৪০ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ এক সিরিয়াল ধর্ষককে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ওই ধর্ষক আতঙ্কিত করে রেখেছিল সিডনিবাসীকে।
পুলিশ জানিয়েছে, কেইথ সিমস নামের ওই ব্যক্তি ১৯৮৫ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ৩১ নারীকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করেছিলেন। ওই নারীরা যখন প্রাতঃভ্রমণে বের হয়েছিল তখন তাদের ওপর হামলা করেছিল কেইথ। এই হামলাগুলোর পিছনে কয়েক জন ব্যক্তি থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল। তবে নতুন ডিএনএ প্রযুক্তির সাহায্যে কেইথকে শেষ পর্যন্ত শনাক্ত করতে সক্ষম হয় পুলিশ। তবে গত ফেব্রুয়ারিতে ৬৬ বছর বয়সে মারা গেছে এই সিরিয়াল ধর্ষক।
বিভিন্ন সময়ে ‘বন্ডি বিস্ট’ বা ‘দ্য ট্র্যাকসুট রেপিস্ট’ নামে পরিচিত কেইথ সিমস প্রথম ১৯৮৫ সালে ক্লোভেলির সমুদ্রতীরবর্তী উপশহরে এক নারীর ওপর হামলা করেছিল। ২০০১ সালে ওই শহরের কাছাকাছি একটি কবরস্থানে তার শেষ হামলা হয়েছিল। প্রতিটি ঘটনা সেই সময়ে পৃথকভাবে তদন্ত করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ ২০০০ সালে ঘটনাগুলোর সংশ্লিষ্টতা জুড়তে শুরু করেছিল। সিমসের হামলার শিকার হয়ে নিহত নারীদের ১২ জনের দেহে একই ডিএনএ পাওয়া গেছে এবং আরও ১৯টি ঘটনা আক্রমণকারীর পদ্ধতির সাথে মিলে যায়।
পুলিশের কাছে ১৪ থেকে ৫৫ বছর বয়সী নারীরা হামলাকারীর যে বর্ণনা দিয়েছিলেন তার সবগুলো প্রায় একই ছিল। মধ্যে ছিল – সবাই তাদের আততায়ীর একই বর্ণনা দিয়েছেন। তাদের বর্ণনা অনুযায়ী, হামলাকারী ১৬০ থেকে ১৮০ সেন্টিমিটার লম্বা ছিল, চোখের রঙ গাঢ় বাদামী এবং প্রশস্ত নাক ছিল। হামলাকারী তার মুখ ঢেকে রাখত এবং ট্র্যাকসুট, হুডি বা ফুটবল শর্টসের মতো নৈমিত্তিক পোশাক পরত। সে তার শিকারদের ছুরি দেখিয়ে হুমকি দিতো।
২০১৯ সালে তদন্তকারীরা প্রথম সাফল্য পায়। পুলিশ ডাটাবেসে একটি পারিবারিক ডিএনএ মিল খুঁজে পায়। গত সেপ্টেম্বরে সিমসের কাছ থেকে পাওয়া একটি নমুনা ভিকটিমদের কাছ থেকে নেওয়া নমুনাগুলির সাথে নিখুঁত মিল পাওয়া যায়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, পরিবার ও বন্ধুরা সিমসকে ভালো বাবা, দাদা ও সমাজের সদস্য হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তাদের কারো ধারণাই ছিল না যে, সিমস এ ধরনের কোনো কাজ করতে পারেন।