বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের মিয়ানমার সীমান্তে ওপারে গত কয়েকদিন ধরে গোলাগুলির শব্দে আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এমন অবস্থায় বাংলাদেশ প্রতিনিয়ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি নজরদারি করে যাচ্ছে। কোনো কারণে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে উসকানি বা ইচ্ছেকৃত কিছু হলে বাংলাদেশ সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন এ কথা বলেন ।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, আমাদের নজরদারি রয়েছে এবং আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। যদি কোনো উসকানি হয়, আর ইচ্ছেকৃত হয় সেটা- আমরা তখন সেভাবে ব্যবস্থা নেবো। যাতে করে সীমান্ত এলাকায় কোনো রকমের উত্তেজনা না থাকে সে ব্যাপারে আমাদের সর্বোচ্চ সতর্কতা রয়েছে।
তিনি বলেন, কোনো সমস্যা হলে দ্রুত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা যেতে পারে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে যে বিদ্যমান প্রক্রিয়া আছে, সেগুলোর মাধ্যমে এটা করা যেতে পারে।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এর আগে হয়তো অসাবধানতাবশত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে এ রকম দু’একটা ঘটনা ঘটেছে। সেটা তারা (মিয়ানমার) স্বীকার করেছে। গোলাগুলি যেগুলো আজকেও (রোববার) আমরা যেগুলো শুনেছি, সেগুলো ১০ কিলোমিটার অভ্যন্তরে। সুতরাং সেখানে কিছু গোলাগুলি হয়েছে, মর্টার শেলিং আছে, বোম ব্লাস্ট আছে। সাধারণত এটা ওদের (মিয়ানমার) সীমান্তের ভেতরে।
তিনি বলেন, তবে আওয়াজগুলো আমাদের এদিকে শোনা যাচ্ছে। সে কারণে স্থানীয় যারা আছেন তাদের মধ্যে কিছু অস্থিরতা থাকতে পারে। তারা যেন আরও সাবধান হয় সে ব্যাপারে আমরা তাদের বলেছি।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ফাইট যেগুলো হচ্ছে ওখানে (মিয়ানমার), সেখানে সিভিলিয়ান পপুলেশন কেউ যদি ডিসপ্লেস হয় তাহলে হয়তো তাদের মধ্যে অল্পসংখ্যক নিরাপত্তার কারণে এদিকে আসার একটা প্রবণতা থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের বিজিবি সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে আছেন এবং এ রকম তারা এলাউ করবেন না। এ মর্মে মোটামুটি একটা নির্দেশনা দেওয়া আছে।
সম্প্রতি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের মিয়ানমার সীমান্তে ওপারে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে নতুন করে শুরু হয়েছে গোলাগুলির শব্দ। রোববার সারাদিন ওই এলাকায় গুলির শব্দ শুনতে পেয়েছেন স্থানীয়রা।
শুক্রবার মিয়ানমার ভূখণ্ড থেকে ছোড়া একটি মর্টার শেল বাংলাদেশ সীমান্তের তুমব্রু এলাকায় এসে পড়ে। এর আগে, ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯ টায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় পড়ে। তার আগে ২৮ আগস্ট বিকেলের দিকে মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা একটি মর্টার শেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় ঘুমধুমের তুমব্রু এসে পড়ে।