শম্পা সাহা
গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত। বছরের পর বছর ঘুরে গেছে। গ্রীষ্মে তপ্ত মাটি চৌচির হয়েছে। তৃষ্ণার্ত মাটিকে তৃপ্ত করতে নেমেছে আষাঢ়ের বৃষ্টি ধারা। গাছের পাতায়, ঘাসে, ঘাসে শিশির জমেছে। রাতে শীত পড়তে শুরু করেছে। খেজুর গাছে বেঁধে রাখা কলসিতে রস জমেছে। ধুলিমুক্ত আকাশে লক্ষ তারা উঠেছে। সবুজ ধান ক্ষেত হলুদ হয়েছে। আবার বসন্ত এসেছে। কোকিলের ডাক। বাতাসে আছমর বোলের গন্ধ। দিনে টান ধরেছে।
সোডা জলে বিছানার চাদর, নিখিলের স্কুলের জামা কাপড় ধুয়ে বাইরের উঠানে শুকাতে দিতে এসেছিল বকুল। হঠাৎ ওর চোখ আটকে যায়। কিছুটা ক্ষেত। ক্ষেত পার হলেই কাঁচা পাকা রাস্তা। রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা শিমুল গাছে লাল হয়ে ফুল ফুটেছে। স্কুলে যাবার পথে নার্গিস, রীতা, সুমি ওরা মাটিতে ঝরে পড়া ফুলগুলো কুড়িয়ে নিচ্ছে। এক সময় বকুলও ওদের সাথে ফ্রক পড়ে স্কুলে যেত। এখন ওরা নীল কামিজ, সাদা সালোয়ার আর ওড়না পড়ে। ওরা নতুন নতুন ক্লাসে উঠেছে। আর বকুলের পড়া সেই ক্লাস ফাইভেই থেমে আছে। তার স্কুলের সেই নীল ছোট্ট ফ্রকটা কোথায় হারিয়ে গেছে। ওরা এখন কেউ তার খোঁজও নেয় না। জাতীয় সঙ্গীতের পরে স্কুলে শপথ বাক্য পাঠ হত। হঠাৎই বকুল নিজের মনে শপথ বাক্য আওড়াতে লাগল।
-আমি শপথ করিতেছি যে।
পরের লাইনগুলো বারবার করে মনে করার চেষ্টা করল সে কিন্তু ভুলে যাওয়া লাইনগুলো নয়। ঘুরে ফিরে শুধু শেষের লাইনগুলোই মনে এল তার।
-সর্বদা দেশের মঙ্গল করিব। দেশ ও দশের কল্যাণ সাধনায় নিজেকে নিয়োজিত রাখিব।
বুুকে আর স্কুলের সেই শপথ বাক্য নিয়ে মাথা ঘামাল না। স্কুল, পড়াশোনা এসব নিয়ে ভাববার সময় কোথায় তার? তার হাতে অনেক কাজ জমে আছে। ঘর মোছা, উঠোন ঝাড়– দেওয়া, রান্না করা। পালিয়ে যাওয়া মায়ের ফেলে যাওয়া সংসারের ঘানি টেনে নিয়ে বেড়ানো একটা তুচ্ছ সাধারণ মেয়ের এত কিছু ভাবলে চলে না।
আরো পড়ুন: আঁধারে আলো || ১ম পর্ব
সে এখন তাড়াতাড়ি করে উনুন জ্বালাতে পারে। ধোঁয়ায় এখন আর কষ্ট হয় না তার। ঝরঝরে করে ভাত রান্না করতে পারে। মাছ কুটতে পারে। সকালে স্কুলে যাবার আগে নিখিল আর পলাশকে গরম রুটি তরকারি করে দিতে পারে। এর চাইতে বেশি কিছু তার কাছে আর কি হতে পারে?
পলাশের গায়ের রং শিউলির মতই উজ্জ্বল। লম্বায় সে বকুলকে ছাড়িয়ে নিখিলের কাছাকাছি। ঠোঁটের ওপরে তার কালো রেখা স্পষ্ট। পড়া ভালো লাগে না। একই ক্লাসে দুইবার থাকে। তাই স্কুল ছেড়েছে সে। পাড়ার উঠতি বয়সের ছেলেদের সাথে তার বেশিরভাগ সময় কাটে। বুকের ছাতি, হাতের পেশী মাপে, আচ্ছা দেয়, কানে কানে কথা বলাবলি করে হেসে উঠে। আর, হঠাৎ বকুলকে দেখলে শিউলি বলে ভুল হয়। সেই একই দেহের গড়ন, ঘন কালো দুটি চোখ, একই নাক, ঠোঁট, চিবুক। শুধু গায়ের রং নিখিলের মত চাপা। নারীত্বের বিকাশ ঘটেছে তার শরীরে। কি লজ্জ্বা, কি ভয়ের ছিল সেই দিনগুলো। মায়ের কথা খুব মনে পড়ছিল সেদিন। উপায় না পেয়ে একই উঠোনের দুই ঘর পরে থাকা লক্ষ্মী কাকীমার কাছে ছুটে গিয়েছিল সে। সেসব দু-তিন বছর আগের ঘটনা। তারপর, বকুলের সমবয়সী আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী একে একে সকলের বিয়ে হয়ে গেছে। শুধু বকুলই রয়ে গেছে। নিখিল অনেকের কাছেই বকুলের বিয়ের কথা বলে। কিন্তু একই কথা বলে সবাই;
-যেমন গাছ, ফল ত তেমনিই হবে। দেশে তো মেয়ের অভাব নেই। মাথাটা নীচু হয়ে আসে নিখিলের। কিছুই বলতে পারে না সে। মিনতি, রীতা, সুধা দি, নমিতা-ওদের বিয়ে ঠিক হয়। সোনার দোকানে গিয়ে গহনা বানাতে দেয়। উঠানের ওপর রঙিন কাপড় দিয়ে সামিয়ানা টানানো হয়। ডেকোরেশনের হাড়ি-কড়াই, চেয়ার-টেবিল আসে। লাল-নীল আলো জ্বলে। বকুল যায় ওদের বিয়ের অনুষ্ঠানে। কিন্তু সবার মত হাসি, গল্প, আনন্দে মেতে উঠতে পারে না সে। তার মা নেই, ভালো জামা, শাড়ি গহনা কিছুই নেই। রান্না ঘরের কোণে বসে বাটনা বেটে তরকারি কুটে, ছাই দিয়ে বাসন মাঝে, উনুনের আঁচ, কালি ধোঁয়ায় রান্না করে তার মুখের উজ্জ্বলতা আজ নিস্প্রভ। ম্ল্যান মুখে বিষন্ন নয়নে বকুল দূর থেকে তাকিয়ে দেখে- ওদের বিয়ে। ওদের পরণে লাল শাড়ি, কানে ঝুমকো, হাতে বালা। আগুনকে ঘিরে ওরা সাতবার ঘোরে, মালা বদল হয়। বাঁশির সুরে বকুলের বুকের পাজরের হাড়গুলো যেন ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়। কেন এই কষ্ট, কিসের কষ্ট, জানে না বকুল। পথের ধারে আগাছার মত বড় হওয়া তার সব স্বপ্ন মরে গেছে। স্বপ্ন দেখতেও সে ভুলে গেছে। কিন্তু তারপরও মনের কোন গহীনে ———- কোন সুদূরে আশা, স্বপ্ন- একজনের। সে আসবে একদিন। বন্ধ এই জগৎ থেকে তাকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে আলোর জগতে। তার ভালোবাসা দিয়ে সারা জীবন আগলে রাখবে বকুলকে। বলবে,
-আমি তোমাকে পেয়েছি বকুল। আর যে আমি কিছুই চাইনে
পরদিন বিয়ে শেষে, শ্বশুর বাড়ি চলে যাবার সময় মায়ের আঁচলে চাল ফেলে ঋণ শোধ করে যায় ওরা। বকুলের মনে হয় মায়ের কাছে তার কি কোন ঋণ আছে? নাকি তার কাছেই মায়ের ঋণ, কোনটা? তার তো মা নেই, সে কি তাহলে বাবার কাছে তার ঋণ শোধ করবে? বিয়ের আটদিন পর বাপের বাড়ি আসে ওরা।
স্বামীকে নিয়ে আলাদা ঘরে শোয়। এ বাড়ি সে বাড়ি ঘোরে। সিনেমায় যায়। এই কদিনেই বদলে যায় ওরা। হাসি, আনন্দ আর সুখে ভরা অন্য এক জগৎ, অন্য এক জীবন ওদের। ভাদ্র মাসের এক মাস ওর বাপের বাড়ি এসে থাকে। তারপর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বড় পেট নিয়ে আসে। এরপর আঁতুর ঘরে ঢোকে। শিশুর কান্না শোনা যায়। আঁতুর ঘরের বেড়ায়, ঘাসের ওপরে, ছেঁড়া ন্যাকড়া, ছোট ছোট কাপড়, কাঁথা শুকাতে থাকে।
আজ কাল, পলাশকে খুব অচেনা লাগে বকুলের। এত দিনের চেনা পলাশের সাথে কিছুতেই মেলাতে পারে না। সে এখন শার্টের বোতাম খোলা রাখে। রোদ চশমা কখনো চোখে, কখনো শার্টের ভিতরের গেঞ্জিতে ঝুলিয়ে রাখে। হাতে ব্রেসলেট পরে। সিগারেট টানে; তারপর নাক দিয়ে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়ে। চেয়ারম্যানের ছেলে, ছালাম তার নতুন বন্ধু। ওর পিছনে বসে মোটরসাইকেলে ঘোরে। ছালামের টাকাতেই দামি দামি জামা জুতা কিনে নিয়ে আসে। মাঝে মাঝে বাড়িতে ছোট ছোট প্যাকেট নিয়ে আসে। কখনো রান্না ঘরের পাটকাঠির আড়ালে, আবার কখনো লেপ-তোষকের ভিতরে লুকিয়ে রাখতে বলে। বকুল বোঝে না এই সাদা পাউডার লুকিয়ে রাখার কি প্রয়োজন? বাড়ির খাবার খেতে ভালো লাগে না।
সকালে বাজারের হোটেলে গিয়ে নাস্তা করে সে। রাতে খেয়ে ফেরে। মাঝে মাঝেই দু-তিন রাত বাইরে কাটিয়ে আসে। বকুল পলাশের মানিব্যাগে ৫০০ টাকার অনেকগুলো নোট দেখে অবাক হয়। এই বাড়িতে তার বন্ধুদের নিয়ে আসা যায় না। তাই উঠোনের পরে টিনের চাল দিয়ে নতুন ঘর তোলে পাশাপাশি দুটো ঘর। তার সাথে লাগোয়া স্ন্যানের ঘর। আলমারি, সোফা, খাট, দামি পর্দা, টিভি, ভিসিআর আরো কত কি! বকুল শুধু দূর থেকে তাকিয়ে দেখে। উঠোন আর সেই ঘরের মাঝে যোজন যোজন দূরত্ব মনে হয়। নিখিল একদিন পলাশকে বকুলের বিয়ের জন্য বলে।
-মা মরে গেলে মেয়ের বিয়ে হয়, কিন্তু মা অন্য পুরুষের সাথে ঘর ছাড়লে সে মেয়েকে কে বিয়ে করে?
তুমি বোঝ না? কোন কুলি, দিন মজুর কিংবা মিষ্টির দোকানে কাজ করে এমন কাউকে পাও কিনা দেখো।
পলাশকে কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারে না নিখিল। সবার মত ছেলের সামনে থেকেও মাথা নীচু করে চলে আসে সে। পলাশের বন্ধু, ছালামের বন্ধু সবাই আসে এই বাড়িতে। পলাশের ঘরে বসে সবাই মিলে রাতের পর রাত জেগে তাস খেলে। সিগারেট খায়। নিখিল মিষ্টির দোকান থেকে ফিরে এলেও ওদের তাসের আড্ডা চলতে থাকে। সন্ধ্যার পরের এই সময়টুকুতে বকুল আগে গল্পের বই পড়ত। স্কুলের লাইব্রেরি থেকে নিখিল বই এনে দেয়। অরক্ষনীয়া, পথের প্যাঁচালী; পুতুল নাচের ইতিকথা। আর এখন, দুবার/তিনবার ট্রেতে করে চা বিস্কুট সাজিয়ে পলাশের ঘরে গিয়ে দিয়ে আসে বকুল। ভেজানো দরজা বাইরে থেকে ধাক্কা দিলেই খুলে যায়। আর তখন সিগারেটের উৎকট গন্ধ নাকে এসে লাগে। তাসের আড্ডার অনেককেই চেনে না বকুল। কে ছোট, কে বড়- তাও জানে না সে। তবে এটুকু বোঝে- এদের কারোর চাহনিই ভালো নয়।
সাতদিন বাড়িটা নিশ্চুপ। যাবার আগেও কিছু বলে যায়নি পলাশ। এর দু-তিন দিন পর এক সন্ধ্যায় বউ নিয়ে ফেরে সে। কাকিমা বরণ ডালা এনে বউ বরণ করে ঘরে তোলে। নাম পূর্ণিমা। ফর্সা, লম্বা, এক হারা গড়ন। সকাল-সন্ধ্যা সব সময় পলাশের বন্ধুদের আনাগোনা। হাসি, আনন্দ, ঠাট্টা। কত বছর পরে এ বাড়িতে উৎসবের ছোঁয়া। তবে এত আনন্দের মাঝেও এক ঘরে দু বিছানায় শুয়ে ঘুমহীন রাত কাটে নিখিল আর বকুলের। বকুলের কান্নার শব্দে নিখিল উঠে আসে।
-কাঁদিস না মা। আমি সব কিছু সহ্য করতে পারি। কিন্তু তোর কষ্ট — সহ্য করতে পারি না। আমি তোকে ভালো ঘরে বিয়ে দেব। তোরও একদিন স্বামী, সংসার সন্তান সব হবে। তুই একদিন অনেক সুখী হবি। বকুলকে বুকের মধ্যে জড়িতে ধরে বকুলের সাথে নিখিলও কান্নায় ভেঙে পড়ে। বৌভাত অনুষ্ঠানে আয়োজনের কোন এূটি রাখে না পলাশ। আলোকসজ্জা, মাইকে গান বাজানো কোন কিছুই বাদ পড়ে না। কল তলায় পাশে কাঠাল গাছের নীচে মাটি কেটে উনুন বানানো হয়। খাসি জবাই হয়। বাবুর্চির রান্নার সুগন্ধ ছড়ায়। বকুলের বিয়ের জন্য জমানো টাকা থেকে পূর্ণিমার জন্য সোনার হার কিনে আনে নিখিল। পাড়া-প্রতিবেশী, গ্রামের মানুষ আসে। খেয়ে সবাই খুশি। পলাশের বউ শিউলির মতোই দেখতে। পলাশের সাথে খুব মানাবে। এর মাঝে কেউ কেউ বকুলের বিয়ের কথা তোলে। পলাশ বলে-
-কবে বিয়ে হবে ঠিক নেই। আমি আর কত দিন অপেক্ষা করবো?
আরো পড়ুন: আঁধারে আলো || ২য় পর্ব
পলাশের শ্বশুর বাড়ির সবাই চলে গেলেও রয়ে গেছে পূর্ণিমার দাদা। নাম সনৎ। স্বাস্থ্যবান পুরুষ। চোখে চোখ পড়লেই বুঝতে পারে সনৎ এর চোখ লেপ্টে আছে বকুলের শরীরে। কারণে-অকারণে বকুলের কাছে এসে দাঁড়ায়। কথা বলতে চায় বকুলের সাথে। সন্ধ্যায় এখন তাসের আড্ডা না বসলেও বিন্দুমাত্র অবসর নেই বকুলের। সকাল থেকে শুরু।চা, পরোটা, তরকারি বানাও। নতুন বউ নতুন কুটুম। ভালমন্দ খাওয়াতে হয়। বাজার থেকে মাছ, মাংস, খাসি কিনে নিয়ে এসে রান্না ঘরের বারান্দায় রাখে পলাশ। বিকালে খেজুর গুড়ের রসের সাথে গরম গরম পিঠা। পূর্ণিমা এ বাড়িতে এসেছে এক মাসের বেশি হয়ে গেছে। অথচ সে ঘর থেকে বের হয় না। খাবার সময় রান্না ঘরে এসে খাবার নিয়ে যায় আর, খাবার পরে থালাগুলো রেখে যায়। সেই ছোট বেলা থেকে এই সংসারকে আঁকড়ে ধরে আছে বকুল। এতদিন এই তিনজনের সংসারের একত্রে অধিপতি ছিল সে নিজে। আর আজ! এই সংসারে তার নিজেকে অপাংতেয় বলে মনে হয় বকুলের।
পৌষ মাসের প্রথমেই এবার শীতের দাপট। বিকাল হতে না হতেই ধোঁয়ার মত কুয়াশা চারিদিক। বিদ্যুৎ থাকলে দূর থেকে বাতির মিটমিট আলো চোখে পড়ে। ঘরের উঠোনে উঠোনে খড়-কুটো, ছেঁড়া কাগজ দিয়ে আগুন জ্বলে। ধোঁয়ার সাথে কুয়াশা মিশে আরো আবছায়া হয়ে উঠে চারিদিক। নতুন সিনেমা এসেছে বাজারের সিনেমা হলে। নাম চাঁদনী, নতুন নায়ক-নায়িকা । শাবনাজ-নাইম। কি সুন্দর দেখতে! সবার মুখে মুখে এই সিনেমার গল্প। একে একে সবাই গিয়ে দেখে এসেছে। পাড়ার মোড়ে রেডিওতে, মাইকে মাইকে গান বাজে- “বন্ধুর বাঁশি বাজে রে আমার কানে কানে। —-ও আমার জান, তোর বাঁশি যেন জাদু জানে।
–কাঞ্চা রে কাঞ্চা আমি তোর কাঞ্চী, পিরিতে পাগল হয়েছি।” পলাশ, সনৎ আর পুর্ণিমাকে সাথে নিয়ে গিয়েছিল সিনেমা দেখতে। নাইট শো। রাত ৮.৩০ থেকে ১১.৩০। সিনেমা অর্ধেক শেষ না হতেই চলে এসেছে সনৎ। তার জ্বর। বকুলের কাছে গিয়ে আদা চা চেয়ে এসেছে। হাতের রান্না থামিয়ে রেখে চা নিয়ে ঘরে যায় বকুল। লেপ গায়ে শুয়ে ছিল সনৎ। চায়ের কাপটা তার কাছে এগিয়ে দিতে বলে সে। আর তখনই
এক ধাক্কায় বকুলকে বিছানায় ফেলে দেয় সনৎ। মুখের ভিতর ওড়নাটা গুঁজে দেয়। দরজা আটকিয়ে বাতি নিভিয়ে দেয়।
-তোমার বাবা আসার অনেক দেরী। শীতের রাত। এদিকে কেউ আসবে না। কেউ জানবে না। তোমাকে আমার খুবই পছন্দ। বিয়ে করব তোমাকে। বিয়ের আগেই তাই ।
অনুনয় বিনয়, ভিক্ষা-সব বিফলে যায় বকুলের। জামাটা ছিড়ে যায়। ক্ষত-বিক্ষত হয় শরীর। ঠোঁট দিয়ে রক্ত ঝড়ে। গালে কামড়ের দাগ বসে। লাঞ্ছিত হয় তার নারীত্ব। হারিয়ে যায় তার সতীত্ব। —