বাংলাদেশ গেমসে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়দের অলিম্পিক গেমসের জন্য উপযুক্ত হয়ে গড়ে ওঠার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ গেমসে অংশ নেওয়া খেলোয়াড়দের অলিম্পিক গেমসের জন্য তৈরি করতে চাই।’
বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টা ৪২ মিনিটে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমসের উদ্বোধন করার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
খেলয়াড়দের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিজেদের প্রস্তুত করবেন, যেন আগামীতে অলিম্পিক গেমস বিশ্বের যেখানেই হবে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সেখানে অংশ নেওয়ার মতো নিজেদের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে পারি।’ তিনি আরও বলেন,‘ভবিষ্যতে আমরা সেভাবে কয়েকটি গেমস ঠিক করে নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক মানের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করবো।’
বিকেল সাড়ে ৫টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হয় বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেন পৌনে ৭টায়। মার্চপাস্টের পর শপথবাক্য পাঠ করান তীরন্দাজ রোমান সানা। ৩১টি ইভেন্টের খেলোয়াড়রা প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানান। এই সময় প্রধানমন্ত্রী হাত নেড়ে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহেদ রেজা। এরপর বিওএ সভাপতি ও গেমসের সাংগঠনিক কমিটির নির্বাহী চেয়ারম্যান জেনারেল আজিজ আহমেদ শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
আনুষ্ঠানিকতার পরেই উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরাসরি মাঠে আসতে না পারা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বলেন, ‘২০২০ সালে করোনার কারণে সবকিছুতেই একটু সমস্যা দেখা দিয়েছে। আজকে আমার কাছে সবেচেয়ে খারাপ লাগছে করোনার কারণে, নিজে উপস্থিত থেকে সবাইকে দেখতে পারলাম না। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলবো এই কথা দিয়েছিলাম; বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল। এ কারণে আজ আমি ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকছি। আমাকে এভাবেই উদ্বোধন করতে হচ্ছে। আসলে আমি খেলাধুলা নিজেও পছন্দ করি, যেকোনো খেলা সবসময় আমি নিজে মাঠে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করেছি অতীতে। কিন্তু এবার পারলাম না আমার জন্য খুব দুঃখজনক।’
সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খেলায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৩১টা ডিসিপ্লিনে যে খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হবে, প্রত্যেকে আপনারা স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলবেন। কারণ আমি চাই না, কেউ করোনায় আক্রান্ত হন। আয়োজক অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনকে আমি বলবো, আপনারা এই বিষয়টা বিশেষভাবে লক্ষ রাখবেন, যেন সবাই স্বাস্থ্য সুরক্ষাটা মেনে চলতে পারে।‘
প্রসঙ্গত, ৮ বছর আগে ২০১৭ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশ গেমস হয়েছিল। এর মধ্যে দিয়ে ভাঙলো দীর্ঘদিনের অচলায়াতন। আজ থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশ গেমসের এই আসর চলবে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত।
এক যোগে আট বিভাগের ২৯টি ভেন্যুতে চলবে খেলা। ৩১টি খেলায় মোট ইভেন্ট সংখ্যা ৩৭৮টি। ১২৭১টি পদকের জন্য লড়বেন প্রায় ৮ হাজার খেলোয়াড়।
তবে কিছু কিছু খেলা শুরু হয়ে গেছে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই। মেয়েদের ক্রিকেট চালু হয়ে শেষ হয়ে গেলেও চলছে পুরুষ ও মহিলা ফুটবল। আর গতকাল শুরু হয়েছে হকি ও ফেন্সিং।
তথ্য: বাসস