প্রথমবারের মতো বিশ্বব্যাপী সত্যিকারের জ্বালানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) বাজার কঠোর করা এবং প্রধান তেল উৎপাদকদের সরবরাহ হ্রাস করার কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার (আইইএ) প্রধান এ কথা বলেছেন।
আইইএর নির্বাহী পরিচালক ফাতিহ বিরল জানিয়েছেন, ইউক্রেন সঙ্কটের মধ্যে ইউরোপে এলএনজির ক্রমবর্ধমান আমদানি এবং চীনের জ্বালানি চাহিদা বৃদ্ধি জ্বালানি সঙ্কটকে আরও প্রকট করবে। কারণ আগামী বছর মাত্র ২০ বিলিয়ন ঘনমিটার নতুন এলএনজি বাজারে আসবে।
একই সময়ে অর্গানাইজেশন অব পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ (ওপেক) প্রতিদিন ২০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। একে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ সিদ্ধান্ত বলে মনে করছে আইইএ। কারণ চলতি বছর বিশ্বে তেলের চাহিদা প্রায় ২০ লাখ ব্যারেল স্পর্শ করবে।
ফাতিহ বলেন, ‘(এটি) বিশেষত ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ বিশ্বের বেশ কয়েকটি অর্থনীতি মন্দার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে, যদি আমরা বৈশ্বিক মন্দা সম্পর্কে কথা বলি … আমি এই সিদ্ধান্তটিকে সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে করেছি।’
তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ও কয়লাসহ বেশ কয়েকটি শক্তির উৎসের যখন দাম বাড়ছে, তখন ভোক্তাদের ক্রমবর্ধমান খাদ্য ও পরিষেবা মূল্যস্ফীতির সাথে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। জ্বালানি ও বিদ্যুতের মূল্য এবং রেশনিংয়ের সম্ভাবনা ইউরোপীয় ভোক্তাদের জন্য সম্ভাব্য বিপজ্জনক। কারণ উত্তর গোলার্ধের বাসিন্দারা এখন শীতকালের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ফাতিহ জানান, আবহাওয়া মৃদু থাকলেও ইউরোপকে এবার শীতে বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, ‘যদি আমাদের তীব্র ঠাণ্ডা এবং দীর্ঘ শীতকালের মধ্য দিয়ে যেতে হয় এবং নর্ডস্ট্রিম পাইপলাইন বিস্ফোরণের মতো কোণা আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটলে ইউরোপকে এই শীতে অর্থনৈতিক ও সামাজিক আঘাতের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।’
আইইএর নির্বাহী পরিচালক জানান, ২০২৩ সালে বিশ্বে তেলের চাহিদা ১ দশমিক ৭ মিলিয়ন ব্যারেল বাড়তে পারে। তাই এখনও বিশ্বের রাশিয়ার তেল প্রয়োজন।