ভারতের রাজধানী দিল্লির নয়ডায় দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ধরে একটু একটু করে তৈরি হয়েছিল গগনচুম্বী জোড়া ভবন। তবে রোববার মাত্র ৯ সেকেন্ডে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো ভবন দুটিকে। ভবন দুটির কংক্রিটের ধ্বংসাবশেষ এখন ছড়িয়েছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। তিন মাস লাগবে এই বর্জ্য অপসারণে।
নির্মাণের শুরু থেকেই বিতর্ক ছিল নয়ডার এই জোড়া ভবনটিকে ঘিরে। ২০০৫ সালে ওই এলাকায় ১৪টি অট্টালিকা বানানোর অনুমতি পেয়েছিল নির্মাণ সংস্থা সুপারটেক। নয়ডা প্রশাসনের নির্দেশনা ছিল অট্টালিকাগুলির উচ্চতা ৩৭ মিটারের মধ্যে হতে হবে। ২০০৬ সালে আরও জমি দেওয়া হয় নির্মাণ সংস্থাটিকে। ২০০৯ সালে স্থির করা হয়, আরও দু’টি অট্টালিকা বানাবে সুপারটেক। এর মধ্যে একটি হল অ্যাপেক্স, অন্যটি সিয়েন। ২৪ তলা পর্যন্ত এই জোড়া ভবন বানানো হবে বলে স্থির করা হয়। কিন্তু নিয়ম ভেঙে সেই ভবন ৩২ তলা করা হয়।
এই ঘটনায় এমারল্ড কোর্ট ওনার্স রেসিডেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ২০১২ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টে মামলা করে। অভিযোগ করা হয়, নির্মাণকারী সংস্থা উত্তরপ্রদেশ অ্যাপার্ট ওনার্স অ্যাক্ট, ২০১০-এর লঙ্ঘন করেছে। শুধু তাই-ই নয়, যেখানে বাগান করা হবে বলে দলিলে দেখানো হয়েছিল, সেই জায়গাতেই অট্টালিকা গড়ে তোলা হয়েছে। নির্মাণ আইন অনুযায়ী, যেখানে দু’টি অট্টালিকার দূরত্ব ৩৭ মিটার হওয়া উচিত, সেখানে ১৬ মিটার দূরত্বে অ্যাপেক্স এবং সিয়েন ভবন দুটি নির্মাণ করা হয়েছে। এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয় সুপ্রিম কোর্টে। অবশেষে জোড়া ভবন ভাঙার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
স্থানীয় সময় রোববার সকাল ৭টার দিকে ভবন ভাঙার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি শুরু হয়। ভবন দুটি ভাঙার সময় যেন আশেপাশের ১৫টি অট্টালিকার কোনও বাসিন্দা ধারেকাছে না থাকেন, তা নিশ্চিত করতে তৈরি হয়েছিল‘স্পেশাল টাস্ক ফোর্স’ (এসটিএফ)। সাত সদস্যের দলে ছিলেন বিশেষজ্ঞ ও আবাসনের বাসিন্দারা।
এনডিটিভি অনলাইন জানিয়েছে, নয়ডা কর্তৃপক্ষের জন্য পরবর্তী চ্যালেঞ্জ হল ধ্বংসাবশেষের স্তুপ পরিষ্কার করা। অভিযানের সাথে জড়িত কর্মকর্তারা আগে বলেছিলেন যে প্রায় ৫৫ হাজার টন ধ্বংসাবশেষ তৈরি হবে। ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করতে তিন মাস সময় লাগতে পারে।