করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্বের অর্থনীতিতে যখন বিপর্যয়কর অবস্থায় তখন ঠিকই নিজেদের সম্পদ বাড়িয়ে নিয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী। তবে এই সময় দারিদ্র মানুষের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুণ। সোমবার (১৭ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম।
সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলন শুরুর আগে এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি একথা জানায়।
অক্সফাম জানায়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী তাদের সম্পদের পরিমাণ দ্বিগুন বৃদ্ধি করেছেন। তাদের সম্পদ ৭০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পেয়ে দেড় ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছে গেছে। অথ্যাৎ প্রতিদিন গড়ে তাদের সম্পদ বেড়েছে ১৩০ কোটি ডলার করে।
সংস্থাটি জানায়, মহামারি শুরুর পর থেকেই বিশ্ববাসী মারাত্মক অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু করোনাকালে শীর্ষ ১০ ধনীর সম্পদ যে হারে বেড়েছে গত বছরে ১৪ বছরে কখনো তেমনটা আর হয়নি।
অর্থনৈতিক অসমতার কারণে স্বাস্থ্য সেবায় সংকট দেখা দিচ্ছে। একই সঙ্গে ক্ষুধা, লিঙ্গ বৈষম্যতা এবং সহিংসতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রতিদিন বিশ্বব্যাপী ২১ হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এছাড়াও মহামারির কারণে ১৬ কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে। একই সঙ্গে অসমতা বেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে অশ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘু জাতিসত্তার মানুষ ও নারীরা।
অক্সফামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড্যানি শ্রীস্কন্দরাজাহ বলেন, ‘এই বছর যা ঘটছে তা কখনো ঘটেনি। মহামারি শুরুর পর প্রায় প্রতিদিনই একজন নতুন বিলিয়নেয়ার তৈরি হয়েছে। তবে লকডাউন, আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাণিজ্য সীমিত হওয়া, পর্যটন বন্ধ থাকায় বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৯৯ শতাংশ মানুষের অবস্থা দিন দিন খারাপ হয়েছে। যার ফলে ১৬০ মিলিয়ন মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্বস সাময়ীকির তৈরি করা বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তালিকায় রয়েছেন টেসলা ও স্পেস এক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক, আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস, গুগলের প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিন, ফেসবুকের মার্ক জাকারবার্গ, মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস, একই প্রতিষ্ঠানের সাবেক প্রধান নির্বাহী স্টিভ বলমার, ওরাকলের সাবেক প্রধান নির্বাহী ল্যারি এলিসন, মার্কিন বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট, ফ্রান্সের ফ্যাশন জায়ান্ট এলভিএমএইচের প্রধান বার্নার্ড আর্নল্ট।
সূত্র: ফ্রান্স২৪