অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে মিয়ানমারের ব্যাপক সমালোচিত সামরিক জান্তাকে সহায়তা করছে চীন। মিয়ানমারকে ‘ঘুঁটি’ বানিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব বিস্তারে বেইজিং এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।
মিয়ানমার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিজিমার বরাত দিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ১৯৪৮ সালের পর থেকেই চীন মিয়ানমারের রাজনীতিতে ক্রমাগত প্রভাব বিস্তার করছে। জাতিগত গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গেও চীনের যে সম্পর্ক, সেটিকে কাজে লাগিয়ে তারা সরকার ও বিচ্ছিন্নতা গোষ্ঠীর মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিয়ে থাকে।
মিয়ানমারের বিনিয়োগ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, অভ্যুত্থানের পর থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চীন মিয়ানমারে ১১৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে।
বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ মিয়ানমারের জান্তার ব্যাপক সমালোচনা করলেও প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্যভাবে তাদের সমর্থন যুগিয়ে যাচ্ছে চীন। এমনকি, নিবিড়ভাবে তারা সম্পর্ক রক্ষা করে চলেছে। এর জেরে মিয়ানমারের জনগণের মধ্যে চীনবিরোধী জনমতও গড়ে উঠছে বলে জানা যায়।
আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন জান্তা সরকারকে রক্ষায় কূটনৈতিক সমর্থনও যুগিয়েছে চীন। এমনকি তাদের আগ্নেয়াস্ত্র দিয়েও সহযোগিতা করেছে।
মিয়ানমারে চীনের অবস্থান কতটা গভীরে সেটি বোঝার একটি বড় দিক বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন মিয়ানমারের পশ্চিম পাশে চীন কিউকফিউ বন্দর তৈরি করছে। যেটি রাখাইন রাজ্যে অবস্থিত।
২০১৯ সালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কাচিন ও শান রাজ্য থেকে তরুণীদের পাচার করে চীনে পাঠিয়ে সেখানকার চীনা পুরুষদের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
চীনা বংশোদ্ভূত মিয়ানমারের নাগরিকরা আ্যান, মায়েই, কিয়াউকফিউ ও রামরি শহরে সম্পদ গড়ে তুলছেন।
আগামী নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চীনা নাগরিকদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেও জানানো হয়।
মিয়ানমারের চীনাদের অপ্রতিরোধ্য যাতায়াতের সুযোগকে দেশটিতে চীনা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।