বিশ্বের ১৬৫টি দেশকে ৩৮ হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে চীন। অথচ বিশ্বব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে প্রক্রিয়াগতভাবে ঋণের অংক এরচেয়ে কম দেখিয়েছে বেইজিং।
চার বছর ধরে গবেষণা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান এইডডাটা জানিয়েছে, সরকারি ব্যালেন্স শিটে এই ঋণের তথ্য গোপন রাখা হয়েছে। সেখানে ঋণের পরিবর্তে বিশেষ খাত ও আধা-বেসরকারি ঋণের খাত দেখানো হয়েছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি বা নজরদারির দায়িত্ব সম্পন্ন আন্তঃসরকার সংস্থাগুলোর আগের ধারণার চেয়েও চীনের দেওয়া এই ঋণের পরিমাণ বেশি।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লাওস, পাপুয়া নিউ গিনি, মালদ্বীপ, ব্রুনেই, কম্বোডিয়া ও মিয়ানমারের মতো ১০টি নিম্নমধ্যম আয়ের দেশকে চীন তার জিডিপির ১০ শতাংশেরও বেশি ঋণ হিসেবে দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে লাওসকে দেওয়া ঋণের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঋণের তথ্য গোপন রাখা হয়েছে। চীন-লাওস রেলওয়ে প্রকল্পে দেওয়া ৫৯০ কোটি ডলারের পুরোটাই বেসরকারিভাবে দেওয়া হয়েছে।
২০১৩ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বেল্ট রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) নামে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ প্রকল্প চালু করেন। এর আওতায় অবকাঠামোগত উন্নয়নে নিম্ন থেকে মধ্যম আয়ের শতাধিক দেশকে ঋণ দেয় বেইজিং।
এইডডাটা বিআরআইয়ের ১৩ হাজার প্রকল্প পর্যালোচনা করে দেখেছে ২০০০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত চীন ১৬৫টি দেশকে ৮৪ হাজার ৩০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছিল। দেখা গেছে বিআরআই-এর আগের যুগে চীনের বিদেশি ঋণ নাটকীয়ভাবে সরকার-থেকে-সরকারি ঋণের প্রায় ৭০ শতাংশ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি, ব্যাংক, যৌথ উদ্যোগ, ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান এবং বিশেষ উদ্দেশ্যে যানবাহন (এসপিভি) খাতে চলে গেছে। এর ফলে ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি অপ্রকাশিত রাখা হয়, যা প্রায় ৩৮ হাজার ৫০০ কোটি ডলার সমপরিমাণ। কারণ প্রাথমিক ঋণগ্রহীতা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিষ্ঠান না হওয়ায় সেগুলোর প্রতিবেদন দেওয়ার আর বাধ্যবাধকতা ছিল না।