ক্রমাগত মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়ালে বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্বব্যাংক।
এক সমীক্ষায় বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরোজোনের মতো তিনটি বৃহত্তম অর্থনৈতিক অঞ্চলে অর্থনীতির গতি অনেক বেশি ধীর। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে ‘পরবর্তী বছরে বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি মাঝারি আঘাত একে মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ১৯৭০ সাল থেকে মন্দা পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পরে বিশ্ব অর্থনীতি এখন সবচেয়ে মন্থর গতিতে চলছে এবং ভোক্তাদের আস্থা আগের বৈশ্বিক মন্দার তুলনায় আরও দ্রুত হ্রাস পেয়েছে। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে এবং উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য ধ্বংসাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেছেন, ‘বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধি দ্রুত কমছে, আরো অনেক দেশ মন্দার কবলে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
বৈশ্বিকভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ সুদের হার বৃদ্ধি এবং সংশ্লিষ্ট নীতিগত পদক্ষেপগুলি আগামী বছর পর্যন্ত অর্থনীতি ভালভাবে চলতে পারে। তবে কোভিড -১৯ মহামারির আগে মুদ্রাস্ফীতি যে স্তরে ছিল সেই পর্যায়ে ফিরিয়ে আনার জন্য যথেষ্ট নাও হতে পারে।
সরবরাহ ব্যাহত না হলে এবং শ্রম বাজারের চাপ প্রশমিত না হলে জ্বালানি খাত ব্যতীত বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতির হার ২০২৩ সালে প্রায় ৫ শতাংশে থাকতে পারে। এই হার মহামারির আগে পাঁচ বছরের গড়ের প্রায় দ্বিগুণ।
মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে আনতে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলিকে সুদের হারের পয়েন্ট অতিরিক্ত দুই শতাংশ বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে। অবশ্য ইতোমধ্যে এই পয়েন্ট হার ২০২১ সালের গড়ের তুলনায় দুই শতাংশ ছাড়িয়েছে।
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, আর্থিক বাজারের চাপের সাথে সুদের হারের এই পয়েন্ট বৃদ্ধি ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী জিডিপি বৃদ্ধি শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বা মাথাপিছু আয় শূন্য দশমিক ৪ শতাং কমিয়ে দেবে, যা বিশ্বব্যাপী মন্দার প্রযুক্তিগত সংজ্ঞার মধ্যে পড়বে।