সৈয়দ নাজমুল হোসেন মনা। বীর মুক্তিযোদ্ধা। প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক একজন মানুষ। টরন্টো শহরে আছেন দীর্ঘদিন। এই শহরের সুখে দুঃখে জড়িয়ে আছেন নিবিড়ভাবে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক জাগরণের সমর্থক হিসেবে সৈয়দ নাজমুল হোসেন মনার ভূমিকা প্রেরণাস্বরূপ। টরন্টোয় লুটেরাদের বিরুদ্ধে ক্রমে দানা বাঁধা জাগরণ আজ এক সামাজিক আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। এই আন্দোলনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আজ আমি সৈয়দ নাজমুল হোসেন মনার সঙ্গে কথা বলেছি। তারই চুম্বক অংশ আপনাদের জন্য।
দে. এ. কেমন আছেন মনা ভাই? সৈ. না. হো. মনা. খুব ভালো আছি। মনে হচ্ছে তারুণ্যতায় ফিরে গিয়েছি।
দে. এ. আরে আন্দোলন সংগ্রামে আপনিতো এখনো তরুণ। আর তারুণ্য ফিরে পাবার কারণ কি? সৈ. না. হো. মনা. কারণ হলো লুটেরাদের বিরুদ্ধে টরন্টোয় আপনাদের আন্দোলন আমাকে যৌবনের শক্তি ফিরিয়ে দিচ্ছে! দে. এ. থুক্কু। এটা আমাদের আন্দোলন নয়। এই আন্দোলন টরন্টো শহরের সকল সচেতন দেশপ্রেমিক মানুষের। ঢাকায়, লণ্ডনে, নিউইয়র্ক ইত্যাদি দূরের শহরে থেকেও আমাদের সঙ্গে এই আন্দোলনে আছেন অনেক বন্ধু। আমাদের মানববন্ধনে না থেকেও হেমিল্টনে, ওশোয়ায়, নিউ মার্কেটে, মিসিসাগায় আছেন অনেক সহযোদ্ধা। অতএব, এই আন্দোলন শুধুমাত্র আমাদের বললে ওদের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ হয়। এই আন্দোলন আপনার আমার আপামর সকল মানুষের।
দে. এ. এখন সত্যি করে বলুন তো, এই জাগরণ ও আন্দোলন কি ঠিক আছে?
সৈ. না. হো. মনা. এটা কি বলেন এলাহী ভাই? অবশ্যই ঠিক আছে। শুধু ঠিক আছে বলে থেমে থাকলে চলবে না। এটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এখন আমাদের দায়িত্ব। আরে ভাই, সারাজীবন দুর্নীতিবাজ আর লুটেরাদের বিরুদ্ধেই তো যুদ্ধ করলাম। আমার দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশের মাটিতে লুটেরারা পালিয়ে বেড়াবে আর আমরা চোখ কান মুখ বন্ধ করে থাকবো? এটা হতেই পারে না। আসলে এই জাগরণটা সময়ের ন্যায্য দাবী ছিল। টরন্টোর সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ভাইবোন ও কমিউনিটির বিভিন্ন অঙ্গনের নেতাকর্মী ও সচেতন মানুষ জেগে উঠে এটা আন্দোলনে রূপ দিয়েছেন। আমিও এই আন্দোলনের সাথে একজন কর্মী। দেখেছেন তো আমি ও আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু বীর মুক্তিযোদ্ধা সালাম শরিফ প্রতিটি মানববন্ধন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেছি। আমরা আছি শেষ পর্যন্ত।
দে. এ. এই আন্দোলন সম্পর্কে আপনার পরামর্শ কি?
সৈ. না. হো. মনা. পরামর্শ হলো – কোন একক ব্যক্তি, পরিবারকে উদ্দেশ্য করে যেন এই আন্দোলনে কথা না হয়। কেননা, এখানে অগণিত ব্যাংক লুটেরা লুকিয়ে আছে। এই আন্দোলনে এক সময় আস্তে আস্তে সকলের নামই বেরিয়ে আসবে। আর বিষয়টাকে জিইয়ে রাখা। যাতে বাংলাদেশের মিডিয়া এই জাগরণের ব্যাপারে খবর উৎসাহের সাথে প্রচার করে।
দে. এ. এই আন্দোলনের ভালো দিক কোনটি?
সৈ. না. হো. মনা. প্রথম ভালো দিক তো দেশের জন্য নিঃস্বার্থভাবে সবার দ্বারা এই আন্দোলনটা হচ্ছে। আর সবচেয়ে ভালো দিক হলো – আমার বন্ধু সালাম শরিফের সাথে সুর মিলিয়েই বলছি – এর সর্বজনীনতা। খেয়াল করে দেখছেন- দলমত নির্বিশেষে, আওয়ামী লীগ, বিএনপির দেয়াল ভুলে এই বানববন্ধনের পাশাপাশি দাঁড়িয়েছে সবাই! এটি অভাবনীয় দৃশ্য। একটি মহৎকর্ম সম্পাদনের সময়ই কেবল এরকম সবকিছু ভুলে মানুষ পাশাপাশি দাঁড়ায়। আমি আশা করি আপনারা এটি বজায় রাখবেন।
দে. এ. থামুন থামুন মনা ভাই, আপনারা নয়, বলুন আমরা বজায় রাখবো! আজ এই পর্যন্তই মনা ভাই। আবার কথা হবে। ধন্যবাদ। সৈ. না. হো. মনা. আপনাকেও ধন্যবাদ এলাহী ভাই।