সেজান মাহমুদ
লেখক পরিচিতি: কথাশিল্পী, গীতিকার, চলচ্চিত্রকার, পেশায় চিকিৎসা বিজ্ঞানী। ইউনিভার্সিটি অব সেন্টার ফ্লোরিডা কলেজ অব মেডিসিনে সহকারী ডিন ও প্রফেসর হিসাবে কর্মরত।
আপনারা যতোই আমেরিকা বা বুশের দোষ দিন না কেন, তালেবান বানাতে কিন্তু তাদের চীন বা জাপান যেতে হয়নি। তালেবান হয়েছে তাঁরাই যারা নিজেদের মুসলমান বলে দাবি করেন। জানি কেউ কেউ লাফ দিয়ে বলতে আসবে এরা আসল মুসলমান না। তাহলে কারা আসল মুসলমান? উদাহরণ দিন।
যা হোক, লক্ষ্য করুন নারীদের ওপরে কী অত্যাচার হয়েছে তালিবানদের দ্বারা! শুধু অত্যাচারী শ্বশুর বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার জন্যে নাক মুখ কান কেটে দেয়া, এনজিও থেকে চাল নেয়ার অপরাধে প্রকাশ্য গুলি করে হত্যা, মাটিতে পুঁতে পাথর মেরে হত্যা, প্রকাশ্যে দোররা মারা, কী না করেছে তারা ধর্মের নামে?
অথচ যেসব সাচ্চা মুসলমান ( ?) বিশেষ করে ডাক্তার, বিশ্ববিদ্যালয়ে পডুয়া লোকগুলো কোনদিন সেসবের বিরুদ্ধে লিখেছে বা প্রতিবাদ করেছে? না করেনি, যতো না প্রগতির কথা বললে আমার বা আপনার পাতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে গালির ঝুড়ি নিয়ে।
প্রথম আলোর মতো পত্রিকা, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ( কাকতালীয়ভাবে বাংলাদেশে বেশিরভাগ সন্ত্রাসী কাজে এদের যোগসূত্র পাওয়া যায়) শিক্ষকের সমাজবিদ্যা নিয়ে জ্ঞানদান ছেপেছেন যে সেই তালেবানি হিজাব পরা মায়ের ক্রিকেট খেলা দেখে খারাপ বিচার করবেন না – ডোন্ট জাজ এ বুক বাই ইটস কভার! আমি আগের স্ট্যাটাসে অনেকগুলো মাতৃত্বের ছবি দিয়েছি- প্রকাশ্যে মা সন্তানকে স্তন্যপান করাচ্ছেন। আমি নিশ্চিত তারা এরকম একটি ছবি দিয়ে একথা বলতে সাহস করবে না — ডোন্ট জাজ এ বুক বাই ইটস কভার!
অন্যদিকে এক বাচ্চা মেয়েকে দিয়ে বাংলাদেশের ম্যাপে সেই তালেবানি হিজাব-পরা মায়ের ছবি আঁকিয়ে ভাইরাল করেছে কেউ কেউ!
পুরো ব্যাপারটাই পরিকল্পিত, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে করা। আমি মানুষের স্বাধীনতার পক্ষে, সেই সঙ্গে উশৃঙ্খলতারও বিরুদ্ধে। স্বাধীনতার সঙ্গে কিছু দায়িত্বও আসে। কিন্তু সত্যি কি বাংলাদেশের গ্রাম বা সাধারণ মানুষ তালিবানি হিজাব পরে বা পরতো? না, এটা আরোপিত। রাজনৈতিক ও ধর্মীয় দিক থেকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত, এখানেই আমার ঘোরতর আপত্তি। বাংলাদেশ সব সময় সকল ধর্মের সম্প্রীতি ও সহনশীল দেশ ছিল- এটা নষ্টের পেছনে একটি ডিগ্রীধারী, মেধাবী কুচক্র জড়িয়ে গেছে- এদের রুখে দিন, না হ’লে আমাদেরও তালেবানি যুগে যেতে হবে।