হার্ট অ্যাটাক এমন একটি গুরুতর অবস্থা, যার জন্য দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। অনেক সময় হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত ব্যক্তির তাৎক্ষণিক মৃত্যু হয়।
হার্ট অ্যাটাকের কিছু আগাম লক্ষণ বা সতর্কতা রয়েছে, যা হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের আগে শরীর সংকেত পাঠায়। উপসর্গ বুঝে দ্রুত পদক্ষেপ নিলে বড় ক্ষতি এড়ানো যায়।
হার্ট যখন অপর্যাপ্ত ও অনিয়মিতভাবে রক্ত সঞ্চালন করে, তখন হার্ট অ্যাটাক হয়। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান, দীর্ঘসময় বসে থাকা, অত্যধিক লবণ খাওয়া, দাঁতের যত্ন না নেওয়া, পর্যাপ্ত না ঘুমানো, উচ্চ চর্বি ও কোলেস্টেরল রয়েছে এমন খাবারে অভ্যস্ততা, শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে না রাখা, মানসিক চাপসহ নানা কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাকের আগাম লক্ষণ সম্পর্কে প্রত্যেকরই জানা দরকার বলে মনে করেন কলম্বিয়া এশিয়া হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ড. অনিল বানসাল। এ রোগের কারণ, উপসর্গ জানতে পারলে অনেকাংশে কমে যায় হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর ঝুঁকি।
কিন্তু কীভাবে আগাম জানবেন বা বুঝবেন যে আপনি হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হতে যাচ্ছেন? ব্রাইটসাইড এক প্রতিবেদনে ৮টি উপসর্গের কথা জানিয়েছে। এসব উপসর্গ সতর্কীকরণ বার্তা দেয় যে, এক মাসের মধ্যে আপনার হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
অবসাদ: ধমনী যখন সংকীর্ণ হয়ে যায় তখন হার্ট স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম রক্ত পায়। ফলে হার্টকে তার স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে বেশি শ্রম দিতে হয় এবং এতে আপনি সব সময় মাত্রাতিরিক্ত ক্লান্ত এবং ঝিমুনি অনুভূতির সম্মুখীন হবেন। তাই এই উপসর্গে সতর্ক হোন যে, হার্ট অ্যাটাকের সময় নিকটবর্তী হচ্ছে।
শ্বাস-প্রশ্বাসে দুর্বলতা: যখন আপনার হার্ট কম রক্ত পায়, তখন এটি আপনার ফুসফুসে স্বাভাবিকের চেয়ে কম অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে। এই দুটি সিস্টেম একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল, তাই একটি ছাড়া অন্যটি স্বাভাবিক ক্রিয়াশীল থাকতে পারে না। আপনার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে মানে হতে পারে, আপনার হার্ট অ্যাটাকের সময় নিকটবর্তী হচ্ছে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
শারীরিক দুর্বলতা: হঠাৎ করে যখন আপনার শরীর দুর্বল হয়ে যায়, তার কারণ হলো ধমনী আরো সংকীর্ণ হওয়ায় রক্তসংবহন সঠিকভাবে অনুমতি দিচ্ছে না। আপনার পেশীর যা প্রয়োজন তা পাচ্ছে না এবং এমনটা হলে আপনার বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক।
মাথা ঘোরা এবং ঠান্ডা ঘাম: কম রক্ত সঞ্চালনের কারণে আপনার মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ সীমাবদ্ধতার মধ্যে থাকছে, যা জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। এ কারণে মাথা ঘোরা এবং ঠান্ডা ঘাম দেখা যায়, যা উপেক্ষা করা উচিত নয়।
বুকে চাপ বা ব্যথা: হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ হিসেবে আপনি বুকে ব্যথা ও অস্বস্তি বা চাপ অনুভব করতে পারেন। এই উপসর্গ মাঝেমাঝে চলে যায় আবার ফিরে আসে। বুকে অস্বস্তি বোধ করলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে দেরী করবেন না।
সর্দি-কাশি: হৃদরোগের সমস্যা বাড়তে থাকলে সর্দি-কাশি লেগেই থাকে, যার মানে হচ্ছে হার্ট অ্যাটাক অদূর ভবিষ্যতের মধ্যে ঘটতে পারে। হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের মধ্যে অনেকেই জানান যে, হার্ট অ্যাটাকের কিছুদিন আগে তারা ঠান্ডাজনিত সমস্যায় ভুগেছেন।
আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ এ ধরনের কোনো উপসর্গে ভুগলে, দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
তথ্যসূত্র: ব্রাইটসাইড