মহামারি করোনা রোধে টিকার পূর্ণাঙ্গ ডোজ নেওয়ার পরও অনেকেই করোনার ডেল্টা এবং লাম্বডা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে।
সত্যটা হলো, করোনার টিকাগুলো কখনই ভাইরাসটির বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ সুরক্ষা দেয় না। এগুলো অ্যান্টিবডি তৈরি করে, যা ভাইরাস শরীরের সংস্পর্শে আসার পর তার সঙ্গে লড়াই করতে সহায়তা করে। কিছু টিকা করোনার নতুন ধরনগুলোর বিরুদ্ধে বেশ কার্যকর, বাকিগুলো খুব বেশি সুরক্ষা দিতে পারে না।
টিকা দেওয়ার পরে কার শরীরে বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে বা কারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে, তা বলা বেশ কঠিন। তবে এ বিষয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশ কয়েকটি কারণের ওপর নির্ভর করে। তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো, আপনার বয়স।
আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত এ গবেষণা অনুসারে, বয়স্ক ব্যক্তিদের তুলনায় কম বয়সীদের শরীরে অ্যান্টিবডি বেশি রয়েছে। ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির গবেষকরা তাদের এই গবেষণা ৫০ জন অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে সম্পন্ন করেছেন। অংশগ্রহণকারীদের দুই সপ্তাহ আগে ফাইজারের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়। গবেষকরা অংশগ্রহণকারীদের তাদের বয়স অনুসারে ভাগ করেন এবং করোনাভাইরাসের মূল স্ট্রেইন ও নতুন স্ট্রেইন থেকে সৃষ্ট অ্যান্টিবডিগুলোর জন্য তাদের রক্তের সিরাম পরীক্ষা করেন।
গবেষণার ফল বলছে, যাদের বয়স ২০-এর কোঠায় তাদের অ্যান্টিবডি রেসপন্স ৭ গুণ বেশি শক্তিশালী, ৭০ বছরের বেশি বয়সি ব্যক্তিদের তুলনায়। ২০ এবং ৭০-এর কোঠার ব্যক্তিদের মধ্যে অ্যান্টিবডির ব্যবধান ব্যাপক।
গবেষকরা বলেন, বয়স্কদের মধ্যে অ্যান্টিবডি রেসপন্স লেভেল কম হলেও, এখনো টিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুরক্ষিত থাকা এবং ভাইরাসটির জটিলতার ঝুঁকি কমানোর একমাত্র উপায় টিকাদান। করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর শরীরে যে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তার তুলনায় বয়স্কদের টিকার অ্যান্টিবডি বেশি শক্তিশালী।
গবেষকদের মতে, বয়স্কদের জন্য টিকা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং তাদের বেশি সুরক্ষা প্রয়োজন।