রেজাউল ইসলাম ঃ- ভ্যাক্সিনেশন ব্যতীত কোন ডিনার নয়? যারা যারা ভ্যাক্সিন নিয়েছেন অথবা কোভিডের ইমিউনিটি আছে তারাই শুধু রেষ্টুরেন্টে প্রবেশের অনুমতি পাবেন। ভ্যাক্সিনেশন এবং ইমিউনিটি কার্ডের ভিত্তিতে প্রবেশ করতে দেওয়ার আইনি কি কোন ভিত্তি আছে? এই বিষয়ে স্বনামধন্য রাজনীতিবিদ এবং আইনজ্ঞরা তাদের মূল্যবান মতামত দিয়েছেন। কেউ কেউ এর পক্ষে বলেছেন আবার কেউ কেউ পরিষ্কারভাবে এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেছেন যে, এটি দুই শ্রেনীবিশিষ্ট সমাজ ব্যবস্থার সূচনা করবে এবং মৌলিক অধিকারের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করবে।
যত দূর জানা যায়, কোন দেশই এই পর্যন্ত আইন পাস করে নাই যে লক-ডাউনের পর ইমিউনিটি প্রাপ্ত ব্যক্তিরা রেষ্টুরেন্ট, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগদান করে আরাম আয়েস করতে পারবে। যদিও জার্মানি এবং সুইজারল্যান্ডের অনেক আইনজ্ঞ মতামত দিয়েছেন যে রেষ্টুরেন্টগুলি বাসাবাড়ির আইন অনুযায়ী তাদের রেষ্টুরেন্টে বিধিনিষেধ দিতে পারে।
রেষ্টুরেন্টে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ ইমিউনিটির প্রমান অথবা সাম্প্রতি কোভিডের নেগেটিভ টেস্ট রেজাল্ট দেখতে চাওয়া বৈষম্যমূলক নয় বরং এটি একটি অধিকার হিসাবে গন্য হতে পার।Augsburg এর আইন বিষয়ক দার্শনিক লিন্ডনার বলেন,এমনকি রেষ্টুরেন্টগুলি এই বিষয়ে বিজ্ঞাপনও দিতে পারে।
রেষ্টুরেন্টগুলি কি টিকাগ্রহনের প্রমানের ভিত্তিতে প্রবেশকে শর্তযুক্ত করতে পারে?
না,এমন কোন আইন নাই যার দ্বারা রেষ্টুরেন্টগুলি প্রবেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং ইমিউনিটির প্রমান বা ফ্রি-টেস্ট রেজাল্ট চাইতে পারে। রেষ্টুরেন্টগুলি নিজেদের প্রবেশ নিজেরাই যদি নিয়ন্ত্রণ না করে তবে অন্য কোন কারণ নেই নিয়ন্ত্রণ করার। প্রশ্ন তখনই উঠে যখন প্রবেশাধিকার আইনের দ্বারা রেগুলেটেড হয় এবং ইমিউনিটির প্রমানকে প্রবেশের পূর্বশর্ত হিসাবে চাওয়া হয়। রেষ্টুরেন্টগুলির ইমিউনিটি প্রমানের উপর ভিত্তি করে প্রবেশ অনুমতি দেওয়া কি উচিত হবে? এই নিয়ে প্রিন্ট এবং সামাজিক মাধ্যমে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। এই বিতর্কের বিরাট অংশ ভ্যাক্সিন নেওয়া মানুষের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, তার কারণ হচ্ছে, দ্রুত অর্থনীতি পুনরোদ্ধার করা এবং স্বাভাবিক জীবন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা। তারা মনে করে ভ্যাক্সিনেশন সত্ত্বেও বিধিনিষেধ আরোপ মৌলিক অধিকার চর্চার ক্ষেত্রকে সীমিত করে।
তারা দাবী করেন, টিকাগ্রহনের পর মানুষ সব পাব্লিক ফ্যাসিলিটি এবং রেষ্টুরেন্টগুলিতে কোন রকম বিধিনিষেধ ছাড়া প্রবেশাধিকার পাওয়া উচিত। এর ভিন্নমত প্রদানকারীরা বলেন, কেউ যদি স্বাস্থ্যগত কারণে ভ্যাক্সিন নিতে না পারে তবে এটি তাদের জন্য বৈষম্যমূলক হবে যা মৌলিক অধিকারের সংগে সংগতিপূর্ণ নয়। এছাড়া ভ্যাক্সিন নেওয়া ব্যক্তি যে আর সংক্রমণ করবে না তার কোন প্রমান নাই।
কিভাবে রেষ্টুরেন্টগুলি প্রবেশকে রেগুলেট এবং নিয়ন্ত্রণ করতে পারে?
আইনী চাহিদা অনুযায়ী হোক কিংবা না হোক, রেষ্টুরেন্ট মালিকরা ইমিউনিটি প্রমান অথবা নেগেটিভ রেজাল্ট চেক অথবা কনর্ফাম করতে পারে
১) অনলাইন রির্জাভেশনের ক্ষেত্রে ক্রেতাদেরকে রেষ্টুরেন্ট মালিকরা বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করতে পরে। যেমন,কাস্টমারের ইমিউনিটি চেকিংয়ের মাধ্যমে শুধুমাত্র রির্জাভেশন সম্ভব।
২) রির্জাভেশন প্রাথমিক অবস্থায় প্রবেশনারীভাবে রেকর্ডেড থাকবে এবং ইমিউনিটি কার্ডের রিসিট প্রমান হিসাবে দেওয়ার পর কনফার্ম করা হবে। সেক্ষেত্রে ইমিউনিটি কার্ড স্ক্যান করে ই-মেইলে পাঠাতে হতে পারে। সব ব্যক্তির ইমিউনিটির প্রমান রির্জাভেশনের সময় অবশ্যই দিতে হবে।
৩) রেষ্টুরেন্টে আসার পর সেখানে ইমিউনিটির প্রমান চেক করা যেতে পারে। একাধিক অতিথির ক্ষেত্রে সবাই ইমিউনিটির প্রমান না দেখাতে পারলে, সেই ক্ষেত্রে শুধু তারাই প্রবেশাধিকার পাবেন যারা ইমিউনিটি প্রমান দেখাতে পারবেন আর যারা দেখাতে পারবে না তারা প্রবেশাধিকার পাবে না।
এই বিষয়টি সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
(লেখক ক্লাউস প্রেইস্নেরের লেখা থেকে অনুবাদ)