জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলর সবধরণের ক্রিকেট থেকে সাড়ে তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন। আইসিসির দুর্নীতি দমনের চারটি আলাদা ধারা ও আইসিসি অ্যান্টি-ডোপিং কোডের একটি আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ স্বীকার করার পর তার শাস্তি দিয়েছে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় আইসিসি এক বিজ্ঞপ্তিতে টেইলরকে নিষিদ্ধ করে।
গত সোমবার নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে চার পৃষ্ঠার দীর্ঘ বিবৃতি দেন টেইলর। বিস্তারিত পোস্টে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব ও তা লুকানোর পুরো ঘটনা বর্ণনা করেন টেইলর।
টেইলর দাবি করেছেন, স্পন্সরশিপ ও জিম্বাবুয়েতে একটি টি-টোয়েন্টি লিগ চালু করার বিষয়ে আলোচনার জন্য ২০১৯ সালের অক্টোবরে তাকে ভারতে ডেকেছিল এক ভারতীয় ব্যবসায়ী। আলোচনা শেষে রাতের পার্টিতে নিষিদ্ধ মাদক হিরোইন সেবন করিয়ে ভিডিও ধারণ করে তারা। এরপর শুরু হয় ব্ল্যাকমেইলিং।
আন্তর্জাতিক ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয় এবং ভারতে আসার জন্য ১৫,০০০ মার্কিন ডলার দেওয়া হয়। যা ছিল স্পট ফিক্সিং করার জন্য ডিপোজিট। কাজ শেষ হলে আরও ২০ হাজার ডলার পাওয়া যাবার কথা জানানো হয় টেইলরকে।
ওই সময়ে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট থেকে ৬ মাস কোন অর্থ পাচ্ছিলেন না টেইলর। তার রুমে মোট ৬ জন ছিলেন যারা স্পট ফিক্সিংয়ের বিস্তারিত তুলে ধরেন। ওই সময়ে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়।
ব্ল্যাকমেইলের শিকার হওয়ায় স্পট ফিক্সিং অ্যাপ্রোচের পরও সেটা লুকিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। যদিও তার দাবি, তিনি কখনো ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত হননি। টেইলর আরও জানান, মাদক গ্রহণের কারণে তাকে পুনর্বাসন কেন্দ্রেও যেতে হয়েছিল। দেশে যাওয়ার পর ভারতীয় ব্যবসায়ী টেইলরের কাছে টাকা ফেরত চান। যা টেইলর দিতে পারেননি বা দেননি।
৪ মাস পর আইসিসির কাছে এই ঘটনা রিপোর্ট করেন টেইলর। পাশাপাশি পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবকেও জানান। কিন্তু দেরিতে রিপোর্ট করায় আইসিসি তার ঘটনা ভালোভাবে নেয়নি। নিয়ম অনুযায়ী ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
আইসিসি তার নিষেধাজ্ঞার বক্তব্যে লিখেছে,‘ জিম্বাবুয়ের প্রাক্তন অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলর আইসিসির দুর্নীতি দমন কোডের চারটি এবং আলাদাভাবে, আইসিসি অ্যান্টি-ডোপিং কোডের একটি অভিযোগ লঙ্ঘনের জন্য স্বীকার করায় সাড়ে তিন বছরের জন্য সমস্ত ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হয়েছেন।’
৩৫ বছর বয়সী টেইলর ২০৫ ওয়ানডে, ৩৪ টেস্ট ও ৪৫ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া এ ক্রিকেটার ২০২৫ সালের ২৮ জুলাই থেকে আবার ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন।