২০০৯ এবং ২০১০ পরপর দুই বছরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল যথাক্রমে পাকিস্তান এবং ইংল্যান্ড। এরপর এক যুগ কেটে গেলেও এই ফরম্যাটের বিশ্বমঞ্চে আর ফাইনালেই উঠতে পারেনি পাকিস্তান।
অন্যদিকে ইংল্যান্ড ২০১৬ সালে ফাইনালে উঠলেও আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়ে। অবশেষে ২০২২ সালে এসে দুই দলই ফাইনালে ওঠে নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে। যেখানে শেষ হাসি হেসেছে জস বাটলারের ইংল্যান্ড।
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে টসে হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৭ রান তুলতে পারে। পাকিস্তানের দেওয়া অল্প রানের পুঁজি টপকাতে ইংল্যান্ড নেয় ১৯ ওভার পর্যন্ত। তবে বেন স্টোকসের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসের সুবাদে ৫ উইকেটের জয় নিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড।
এবারের বিশ্বকাপে পাকিস্তান অবশ্য ১৯৯২ সালের পুরনো ইতিহাস প্রায় ফিরিয়ে এনেছিল। ফাইনালের ফলাফল ব্যতীত অন্যান্য ফলের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের সঙ্গে মিলে গিয়েছিল ১৯৯২ সালের সেই ওয়ানডে বিশ্বকাপ। যেখানে প্রথমবারের মতো শিরোপার স্বাদ পেয়েছিল পাকিস্তান।
মেলবোর্নে এদিন ফাইনালে ইংল্যান্ডের টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়াও ছিল সেই ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি। ১৯৯২ সালের ফাইনালেও ইংল্যান্ড টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিল। তবে এবার আর পাকিস্তানের পক্ষে ইতিহাস কথা বললো না। ঠিকই হেরেছে পাকিস্তান।
মেলবোর্নে এদিন আগে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। বাবর এবং শান মাসুদ ছাড়া অন্য কোনো ব্যাটসম্যানই ৩০ রানের বেশি করতে পারেনি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন শান। বাবরের ব্যাট থেকে আসে ৩২ রান।
এছাড়াও শাদাব খান করেন ২০ এবং রিজওয়ানের ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান। ইংলিশদের পক্ষে স্যাম কারেন ১২ রানের বিনিময়ে নেন ৩ উইকেট। এছাড়াও ক্রিস জর্দান এবং আদিল রশিদ নেন ২টি করে উইকেট।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ইংল্যান্ড। শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে মাত্র ১ রান করে বোল্ড হয়ে যান অ্যালেক্স হেলস। তবে দ্বিতীয় ওভারেই নাসিম শাহকে তিন বাউন্ডারি মেরে সেই চাপ সামাল দেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার।
তবে পাকিস্তানকে ম্যাচে ফেরান পেসার হারিস রউফ। তৃতীয় ও পঞ্চম ওভারের জোড়া উইকেট তুলে নিলে ম্যাচে ফেরে বাবর আজমের দল। ফিল সল্টকে ১০ রানে বিদায়ের পর ও ইংলিশ অধিনায়ক বাটলারকে তুলে নেন ২৬ রানের মাথায়।
এরপর বেন স্টোকস ও হ্যারি ব্রুকস জুটি গড়ে দলের প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন। এই দুই ব্যাটার দলের খারাপ সময়ে ৩৯ রানের জুটি গড়েন। তবে দলীয় ৮৪ রানে ব্রুকস ২৩ বলে ২০ রান করে শাদাব খানের বলে সাজঘরের পথ ধরেন।
তবে স্টোকস যেন আজ সেই ২০১৬ সালে বিশ্বকাপ হাতছাড়া করার সব রাগ নিজের কাঁধে তুলে নেন। জয় থেকে মাত্র ৬ রান দূরে থেকে মইন আলী ১৯ রান করে আউট হলেও শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে ক্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি ফিফটি তুলে দলকে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জেতান স্টোকস।