ব্রেক্সিট বিষয়ে পার্লামেন্ট ভোটাভুটিতে এখন পর্যন্ত ৬ বার হেরেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি বাধ্য হয়েই পার্লামেন্ট স্থগিত করেছেন। এজন্য হয়েছেন তুমুল সমালোচনার শিকার। পেয়েছেন ব্রিটিশ গণতন্ত্রের হত্যাকারীর খেতাব। বুধবার তার পার্লামেন্ট স্থগিত করার সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করেছে একটি স্কটিশ আদালত। এখন ব্রেক্সিট যদি দিতেই চান পরিবির্তীত প্রেক্ষাপটে বরিসের হাতে রয়েছে ৪টি বিকল্প। এগুলোর সবগুলোই তিক্ত। কোনোটা বরিসের জন্য আবার কোনোটা ব্রিটিশ রাজনীতি আর জনসাধারণের জন্য। বিবিসি
বরিস এখন চাইলে পদত্যাগ করে নিজের মান নিয়ে কেটে পরতে পারেন। কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একটি ‘সম্মানজনক’ নতুন চুক্তি করতে পারেন। নিজের কট্টর অবস্থান থেকে সরে এসে ব্রেক্সিট সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করতে পারেন। আথবা সকল রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার ভুলে সবকিছু ছাপিয়ে ৩১ আগস্ট ইউরোপ ছাড়ার জেদ বজায় রাখতে পারেন। সম্প্রতি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি খাদে পড়ে মরে যাবেন’ তবু ব্রেক্সিটের সময় বাড়াতে চাইবেন না। এজন্য তিনি পদত্যাগ করে সময়সীমা বাড়ানোর দায়িত্ব অন্য কারো উপরে চাপিয়ে দিতে বলতে পারেন, আমি অন্তত সময় বাড়াইনি। এখন যদিও কনজারভেটিভ পার্টি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে, এমনিতেও হয়তো সাধারণ নির্বাচন দিতে হবে তাদের। জনসন পদত্যাগ করলে, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী যিনি হবেন হাউজ অব কমন্সের মাধ্যমে ইইউ এর কাছে সময় বাড়ানোর আবেদন জানানোর জন্য ১৪দিন সময় হাতে পাবেন। সেটা হতে পারেন জেরেমি করবিন বা কেন ক্লার্ক।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলছেন, পার্লামেন্ট বন্ধ থাকার সময়টিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছানোর কাজে ব্যবহার করবে সরকার। একই সাথে চুক্তি ছাড়া ইইউ ত্যাগের বিষয়েও প্রস্তুতি নেয়া হবে। কিন্তু ইইউ বলছে, একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ব্রিটিশ সরকারের তেমন কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। কয়েক দিন আগে পদত্যাগ করা কর্মসংস্থান মন্ত্রী অ্যাম্বার র্যুড জানিয়েছেন, বরিস জনসন কোনো চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন, এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাডকার সোমবার ইইউ প্রশ্নে তার অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। জনসনকে তিনি জানিয়েছেন, যেকোনো বিকল্পের জন্য ইইউ তার পথ খোলা রেখেছে, কিন্তু সেই বিকল্প হতে হবে বাস্তবসম্মত, আইনসম্মত এবং কার্যকর। এখনো ইইউ তেমন পদক্ষেপ দেখতে পায়নি’।
৩১শে অক্টোবরের মধ্যে একটি চুক্তি না হলে, ইইউ ত্যাগ করা ঠেকাতে পার্লামেন্টে একটি বিল পাস হয়েছে। তার মানে হচ্ছে, ব্রেক্সিটের জন্য সময় বাড়ানোর জন্য এখন দেশটির এমপিরা আইনগতভাবে বাধ্য। কিন্তু সরকার এই আইন সরাসরি অমান্য না করলেও, ইতিমধ্যেই আইনের সীমা নির্ধারণের বিষয়ে কঠিন ভাষায় বক্তব্য দিচ্ছে। চ্যান্সেলর সাজিদ জাভিদ বলেছেন, সরকার ইইউ এর কাছে সময় চাইবে না এবং ৩১ শে অক্টোবরের মধ্যেই ব্রেক্সিট হবে। জনসন নিজে সব সময় বলে এসেছেন, ৩১ শে অক্টোবরের মধ্যেই ব্রেক্সিট হবে। তবে তিনি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা না নিলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে, এমন হুঁশিয়ারিও তাকে দেয়া হয়েছে।