রেজাউল ইসলাম
দুই সন্তানের মা ডাঃ টালি বগলার, একজন টরন্টো ফিজিসিয়ান, জানুয়ারীতে তিনি চূড়ান্ত কোভিড১৯ ভ্যাক্সিন নিয়েছেন কিন্তু তিনি এখনো পাব্লিক হেলথের সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগুলি নিচ্ছেন। ভ্যাক্সিন না নেওয়া অভিভাবকদেরকে দেখা করা থেকেও তিনি বিরত আছেন। জানুয়ারীতে চূড়ান্ত কোভিড১৯ ভ্যাক্সিন নেওয়ার পর ডাঃ বগলার নতুন এক মুক্তির স্বাদ অনুভব করছেন কিন্তু তিনি এটাও জানেন যে তার জীবন হঠাৎ করে বদলে যাবার নয়। ফেব্রুয়ারীর শেষের দিকে একদিন যখন সে সেন্ট মাইকেল হসপিটালের সিফট শেষ করে তার যমজ মেয়ে দুটিকে কোলে নিয়ে তার অভিভাবকদের সাথে ভিডিও চ্যাট করছিলেন তখন তার কাছে পুরো প্যান্ডামিক জুড়ে যে ভার্চুয়াল ফ্যামেলি টাইম কাটিয়েছিলেন সেই একই ধরনের অভিজ্ঞতা তার হয়েছিল।
ভ্যাক্সিন নেওয়ার অর্থ এই নয় যে, সে তার অভিভাবকদের সাথে কোনরকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ছাড়া স্ব-শরীরে দেখা করবে। তার অভিভাবকরা ভ্যাক্সিন না নেওয়া পর্যন্ত এটি সম্ভব নয়। বগলার বলেন, “এটি সত্যিই খুব কঠিন একটা অবস্থা,যদিও স্বীকার করতে হচ্ছে, সামনের দিনগুলির কথা ভেবে একধরনের উত্তেজনাও বোধ করছি।” এখন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, যখন আর সবাই ভ্যাক্সিন নেবে, সময়কালটা অনেকটা একটা সময় থেকে আরেকটিতে উত্তরনের মত।” এই সপ্তাহে এবং সামনের মাসগুলিতে যত বেশি ক্যানাডিয়ানরা ভ্যাক্সিন নিতে থাকবে ততই এই অনুভূতি পাবার স্তরে উত্তরনের সংগ্রামে তারা লিপ্ত থাকবে। একই সময়ে মিলিয়ন মিলিয়ন ক্যানাডিয়ানরা হয়ত তাদের ভ্যাক্সিন পাবার অপেক্ষাতেও থাকবে।
ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটি হেলথ সেন্টারের সংক্রমন ব্যাধি বিশেষজ্ঞ এবং মেডিক্যাল মাইক্রোবাইয়োলজিস্ট ডাঃ ডোনাল্ড ভিনকে জিজ্ঞেস করলেন,” স্বাভাবিক অবস্থা দেখতে আসলে কেমন হবে?” এই প্রশ্নটা আসলে ডাঃবগলার চিত্রিত করার চেষ্টা করেছেন ইতিপূর্বে যেখানে তিনি বলেছিলেন, তার টরন্টোর ব্যাকইয়ার্ডে মেয়েদের নিয়ে গিয়ে তার অভিভাবকদের ভিডিও কল করেছেন যারা এখনো ভ্যাক্সিন পায় নি। একজন এক্সপার্ট সিবিসি নিউজের সংগে কথা বলার সময় বলেন যে, ভ্যাক্সিন নেওয়া হোক বা না হোক মানুষকে এখনো আরো বেশ কিছু সময় ধরে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে থাকতে হবে তাদের চারিপাশের মানুষগুলিকে রক্ষা করার জন্য। এটাও সত্যি যে, এক বছর লক-ডাউনে থাকার পর অসংখ্য বন্ধু এবং পরিবার একসংগে মিলিত হবার আশা পোষন করছে তাদের ভ্যাক্সিন নেওয়ার পর পরই। তবে বাস্তবিক চাহিদা হচ্ছে, সবাই ঝুঁকির ক্ষেত্রে তাদের কমফোর্ট লেভেলকে বিবেচনায় নিবে । টরন্টো ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডাঃ সুশি হোতা, সংক্রমন বিশেষজ্ঞ বলেন,” আমি মনে করি আমরা এমন এক স্তরে প্রবেশ করছি যেখানে মানুষ পাব্লিক হেলথ নিষেধাজ্ঞার কারনে খুবই ক্লান্ত। আমরা খুব সম্ভব সেটাই বেশি মোকাবেলা করবো।”
আমি মনে করি অতি সংক্ষেপে সবার জন্য স্বল্পমেয়াদী গুরুত্বপূর্ণ বার্তা এই যে, কিছুই পরিবর্তিত হয় নি। তারা ভ্যাক্সিন নেওয়ার আগে যে ভাবে জীবনকে অতিবাহিত করেছিল ঠিক একই রকমভাবে জীবন-যাপন চালিয়ে যেতে হবে,কারন,যথেষ্ট সংখ্যক মানুষের ভ্যাক্সিনেটেড হতে সময় লাগবে।” “ভ্যাক্সিনেটেড মানুষের মধ্যে ঝুঁকি একদম কম” এটা অবশ্যই ঠিক যে, যত সময় যাবে, ভ্যাক্সিনেটেড মানুষ আরো ভ্যাক্সিনেটেড মানুষকে জানবে, তারা বন্ধু,পরিবারের সদস্য বা সহ-কর্মিও হতে পারে। তাহলে কোন ক্ষেত্রে, একদল কোভিড প্রটেক্টেড মানুষ গতানুগতিক বৈশ্বিক মহামারী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ছাড়া একত্রে সময় কাটাতে পারবে? “তোমার অভিভাবকরা যদি বয়স্ক হয় এবং তারা যদি ভ্যাক্সিনেটেড হয়, তুমিও যদি ভ্যাক্সিনেটেড হও তবে ঝুঁকির মাত্রা খুবই কম, বিশেষ করে তুমি যদি অন্য সব ধরনের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সতর্কতাগুলি অব্যাহত রাখো।
সূত্রঃ CBC news