রাজশাহীতে মাইক্রোবাস ও হানিফ পরিবহনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৪ জন ছিলেন মাইক্রোবাসের যাত্রী। যারা সবাই মাইক্রোবাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুন লেগে পুড়ে মারা গেছেন। আর বাকি ৩ জন হানিফ পরিবহনের যাত্রী ছিলেন।
শুক্রবার (২৬ মার্চ) দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালী এলাকায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত তিন জন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের মধ্যে একজন বাস যাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় নিহতরা হলেন- রংপুর পীরগঞ্জ থানার রাজারামপুর গ্রামের সালাহউদ্দিন, তার স্ত্রী সামছুরুন্নাহার, সামছুমরুন্নাহারের বোন কামরুন্ননাহার, তাদের সন্তান সাজিদ ও সাবা, দ্বারিকাপাড়া গ্রামের মোখলেসুর, বড় মজিদপুর গ্রামের ফুল মিয়া ও তার স্ত্রী নাজমা এবং তাদের সন্তান সুমাইয়া, সাদিয়া ও ফয়সাল।
এছাড়া- পীরগঞ্জ সদরের তাজুল ইসলাম ভুট্টু, তার স্ত্রী মুক্তা, সন্তান ইয়ামিন। চালকসহ ১৪ জন ছিলেন মাইক্রোবাসের যাত্রী। ১৪ জনই মারা গেছেন। বাকি তিন জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রাজশাহী সদর স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবদুর রউফ জানান, দুপুরে রংপুর থেকে একটি মাইক্রোবাসে চড়ে চালকসহ ১৪ জন রাজশাহী আসছিলেন। পথে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে কাটাখালী থানার সামনে বিপরীত দিক থেকে আসা হানিফ পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটি হিউম্যান হলারকে ধাক্কা দেয়।
এ সময় মাইক্রোবাসটির ভেতরে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এতে আগুন লেগে গাড়ির ভেতরে থাকা ১৪ জনেরই মৃত্যু হয়।
তিনি আরো জানান, মাইক্রোবাসটির ভেতরে চার পরিবারের ১৩ জন ছিলেন। চালকসহ ১৪ জন। তাদের সবাই মারা গেছেন। এছাড়া বাসে তিন যাত্রী মারা গেছেন। এদের মধ্যে রামেক হাসপাতালে নেওয়ার পর ছয় জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ঘটনাস্থলে মাইক্রোবাসের ভেতর থেকে ১১ জনের লাশ বের করা হয়।
কাটাখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মতিউর রহমান জানান, বাসের নিহত তিন জনের নাম-পরিচয় কেউ জানতে পারেনি। তবে মাইক্রোবাসের যাত্রীদের নাম জানা গেছে। তাদের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায়। তারা রাজশাহী শহরের একটি পার্কে পিকনিকে আসছিলেন। মাইক্রোবাসে চারটি পরিবারের লোকজন ছিলেন। সবাই মারা গেছেন। তাদের সবার নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করা হচ্ছে। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার ব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।