ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর তেলের সংকট নিরসনে সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে আলাপ করতে চেয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে সৌদি যুবরাজ মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচেনায় বসার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এমন তথ্য জানিয়েছে।
এক মার্কিন কর্মকর্তা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেছেন, ‘একটি ফোন কলের কিছু প্রত্যাশা ছিল, কিন্তু তা হয়নি। এটি ছিল (সৌদি তেলের) ছিপি খোলার অংশ।’
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মস্কো থেকে পর্যাপ্ত তেল ও গ্যাস আমদানি করতো, কিন্তু বাইডেন মঙ্গলবার রাশিয়া থেকে তেল ও গ্যাস আমদানি নিষিদ্ধ করেছেন। এর জবাব রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকটি পণ্য রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছেন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে মার্কিন গ্যাসের দাম বেড়েছে। মঙ্গলবার বাইডেনের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণার দিনে এই দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। সংকট সামাল দিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ এখন বিকল্প সরবরাহকারীদের সন্ধান করছে।
রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার এক সপ্তাহ আগে সৌদি আরবকে তেলের উৎপাদন বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু রাশিয়া ও সৌদি আরব উভয়েই তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেকের সদস্য। রাশিয়ার বিপক্ষে গিয়ে তেল উৎপাদন বাড়ালে মস্কো ক্ষুব্ধ হতে পারে আশঙ্কায় ওয়াশিংটনের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল রিয়াদ।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস রোববার জানিয়েছে, বাইডেনের উপদেষ্টারা বসন্তে সৌদি আরব সফর নিয়ে আলোচনা করছেন যাতে দেশটিকে আরও তেল উৎপাদনে রাজি করানো যায়। এ ব্যাপারে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলতে চেয়েছিলেন বাইডেন। তবে যুবরাজ সেই ফোন কল প্রত্যাখ্যান করেন।
বাইডেনের সঙ্গে সৌদি যুবরাজ তথা দেশটির ডি ফ্যাক্টো শাসক মোহাম্মদ সালমানের মন কষাকষির বিষয়টি অবশ্য নতুন নয়। ২০২০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় বাইডেন সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড ও ইয়েমেনে হামলা ইস্যুতে সৌদি আরবে ‘ফরিয়া রাষ্ট্র’ বলেছিলেন। এমনকি বাইডেন হোয়াইট হাউজে প্রবেশের পর যুবরাজের মর্যাদা প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর পর্যায়ে নামিয়ে আনেন এবং প্রায় দুই বছরের মধ্যে তাদের দুজনের মধ্যে কোনো আলাপচারিতা হয়নি।
দুজনের মধ্যকার দূরত্ব কতোটা প্রকট তা গত সপ্তাহে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের এক মন্তব্যেই বোঝা গেছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম আটলান্টিক যুবরাজের কাছে জানতে চেয়েছিল, বাইডেন তাকে ভুল বুঝছেন কিনা। এর জবাবে যুবরাজ বলেছিলেন, ‘আমি এর পরোয়া করি না।’