাসিংহে প্রথম জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে দিয়ে কোনো আশার কথা শোনাননি। উল্টো তার দেশের মানুষকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আগামী দিনে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যেতে পারে।
এর আগে, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী সোমবার দুটি প্রধান বিরোধীদলের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন পেয়েছেন। দ্বীপরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সঙ্কটের জন্য ক্ষমতাসীন রাজাপাকসের পরিবারকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন।
বিক্রমাসিংহে বলছেন, সরকার তেল আমদানির জন্য তিনটি জাহাজ চালাতেই সমর্থ নয়। জাহাজগুলো তাদের কার্গো ছাড়ার জন্য টাকার চেয়েছে। সেগুলো কলম্বো বন্দরের বাইরে অপেক্ষা করছে। রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতি ও দীর্ঘ বিদ্যুতের ব্ল্যাকআউটের মুখোমুখি হয়ে শ্রীলঙ্কার ২২ মিলিয়ন মানুষ বর্তমানে খাবার, পানি আর ওষুধের গুরুতর সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এই দেশটি এই প্রথম এত খারাপ অবস্থার মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেছেন, আগামী কয়েক মাস দেশের নাগরিকদের চমর কষ্টের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাতে হবে।
প্রথম দিনই বিক্রমাসিংহে জানিয়েছেন, সত্য গোপন করে জনগণকে তিনি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিতে চান না। সেজন্যই এক কথা বলছেন।
গত বৃহস্পতিবার বিক্রমাসিংহে শ্রীলঙ্কার শাসনভার গ্রহণ করেন। দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কটের জন্য তার পূর্বসূরি মাহিন্দ্রা রাজাপাকসেকে ক্ষমতাচ্যুত করে বিক্রমাসিংহে দেশের সিংহাসনে বলেন। তবে এদিন তিনি দেশের মানুষকে ধৈর্যের সঙ্গে অপেক্ষা করতে বলেন।
পাশাপাশি তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, এই সঙ্কট তিনি কাটিয়ে উঠতে পারবেন। তবে তার জন্য প্রত্যেক নাগরিকের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
শ্রীলঙ্কা আইএফএফএ’র কাছে বেলআউট চেয়েছে। আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের অন্যতম দাবি হল— কলম্বোর রাষ্ট্রীয় উদ্যোগগুলোকে বেসরকারি হাতে তুলে দিতে হবে। যার মধ্যে রয়েছে, শ্রীলঙ্কা এয়ারলাইন্স। এর ঋণ এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।