বিশ্বজুড়ে নতুন আতঙ্কের নাম মাঙ্কিপক্স। দিন যত যাচ্ছে বিভিন্ন দেশে নতুন আক্রান্তের খবর শোনা যাচ্ছে। মাঙ্কিপক্স ঠেকাতে অনেক দেশে আরোপ করা হয়েছে নানা বিধিনিষেধ।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৫৮ সালে খাঁচায় বন্দি বানরের শরীরে প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত হয়। ডেনমার্কের কোপেনহেগেনের একটি গবেষণাগারে ওই বানর পর্যবেক্ষণে রাখা ছিল। এ কারণেই ভাইরাসটির নামকরণ হয় ‘মাঙ্কিপক্স’।
১৯৭০ সালের পর আফ্রিকার ১০টি দেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে বিক্ষপ্তভাবে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এরপর ২০০৩ সালে প্রথমবারের মতো আফ্রিকার বাইরে যুক্তরাষ্ট্রে এই ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়। কুকুর ও অন্যান্য ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী প্রাণী হয়ে মানুষের শরীরে ভাইরাসটি সংক্রমিত হয়েছিল তখন। যুক্তরাষ্ট্রে সে সময় মোট ৮১ জন আক্রান্ত হন। তবে কারও মৃত্যু হয়নি।
২০১৭ সালে মাঙ্কিপক্সের সবচেয়ে বড় প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় নাইজেরিয়ায়। আক্রান্ত হন ১৭২ জন। উল্লেখ্য যে, তাদের ৭৫ শতাংশই ছিল ২১ থেকে ৪০ বছর বয়সী পুরুষ। এখন প্রশ্ন হলো এই ভাইরাস কীভাবে মানুষের শরীরে বাসা বাঁধে?
জেনে রাখা ভালো, মাঙ্কিপক্স করোনাভাইরাসের মতো খুব দ্রুত বাতাসে বা হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায় না। আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে মাঙ্কিপক্স অন্যজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। মাঙ্কিপক্স চামড়ার ক্ষত, শ্বাসনালী, চোখ, নাক ও মুখ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে।
বানর, ইঁদুর ও কাঠবিড়ালীর মতো সংক্রমিত প্রাণীর নিবিড় সংস্পর্শে গেলেও একজন ব্যক্তি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। আবার ভাইরাসে সংক্রমিত কোনো জিনিসের সংস্পর্শে গেলেও এই রোগ হতে পারে। যেমন রোগীর ব্যবহৃত খাট বা কাপড় পরিধান করা।
এ প্রসঙ্গে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা হয় ক্যাম্ব্রিজ ইউনিভার্সিটি হসপিটালের চিকিৎসক রাইয়িক রিদওয়ানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সাধারণত পশু থেকে মানুষের শরীরে যেমন কাঠবিড়ালি, ইঁদুর, বানর ইত্যাদির মাধ্যমে পাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত মায়ের নবজাতকেরও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে যৌন মিলনের ফলেও সুস্থ ব্যক্তির দেহে এই ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে। তিনিও মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হতে পারেন।’