নজরুল মিন্টো,
খাদ্যরসিক বাঙালির পরিচয় ‘ভাতে মাছে’। অনেকে বলেন, এ পরিচয়ে গৌরব নেই; বরং এটা আমাদের প্রতি এক ধরনের বদনাম। অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী মনে করতে পারে বাঙালিরা কেবল ভাতই খায়। অথচ বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে আছে পিঠা। শুধু খাবার হিসেবেই নয় বরং লোকজ ঐতিহ্য এবং নারীসমাজের শিল্প নৈপুণ্যের স্মারক রূপেও পিঠা বিবেচিত হয়ে আসছে। লোকজ এই ঐতিহ্যকে প্রবাসীদের কাছে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার প্রয়াসে ‘টরন্টো পিঠা উৎসব ও পিঠা প্রতিযোগিতা ২০১৯’ এর আয়োজন করা হয়েছে।
আগামী রোববার (২৪ নভেম্বর ২০১৯) অনুষ্ঠিতব্য এ পিঠা উৎসবকে কেন্দ্র করে ঐতিহ্যের উচ্ছ্বাসে মুখরিত টরন্টোর বাঙালি সমাজ। চলছে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের নানান প্রস্তুতি। পুরো কমিউনিটি এখন অপেক্ষমান কে হবেন এ উৎসবের সেরা পিঠা শিল্পী? কে গড়বেন নতুন এ ইতিহাস?
কানাডার প্রথম বাংলা মিডিয়া ‘দেশে বিদেশে’ গত ২৮ বছর ধরে উত্তর আমেরিকায় প্রতিভা অন্বেষণের অগ্রদূত হিসেবে গৌরবময় ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রবাসী লেখকদের পুরষ্কার প্রদান, শিশুকিশোরদের মেধা বিকাশে বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা, প্রবাসী মহিলাদের উৎসাহ প্রদানের জন্য রাঁধুনি প্রতিযোগিতা এবং সর্বশেষ ‘পিঠা প্রতিযোগিতা ২০১৯’ এর আয়োজক হিসেবে এক ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছে ‘দেশে বিদেশে’। যারা পিঠা তৈরি করেন তাদের শিল্পকর্মকে আমরা স্বীকৃতি দিতে চাই; এঁদেরকে আমরা ‘পিঠা শিল্পী’ হিসেবে আখ্যায়িত করতে চাই। এসব শিল্পীরাই একদিন বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করবেন এ স্বপ্ন আমরা দেখছি।
ইতিমধ্যে ‘টরন্টো পিঠা উৎসব ও পিঠা প্রতিযোগিতা’ নিয়ে নগরীর ঘরে ঘরে যে ধরনের সাড়া পড়েছে তাতে আমরা নিশ্চিত জমজমাট হবে এ পিঠার আসর। সর্বস্তরের মানুষের মাঝে যে স্বতঃস্ফূর্ততা দেখা যাচ্ছে তাতে উৎসবস্থল থাকবে লোকে লোকারণ্য। এ পর্যন্ত শিল্পীরা যেসব পিঠা নিয়ে উৎসবে আসছেন সেগুলোর নাম শুনলে পাঠকদের জিভেও জল আসবে। এসব পিঠার স্বাদ যেমন ভিন্ন, তেমনি নামেও রয়েছে বৈচিত্র্য। একটু শুনেই দেখুন না! নকশি পিঠা, চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা, রস পিঠা, দোল পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, পাকান, ডিম চিতই পিঠা, আন্দসা, কাটা পিঠা, ছিটা পিঠা, জামদানি পিঠা, গোকুল পিঠা, চুটকি পিঠা, মুঠি পিঠা, হাঁড়ি পিঠা, বিবিখানা, চাপড়ি পিঠা, পাতা পিঠা, চুটকি, চাঁদ পাকান, পানতোয়া, সুন্দরী পাকান, সরভাজা, পুলি, মালপোয়া, মেড়া পিঠা, মালাই, গোলাপ ফুল, রসফুল, কুশলি, ক্ষীরকুলি, লবঙ্গ লতিকা, ঝালপোয়া, ঝুরি, ঝিনুক, সূর্যমুখী, নারকেলি, সিদ্ধপুলি, ভাজা পুলি, দুধরাজ, চোঙা পিঠা, পোয়া পিঠা, গুলি পিঠা, মই পিঠা, ঝাল পিঠাসহ আরো কত কি!
মনে রাখার মতো এ উৎসবে আপনিও অংশগ্রহণ করুন।
এ মহতী উদ্যোগকে সাফল্যমন্ডিত করতে যারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এসেছেন তারা হলেন: খ্যাতনামা ব্যারিষ্টার ওমর জাহিদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ি ইকবাল রুশদ, বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা নুরুল ইসলাম আজাদ, বিশিষ্ট মর্টগেজ এজেন্ট আশাবউদ্দিন, মূলধারার রাজনীতিক মহসিন ভূঁইয়া, বিশিষ্ট ফার্মাসিষ্ট কানন বড়ুয়া, বিশিষ্ট রিয়েলটর মনির ইসলাম, বিশিষ্ট রিয়েলটর রবিন ইসলাম, বিশিষ্ট রিয়েলটর ফারাহ খান, বিশিষ্ট মর্টগেজ এজেন্ট আনিসুর রহমান, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সভাপতি তমাল দে, বিশিষ্ট একাউন্টেন্ট মনোজ বসাক, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জহির উদ্দিন, ট্র্যাভেল ব্যবসায়ি মুজিবুর রহমান।
যেসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পুরস্কার দিচ্ছেন তারা হলেন: আজাদ কিচেন, মারহাবা, সী ফ্যাশন, কানিজ বুটিক, রেডহট তান্দুরি, এটিএন, রিয়েলটর এবাদুর রহমান, কমিউনিটি নেতা হোসেন আহমেদ, বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা শায়লা রহমান।
রাফেল ড্র পুরষ্কার দিচ্ছেন কানাডা-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাঈনুল খান।
আমরা সকলের কাছে কৃতজ্ঞ।
‘টরন্টো পিঠা উৎসব ও পিঠা প্রতিযোগিতা ২০১৯’
স্থান: রয়েল কানাডিয়ান লিজিওন হল (৯ ডয়েজ রোড), টরন্টো
তারিখ: ২৪ নভেম্বর, ২০১৯
সময়: বিকেল ৪টা।
প্রধান অতিথি: প্রখ্যাত কবি আসাদ চৌধুরি
বিশেষ অতিথি: ডলি বেগম এমপিপি
কোনো প্রবেশ মূল্য নেই।
4400