ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাশুল গুনতে শুরু করেছে বিশ্ব। যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে পশ্চিম ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে।
অয়েল প্রাইস ডটকমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যারল প্রতি অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ১১৫ দশমিক ৬৮ ডলার। গত আট বছরের মধ্যে এটাই ছিলো তেলের সর্বোচ্চ দাম। অথচ গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণের আগ মুহূর্তেও তেলের দাম ব্যারল প্রতি ৯৯ ডলারের নিচে ছিল।
চলতি বছর তেলের দাম ১৫০ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। ইউরোপে গ্যাসের বড় সরবরাহকারী দেশ হচ্ছে রাশিয়া। যুদ্ধ শুরুর পর এই অঞ্চলের কয়েকটি দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বেড়েছে ৭০ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর প্রতি গ্যালন জ্বালানির দাম ছিল ২ দশমিক ৭৫ ডলার। শনিবার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য দাম বাড়িয়ে ৫ ডলার নির্ধারণ করেছে।
ইকোনোমিস্ট ইন্টিলিজেন্স ইউনিট নিজস্ব বিশ্লেষণে জানিয়েছে, চলতি বছর বিশ্ব অর্থনীতিতে ইউক্রেন যুদ্ধের যে প্রভাব পড়বে তা ৪০০ কোটি ডলারের সমান হবে।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান ডেভিড মালপাস বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সারা বিশ্বে যখন মন্দ সময় যাচ্ছে তখন ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়েছে, এর মধ্যে আবার মুদ্রাস্ফিতি বাড়তে শুরু করেছে।
ম্যালপাস জানান, যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব ইউক্রেনের সীমানা ছাড়িয়ে প্রসারিত হয়েছে এবং বিশেষ করে বিশ্বব্যাপী জ্বালানির দাম বৃদ্ধি ‘দরিদ্রদের সবচেয়ে বেশি আঘাত করেছে, যেমন মুদ্রাস্ফীতি করে।’ যুদ্ধের কারণে খাদ্যের দামও বেড়েছে এবং ‘দরিদ্র দেশগুলির মানুষের জন্য একটি অত্যন্ত বাস্তব গুরুতর সমস্যা।’
তিনি জানান, রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয়ই বড় খাদ্য উৎপাদক। এসএন্ডপি গ্লোবাল প্ল্যাটস অনুসারে, ইউক্রেন বিশ্বের বৃহত্তম সূর্যমুখী তেলের উৎপাদক এবং রাশিয়া রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। বিশ্বের ৬০ শতাংশ সূর্যমুখী তেল আসে এই দুটি দেশ থেকে। যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার কারণে দুই দেশ থেকেই তেল রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।
জেপি মরগানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় ২৯ শতাংশ গত রপ্তানি করে রাশিয়া ও ইউক্রেন। শুক্রবার শিকাগো ফিউচার এক্সচেঞ্জে গমের দাম ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড করা হয়েছে।