হিজাব ইস্যুতে দায়ের করা মামলায় ভারতের কর্নাটক হাই কোর্টের রায় নিয়ে ঐকমত্যে আসতে পারল না সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। তবে শেষ পর্যন্ত বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চে ‘খণ্ডিত রায়’ দিয়েছে। এর ফলে এ বার উচ্চতর বেঞ্চে গেল হিজাব মামলা। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ১৫ মার্চ কর্নাটক হাই কোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, হিজাব পরাকে ধর্মাচরণের প্রয়োজনীয় অঙ্গ হিসেবে দেখা ঠিক নয়। সেই রায়ের বিরুদ্ধে মুসলিম ছাত্রীদের আবেদনের ধারাবাহিক শুনানির পর ২২ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে নিজেদের রায় সংরক্ষিত রেখেছিল বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ।
বিচারপতি হেমন্ত কর্নাটক হাই কোর্টের রায়ের পক্ষে মত জানিয়ে আবেদন খারিজ করে দিলেও সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারার উল্লেখ করে বিচারপতি ধুলিয়া মুসলিম ছাত্রীদের আবেদনের যৌক্তিকতা মেনে নিয়েছেন। হিজাব পরার ব্যক্তিগত অধিকারকেও স্বীকৃতি দিয়েছেন তিনি।
বিচারপতি ধুলিয়া বলেছেন, ‘এটি শেষ পর্যন্ত পছন্দের বিষয় এবং অন্য কিছু নয়। একটি জিনিস যা আমার জন্য শীর্ষে ছিল তা হল মেয়েদের শিক্ষা।’
গত জানুয়ারিতে কর্নাটকের উদুপির একটি প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজে কয়েক জন হিজাব পরিহিত শিক্ষার্থীকে ক্লাসে বসতে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। কলেজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি বিজেপি বিধায়ক রঘুপতি ভট্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেন, হিজাব পরিহিতরা ক্লাসে ঢুকতে পারবেন না। সেই বিতর্ক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যজুড়ে। হিজাবের পাল্টা হিসাবে গেরুয়া উত্তরীয় পরে আন্দোলন শুরু করে একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। কয়েকটি জায়গায় হিজাবের পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলনকারীরা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পড়ে। পুলিশের সঙ্গেও একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে পোশাক-নির্দেশিকা জারি করেছিল কর্নাটকের বিজেপি সরকার।
কর্নাটকের বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উদুপির কয়েক জন মুসলিম ছাত্রী কর্নাটক হাই কোর্টে রিট আবেদন দাখিল করেন। তারা আদালতকে জানান, হিজাব পরা তাঁদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। কোনোভাবেই তা বাতিল করা যায় না। কিন্তু গত ১৫ মার্চ কর্নাটক হাই কোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। রায়ে বলা হয়, হিজাব পরাকে ধর্মাচরণের প্রয়োজনীয় অঙ্গ হিসেবে দেখা ঠিক নয়।