আগামী বৃহস্পতিবার থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। অবকাঠামোগত সুবিধা, নিরাপত্তাসহ আনুষঙ্গিক সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে শরণার্থী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিশনারের কার্যালয় ও জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা।
রোহিঙ্গারা রাখাইনে তাদের আদি নিবাসে ফিরে যেতে চায় কি না, তা নিয়ে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) মঙ্গলবার থেকে নির্বাচিত লোকজনের সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করবে।
শরণার্থী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল কালাম সোমবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে ইউএনএইচসিআরের কর্মকর্তারা বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সাক্ষাৎকার নেবেন। গুমদুমের স্থল সীমান্ত দিয়ে প্রত্যাবাসনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন শিবিরগুলো তৈরি আছে। এ ছাড়া স্থলপথে রোহিঙ্গাদের পাঠানোর জন্য যানবাহনও সংগ্রহ করা হয়েছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের তালিকায় কতজনকে রাখা হয়েছে, তা জানতে চাইলে আবদুল কালাম বলেন, এখন পর্যন্ত মিয়ানমার ১ হাজার ৩৮ পরিবারের ৩ হাজার ৯৯৯ জনকে রাখাইনের অধিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে ৩৩৭ পরিবারকে পূর্ণাঙ্গভাবে, যাদের সদস্য সংখ্যা ১ হাজার ৩৯০ জন। আর ৭০১টি পরিবারের আংশিক সদস্যের সংখ্যা ২ হাজার ৯ জন রোহিঙ্গা। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া রোহিঙ্গাদের পাঠানো যে কিছুটা সমস্যার, সেটি তিনি স্বীকার করেছেন।
প্রসঙ্গত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ ও ইউএনএইচসিআর একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে। ওই সমঝোতা স্মারকের শর্ত অনুযায়ী রাখাইনে স্বেচ্ছায় যাওয়ার বিষয়ে রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার কথা ইউএনএইচসিআরের। গত বছরের ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রথম তারিখ ঠিক হয়েছিল। সেবার বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদের বাদ দিয়েই রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিল ইউএনএইচসিআর। তখন রোহিঙ্গাদের কেউই রাখাইনে ফিরে যেতে চায়নি।
এদিকে কক্সবাজারে প্রত্যাবাসনের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ দফায় রাখাইনে পাঠানোর জন্য নির্বাচিতদের অধিকাংশ (৯২৭টি পরিবার) রয়েছেন উখিয়ায় ২৬ নম্বর শিবিরে। কয়েকটি পরিবার রয়েছে অন্য তিনটি শিবিরে। এ জন্য ২৬ নম্বর শিবিরের আশপাশে রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে।