দেশের রেমিট্যান্সে সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বরে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৩ কোটি ৯৫ লাখ মার্কিন ডলার। যা গত ৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ ছাড়া এক মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স কমেছে ৪৯.৮৩ কোটি মার্কিন ডলার। আগস্ট মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৩ কোটি ৭৮ লাখ মার্কিন ডলার।
রোববার (২ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্যমতে, সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২৪ কোটি ৬২ লাখ মার্কিন ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৬ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬১ লাখ মার্কিন ডলার আর বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২ কোটি ৪১ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
এবারও ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এ ছাড়া সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১১ কোটি ২৮ লাখ ডলার, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ কোটি ৭২ লাখ, অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ৫৬ লাখ এবং ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৭ কোটি ৯২ লাখ ডলার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন থেকে যেকোনও পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠাতে কোনও ধরনের কাগজপত্র লাগে না। এ ছাড়া রেমিট্যান্সের ওপর ২.৫০ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। রেমিট্যান্স বাড়াতে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) যৌথভাবে ব্যাংকগুলোকে রেমিট্যান্স কেনার জন্য দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। এতে রেমিট্যান্স কিনতে প্রতি ডলার সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। এরপরও রেমিট্যান্স প্রবাহে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার। যা গত ১৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে ছিল। যদিও এক মাসের ব্যবধানে আগস্টে ৫.৯১ কোটি ডলার কম রেমিট্যান্স এসেছিল, তবে তা ছিল আগের দুই বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি। এবার সেপ্টেম্বরে এসে বড় ধাক্কা লেগেছে রেমিট্যান্সে।
বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। ওই অর্থবছরের প্রথম মাস থেকে আগের তুলনায় রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ধীরগতির। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিল ১৮৭ কোটি ১৪ লাখ ডলার, আগস্টে ১৮১ কোটি ১ লাখ, সেপ্টেম্বর মাসে ১৭২ কোটি ৬৭ লাখ, অক্টোবরে ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ, নভেম্বর ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ এবং ডিসেম্বরে ১৬৩ কোটি ৬ লাখ, জানুয়ারিতে ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ, মার্চে ১৮৫ কোটি ৯৭ লাখ, এপ্রিলে ২০১ কোটি ৮ লাখ, মে মাসে ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ এবং গত জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৮৪ কোটি মার্কিন ডলার। এরআগে, ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।