জানুয়ারিতে মধ্য ইউক্রেনের ডিনিপ্রো শহরে ৩৪ বছরের লিউবভ বোর্নিয়াকোভার মৃতদেহ তার বাড়িতে পাওয়া গিয়েছিল। ফরেনসিক প্রতিবেদনে মৃতদেহে ৭৫টি আঘাতের সাথে চিহ্ন পাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বোর্নিয়াকোভার খালা এবং প্রতিবেশীর মতে, বোর্নিয়াকোভার স্বামী ইয়াকভ বোর্নিয়াকভ সেনাবাহিনী থেকে গত বছরের ডিসেম্বরে ফিরে আসার পরে তাদের অ্যাপার্টমেন্টের ভিতরে শুয়ে থাকতেন। বোর্নিয়াকোভার মৃত্যুর দুই সপ্তাহ আগে তাকে বেধড়ক পেটানো হতো এবং তার স্বামী মাতাল থাকতো।
৪ জানুয়ারি বোর্নিয়াকোভার খালা কাতেরিনা ভেড্রেনসেভা তার বাড়িতে পৌঁছান।
তিনি বলেন, ‘তার বেঁচে থাকার কোনো সম্ভাবনা ছিল না। তার হাত, মাথা, পা, সবজায়গাতে মারধর করা হয়েছিল।’
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আক্রমণের পর সাময়িক সময়ের জন্য ইউক্রেনে পারিবারিক সহিংসতা কমেছিল। কারণ ওই সময় ইউক্রেনের বাসিন্দারা যুদ্ধ থেকে পালানোর জন্য ছুটোছুটি শুরু করেছিল। তবে কয়েক মাস পর পুরোনো বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পর কিংবা নতুন বাড়িতে ওঠার পর পারিবারিক সহিংসতার মাত্রা বাড়তে শুরু করে।
পুলিশের কাছে আসা অভিযোগের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে পারিবারিক সহিংসতার হার ২০২২ সালের একই সময়ের তুলনায় ৫১ শতাংশ বেড়েছে। এই হার ২০২০ সালের আগের রেকর্ডের চেয়ে এক তৃতীয়াংশ বেশি ছিল।
এই খাতে কর্মরত এক ডজনেরও বেশি কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞ রয়টার্সকে বলেছেন, ক্রমবর্ধমান চাপ, অর্থনৈতিক কষ্ট, বেকারত্ব এবং সংঘাত সম্পর্কিত মানসিক আঘাতের কারণে পারিবারিক সংহিসতা বেড়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সহিংসতার শিকার নারী।
ইউক্রেনের লিঙ্গ নীতি বিষয়ক কমিশনার কাতেরিনা লেভচেঙ্কো মে মাসে রয়টার্সকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘(উত্থান) মানসিক উত্তেজনার কারণে এবং অনেক সমস্যার কারণে হয়েছে। মানুষ সবকিছু হারিয়েছে।’
পুলিশ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত গার্হস্থ্য সহিংসতার তিন লাখ ৪৯ হাজার ৩৫৫টি মামলা নথিভুক্ত করেছে। ২০২২ সালের একই সময়ের মধ্যে এই সংখ্যা ছিল দুই লাখ ৩১ হাজার ২৪৪টি এবং ২০২১ সালের প্রথম পাঁচ মাসে এই সংখ্যা ছিল এক লাখ ৯০ হাজার ২৭৭।