হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাজার হাসপাতালে হামলা দেখতে চায় না, যেখানে রোগীরা চিকিৎসা পায়। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র তার মতামত ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে জানিয়েছে বলেও জানান তিনি।
রোববার সিবিএস নিউজের ‘ফেস দ্য নেশন’ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠানে সুলিভান বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাজার হাসপাতালগুলোতে হামলা দেখতে চায় না, যেখানে নিরপরাধ মানুষ, চিকিৎসাসেবা গ্রহণকারী রোগীরা হামলার শিকার হচ্ছে এবং এ ধরনের ঘটনা বেড়ে চলেছে। যুদ্ধের কারণে চিকিৎসা সেবাগুলো প্রভাবিত হওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের কাছে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি।’
চলমান ইসরায়েলি হামলার কারণে গাজা উপত্যকায় মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে সুলিভান বলেন, ‘আমরা জানি যে ৭ অক্টোবরের পর থেকে শুরু হওয়া সামরিক অভিযানে হাজার হাজার নিরীহ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনি, ইসরায়েলি-যেকোনো নিরাপরাধ ব্যক্তির প্রাণহাণি চরম ট্রাজেডি এবং আমরা সেই প্রতিটি জীবনের জন্য শোকাহত। হামাসকে প্রতিহত করার অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে, এটা আমরা জোড়ালোভাবে সমর্থন করি। কারণ হামাস ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্য হুমকি। তবে এটি অবশ্যই এমনভাবে করতে হবে যা যুদ্ধের আইনের সাথে ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ’।
আল জাজিরার খবর বলছে, আন্তর্জাতিক আহ্বান উপেক্ষা করে গাজা উপত্যকার হাসপাতাল তথা স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্রগুলোতে ইসরায়লি হামলা সাম্প্রতিক সময়ে তীব্র হয়েছে। ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা ও অবরুদ্ধ গাজায় তীব্র জ্বালানিসংকটে একের পর এক হাসপাতাল কার্যক্রম গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে। সর্বশেষ গতকাল রোববার গাজার আরও দুটি হাসপাতালের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন করে বন্ধ হওয়া হাসপাতাল দুটি হলো- আল-কুদস হাসপাতাল ও কামাল আদওয়ান হাসপাতাল।
গাজার হাসপাতালগুলোয় যে শুধু রোগীরা রয়েছেন তা নয়, বরং ইসরায়েলি হামলার মুখে হাজারো অসহায় ফিলিস্তিনি বিভিন্ন হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের ধারণা, আর যা-ই হোক, অন্তত হাসপাতালে হামলা করবে না ইসরায়েল। তবে এ ধারণা সঠিক হয়নি। হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না হাসপাতালগুলোও।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলেছেন, ‘হাসপাতাল সবার জন্য নিরাপদ আশ্রয় হওয়ার কথা। যখন এগুলো মৃত্যু, ধ্বংসযজ্ঞ ও হতাশার প্রতীকে রূপান্তরিত হয়, তখন বিশ্ববাসী চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না।’