সৌদি তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলায় ইরানকে মূলহোতা আখ্যায়িত করা সত্ত্বেও দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রোববার হোয়াইট হাউসের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি এমন তথ্য দিয়েছে। যুগান্তর
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক সাক্ষাতকারে হোয়াইট হাউসের কাউন্সেলর কেল্লেয়ান্নি কনওয়াই এমন সম্ভাবনার কথা একেবারে উড়িয়ে দেননি।
এমন এক সময় তিনি এই দাবি করলেন যখন ড্রোন হামলায় তেল উৎপাদন কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে মার্কিন মিত্র সৌদি আরব। যদিও ফের পুরোদমে উৎপাদন শুরু করতে চেষ্টা করছে রিয়াদ।
প্রতিবেশী ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা শনিবার সৌদির রাষ্ট্র মালিকানাধীন তেল কোম্পানি আরমাকোর দুটি স্থাপনায় শনিবার ড্রোন হামলা চালিয়েছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাইক পম্পেও এ হামলার দায় ইরানের ওপর চাপিয়েছে। তিনি বলেন, এই বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহে নজিরবিহীন হামলা ইয়েমেন থেকে হয়েছে বলে কোনো প্রমাণ নেই।
রোববার ফক্স নিউজকে কনওয়াই বলেন, নিউইয়র্কে আসন্ন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দুই নেতার একটি বৈঠকের যে আভাস ট্রাম্প দিয়েছিলেন, তিনি সেটাকে বিবেচনায় রাখবেন বলে মনে হচ্ছে।
একটি চুক্তি কিংবা বৈঠকে বসতে শর্তাবলী প্রেসিডেন্টের জন্য ন্যায়সঙ্গত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
গত বছরের মে-তে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে প্রত্যাহার করে নিলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরম আকার নিয়েছে।
ইরানের অর্থনীতিকে ভেঙে দিতে দেশটির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যাচ্ছে।
ইরানও চুক্তির প্রতিশ্রুতি থেকে সরে গিয়ে জবাব দিচ্ছে। চুক্তিতে পরমাণু কর্মসূচিতে লাগাম টেনে ধরার বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় পাওয়ার প্রতিশ্রুতি রয়েছে।
বিশ্লেষকরা আশা করছেন, ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের মূল কারিগর জন বোল্টনকে জাতীয় উপদেষ্টার পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার পর নতুন করে দুই দেশের মধ্যে আপসের সম্ভাবনা রয়েছে।
শনিবার বিস্ফোরণে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল প্রক্রিয়াজাতকরণ স্থাপনা বাকিক ও নিকটস্থ খুরাইশ আগুনে গ্রাস করে ফেলে।
হোয়াইট হাউসের কাউন্সিলর বলেন, চীনের সঙ্গে ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ প্রমাণ করেছে, হোয়াইট হাউসে একজন ব্যবসায়ী থাকা লাভজনক হয়েছে, যিনি একজন ধৈর্যশীল চুক্তি প্রণয়নকারী। যদিও দুই পরাশক্তির এই বাণিজ্যযুদ্ধ বৈশ্বিক অর্থনীতির অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে এবং ভিত দুর্বল করে দিয়েছে।
ফক্সনিউজকে এই রাজনৈতিক পরামর্শক বলেন, তিনি (ট্রাম্প) জানেন- সম্পর্ককে ঘিরে যে সব উপাদান থাকা দরকার, তা যদি বর্তমান না থাকে, তবে আপনি লোকজনের সঙ্গে বসবেন না কিংবা বৈঠক করবেন না। ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের প্রচারের মতো, ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসার মতো, দুই দিন আগে হোয়াইট হাউস থেকে মার্কিন অর্থ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার মতো।