বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, আমরা জ্বালানি ঠিকমত না পেলে লোডশেডিং ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব নয়। জ্বালানি পাওয়ার জন্য অতিরিক্ত অর্থ দরকার। সেই পরিমাণ অর্থ আমাদের বাজেটে নেই। আমাদের কাছে নেই।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, চাহিদা কমলে বিদ্যুতের লোডশেডিং কমবে। তবে তাপমাত্রা কমলে চাহিদা কমে যাবে। চাহিদা কমলে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা করতে পারব।
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে অফিস সময় পরিবর্তন করা হলো, এখন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ মানুষ। সবকিছু মিলিয়ে পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয় পরিস্থিতি বেশি খারাপের দিকে যাচ্ছে না। খারাপের দিকে যাচ্ছে, এটা সত্যি কথা। আমাদের ধারণা ছিল, অক্টোবরের দিকে বিদ্যুতের চাহিদাটা কমে আসবে। কারণ তখন আবহাওয়াটা ঠান্ডা হয়ে যাবে। কমের মধ্যে আমরা এটা ম্যানেজ করতে পারব। আমরা জ্বালানি আনতে পারছি না। আমাদের বিদ্যুৎকেন্দ্র বসে আছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের ৭ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে, যেগুলো তেলে চলে। ১১ হাজার মেগাওয়াট রয়েছে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বাকি সোলার বা বিদেশ থেকে আনছি। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের (বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা) সাড়ে ৩ হাজার/৪ হাজার মেগাওয়াট। পুরো সিস্টেমের মধ্যে ৫ হাজার মেগাওয়াট গ্যাসে চালাতে পারছি।
তিনি বলেন, আমরা মনে করেছিলাম চাহিদা কমে আসবে। কিন্তু আবহাওয়ার যে অবস্থা, যে পরিমাণ গরম। চাহিদা আগের মতোই রয়ে গেছে। এটা একটা বড় বিষয়। আমি আশা করেছিলাম, গ্যাসের দাম কমে আসবে বিশ্বব্যাপী। কিছুটা কমেছে স্পট মার্কেটে, তাও অনেক বেশি। যে গ্যাস ৫ ডলারে কিনতাম সেটা ২৮ ডলার হয়েছে। যেটা গত মাসের আগের মাসে ছিল ৪৭ ডলার। কমার পরও আমার জন্য তো এটা বেশি। এ ছাড়া ডলারের দামও বেড়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি একটু ধৈর্য ধরা দরকার। গত মাসে বলছিলাম, অক্টোবর থেকে হয়তো আমরা লোডশেডিং থেকে বেরিয়ে আসবো।
দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় এখন গ্যাস নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্পট মার্কেট থেকে যেটা নিতাম সেটা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।
লোডশেডিংয়ের কারণে সবার কষ্ট হচ্ছে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, গতকাল (১০ অক্টোবর দিনগত রাতে) আমার বাড়িতে রাত দেড়টার পর বিদ্যুৎ ছিল না। সবাই ধৈর্য ধরেন, এটা একটা বিশেষ পরিস্থিতি। সামনের বছর আরো খারাপের দিকে যেতে পারে। বিশ্বব্যাপী খাদ্যের অভাবে দেখা দিতে পারে। এটা আমাদের কথা নয়, জাতিসংঘের কথা।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো শিল্প কারখানায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কতটুকু সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পারি। কৃষিতে সেচ ব্যবস্থাটা সচল রাখতে পারি, এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।