জাহানারা বুলা।
আমার এখন অন্য রকম জীবন,
অন্য দাওয়ায় ঘর, ঘরকন্না, বর।
উঠোন ভরা সেদ্ধ ধানের ঘ্রান,
পায়ে পায়ে ঠেলছি রোদের বান।
তবুও, তোকে মনে পড়ে ভীষণ।
যেই বাড়িটায় জন্মেছিলাম,
যেই বাড়িটায় বড় হলাম,
যেই পাড়াতে তোকে পেলাম,
সেইখানে আর যাই না আমি এখন।
এও জানি না কেমন আছে আমার মায়ের মন।
কি করে যাই বল,
সেইখানে যে তোদের বাড়ি তিনটা বাড়ির পর,
লুকিয়ে যে তুই চিঠি দিতিস জেনে গেছে বাড়ির লোকে,
আমার রুদ্র বর।
আমি কি আর ভুলে গেছি তোকে,
ভালোবাসা কমে গেছে বুঝি,
আকাশ খানা মেঘলা হলে মনের দাওয়ায় কাকে তবে খুঁজি?
কাকে খুঁজি শাপলা জলে শালুক তুলি যখন,
কাকে খুঁজি চালতা, বরই, ধনে পাতায় ভর্তা বানাই যখন?
তুইও নাকি ব্যস্ত ভীষণ জমিজিরাত নিয়ে,
বিঘা বিঘা জমি নাকি করচা আর দাগ দিয়ে,
গাঁয়ের লোকে কদর করে ভারী,
ভাত ভর্তি হাড়ি?
জালে পড়ে বিরাট বিরাট মাছ,
একশো কুড়ি আম-কাঠালের গাছ,
এখন তো আর আগের দিনটা নাই,
পাড়াপড়শি সবাই এখন ভাই! হঠাৎ এসব কেমন করে পেলি,
ছিলো না তো আমার যখন ছিলি,
তুই তো তবে বাঁধতে পারিস ঘর, উঠে উঠুক আমার মনে ঝড়!
জীবনটা তো নদীর মতই চলে,
মাঝিও সেই ছলে বইঠা দিয়ে বুকটা ঢেউয়ের কাটে আমার জীবন তোর বিহনে না হয় কাটুক ঢেউয়ের পাটে।