-এবিএম সালেহ উদ্দীন
সারাদিন রোদ। ঝলমল আলোয় পূর্ণ সবুজ-শ্যামল মাঠ-ঘাট। অপরূপ শোভা ছড়ানো সবুজে আকীর্ণ বন-বনানী। নিটোল, নির্মেঘ আর নির্মল আকাশের নীচে সুন্দর জনপদ। সুপ্তালোকের কিরণাভায় পরিপূর্ণ কোলাহল। সূর্যের আভা ছড়ানো ঝলমল দিবাশেষে নির্মল বাতায়নের শান্ত-সন্ধ্যা। জ্যোৎস্না মাখা চাঁদের আলোয় মেতে থাকতো সবাই। প্রশান্ত হয়ে উঠতো মন। মুক্ত বাতায়নে বেজে উঠতো জীবনের গান। স্বাধীনতা ও মুক্তির গান।
কখনও দীর্ঘ বৃ¶ের ছায়ায় খুলে যেতো শান্তির দুয়ার। ক্লান্ত পথিক ওইসব দুয়ারে খুঁজে পেতো প্রেম নিসৃত ভালোবাসা। স্বপ্নের বিপুল সম্ভারে অবুঝ বালকের চোখেও ভাসতো সম্ভাবনার নতুন সূর্য।
শরতের শান্ত বিকাল কিংবা হেমন্তের পরশ সন্ধ্যায় সকল অবসাদ কেটে গিয়ে সবার মাঝে নেমে আসত ¯^স্তি। নেমে আসত শান্তিধারা।
কিন্তু আজ? পৃথিবী আছে। বর্ণময় চাকচিক্য আছে। কিন্তু আলো নেই। মানুষ আছে কিন্তু হৃদয় নেই। ¯^স্তি, শান্তি ও প্রেম-ভালোবাসা উঠে গেছে মানুষের ভেতর থেকে। দীপ্তালোকের আলো ঝলমলে পৃথিবীটা কেন যেন ক্রমাগত অন্ধকারের দিকেই ধাবমান !
মানুষের ভেতরকার প্রেম ও ভালোবাসায় মরিচিকা পড়ে গেছে। শান্তির পরিবর্তে অশান্তি নেমে এসেছে। স্বস্তির চেয়ে অস্বস্তি। কোমল মায়ার পরিবর্তে নিষ্ঠুরতা সর্বত্র ছেয়ে গেছে। পৃথিবী ও প্রকৃতিকে কলুষিত করবার দুষ্ট চক্রই এখন সবচেয়ে শক্তিশালী। আলোর বদলে ঘন আঁধারের কুন্ড-কুয়ায় নিপতিত শান্তিকামী মানুষ। নিষ্ঠুরতা, পাশবিকতা ও নৃশংসতায় পৃথিবী ছেয়ে আছে।
মানুষের প্রতি অমানবিক নির্দয় আচরণ রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকে শুরু করে সমাজের সর্বত্রই বিদ্যমান! একদিকে অবক্ষয়ী সমাজ অন্যদিকে পৃথিবীর ¶মতা লোভী দুষ্ট শাসকের স্বৈরাচারি ব্যবস্থাই যেন প্রায় প্রতিটি দেশে রাষ্ট্রপুঞ্জের মূলনীতি!
যার ফলে, সর্বত্র সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন হয়। নিরাপত্তাহীনতায় মানুষ ধুকে মরে।
এছাড়া প্রায় প্রতি বছর কোন না কোন দেশে মানব বিধ্বংসী যুদ্ধের ভয়াবহতায় পৃথিবীতে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারায়। অবুঝ পৃথিবী ছেয়ে গেছে ভয়-কালিমায়, ঘোর অমানিশায়! আর এই অমানিশা প্রকৃতির কাছ থেকে নয় (।) মানুষেরই কর্মের ফসল। এ যেন এক নিষ্ফলা বদ্ধভ‚মি (!) যেখানে উর্বরতা নেই।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কলংকিত ইতিহাসের কথা সবার জানা।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ যেদিন শুরু হয় সেদিনের সন্ধ্যায় নিজ দপ্তরের জানালার কাছে দাঁড়িয়ে ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লর্ড গ্রে বলেছিলেনÑ ‘ইউরোপের সর্বত্র আলো নিভে যাচ্ছে। আমাদের জীবনে আর সেই আলো জ্বলবে না’।
কী ভয়ংকর বীভৎস ছিল মানব বিধ্বংসী সেই যুদ্ধ। সাধারণ সৈনিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের মৃত্যু যন্ত্রণা যে কতটা বীভৎস রূপ ধারণ করতে পারে (!) সেইসব মৃত্যু আর ধ্বংস যজ্ঞের কথা কস্মিনকালেও ভুলে যাওয়ার নয়।
প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের মাত্র বিশ বছরের মাথায় পৃথিবীতে বিশ্ব মোড়লিপনার দৌড়াত্বে আবারও বিশ্বে যুদ্ধের দাবানল দেখা দিল।
কেননা দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধটি ছিল আরও ভয়ংকর ও আরও বীভৎস। তারকাযুদ্ধের মরণখেলা আর উন্মাদনায় পৃথিবীর দুষ্ট ও দুরাচার রাষ্ট্র নায়কদের শক্তির মহড়া ঘৃণিতভাবে প্রদর্শিত হয়েছিল। শুধু কি তাই? মানব বিধ্বংসী যুদ্ধ ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই মানুষের অকাল মৃত্যু হয়। যেদিকে তাকাই সবদিকেই মানবতার বিপর্যয়!
প্রতিহিংসা ও পাশবিকতার চরম বিপর্যয়ে একে অপরকে অবৈধ মারণাস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিহত করার উন্মাদনায় কত নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয়েছে তার কোন সঠিক পরিসংখান নেই। এতটুকু বলা যায় যে, শুধুমাত্র হিটলারের মাধ্যমেই ষাট লাখ নিরীহ মানুষ মারা গিয়েছিল। আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট আমেরিকা কর্তৃক নি¶িপ্ত মানব বিধ্বংসী পারমাণবিক বোমায় জাপানের হিরোশিমা-নাগাসাকির অবস্থা কী বীভৎস রূপ ধারণ করেছিল(?) নিরীহ মানুষের করুণ মৃত্যু হয়েছিল, সেই বীভৎস দৃশ্যের বর্ণনা দেয়া অসম্ভব। সেই মারণাস্ত্রের ভয়াবতা এতই তীব্র এতই ভয়ংকর ছিল যার শিকারে ল¶ ল¶ মানুষ মর্মান্তিতভাবে মৃত্যুবরণ করেছিল। বোমা হামলার শত বছর পর সেখানে বিষাক্ত তেজষ্ক্রিয়তা আজও বিদ্যমান। যার দূষিত বায়ুপ্রবাহে ওইসব স্থানে এখনও বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম নিচ্ছে!
পরমাণু বোমার ¶তি সম্পর্কে সেই সময়কার আণবিক বোমা তৈরির উদ্ভাবক একজন বিজ্ঞানী হতচকিতভাবে নিজেদের আবিষ্কার নিয়ে আক্ষেপ সূচক প্রশ্ন করেছিলেন “ক্রিমিনালদের হাতে কোন কিছুই নিরাপদ নয়। ক্রিমিনালদের হাতে সেসব পড়লে মহাসর্বনাশ হয়ে যেতে পারে।”
আসলে তো তাই, যুদ্ধবাজ মানুষ এবং সন্ত্রাসীরা রেডিয়াম ও কেমিক্যালের অর্থাৎ রাসায়নিক পরমাণুর অপপ্রয়োগে পৃথিবীতে অনেক অঘটন ঘটাতে পারে।
বিজ্ঞানের প্রতিটি আবিষ্কারের ভাল-মন্দ দিক আছে।
উদাহরণ স্বরূপ এখানে আমরা দিয়াশলাই’র ব্যবহারের কথা উল্লেখ করতে পারি।
দিয়াশলাই’র একটি কাঠি অতি ক্ষুদ্র। দিয়াশলাই’র ছোট্ট একটি কাঠি দিয়ে মহাসর্বনাশ ও বিপর্যয় ডেকে আনা যায়।
আবার তদ্বারা প্রদীপ জ্বালিয়ে জ্ঞানের আলোয় দীপ্যমান হয়ে মানুষ পৃথিবীকে আলোকিত করে তুলতে পারে।
অতএব কোন মন্দ কাজের জন্য না ভেবে দিয়াশলাইকে আমরা হচ্ছে শান্তির প্রতীকই মনে করি।
তার বিপরিতে এই বস্তুটির বারুদ-কাঠির অসৎ ব্যবহারের মাধ্যমে মানবজাতিকে ধ্বংসের দিকে ধাবিত করা হয়।
পরমাণু জনিত বিষাক্ত কেমিক্যাল কিংবা বারুদ সহযোগে দিয়াশলাইয়ের কাঠির মতো ছোট্ট পেন্সিল সাইজের শক্তিশালী বোমা দ্বারা প্রাসাদোপম সর্বোচ্চ বিল্ডিংও যে উড়িয়ে দেয়া যায় তাও ইতিপূর্বে প্রমাণিত হয়েছে। বিষাদময় সেপ্টেম্বর ১১’র যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক-এর সুদৃশ্য টুইন টাওয়ার ও তৎসংলগ্ন টাওয়ারসমূহ এবং কয়েক হাজার নিরীহ মানুষকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়ার ঘটনাও পৃথিবী দেখেছে। এসব ঘটনার সব কুফলসমূহ বিজ্ঞানের আবিষ্কারের অসৎ ব্যবহার। পৃথিবীকে আলোর পথ থেকে অন্ধকারে নিমুজ্জিত করবার অপচেষ্টা।
যে বিজ্ঞানের মাধ্যমে বিশ্ব উন্নত হয়েছে। মানুষ আলোর সভ্যতা ও আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়েছে।
সেই বিজ্ঞানকেই দুষ্টরা মানব বিধ্বংসের কাজে ব্যবহার করে বিশ্বের পরিবেশকে অবলীলায় দূষিত ও কলুষিত করে দিচ্ছে।
এভাবেই পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ সন্ত্রাস ও অবৈধ দখলদারদের হাতে বন্দী। এছাড়া অনেক দেশেই অবৈধ আগ্রাসন এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের ¯ৈ^রতান্ত্রিক ব্যবস্থা বহাল। উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া, সৌদী আরবসহ অনেক রাষ্ট্র তার নিকৃষ্টতম উদাহরণ। এসব দেশ ছাড়াও সৌদী সরকারের অমানবিক নির্মম আগ্রাসনে ইয়েমেন দেশটি তছনছ হয়ে গেছে। প্রাণ হারিয়েছে কয়েক ল¶ মানুষ।
মধ্যপ্রাচ্যের ¯ৈ^রাতান্ত্রিক দেশ ছাড়া ফিলিস্তিন দেশটি তো ইসরাইলী আগ্রাসনের একটি স্থায়ী বদ্ধভ‚মি।
ইসরাইলের ক্রমীগত আগ্রাসনে সভ্যতার লীলাভ‚মি ¯^াধীন ফিলিস্তিন এখন একটি মৃত্যু উপত্যকা। যেখানে ইসরাইলী দস্যুদের হাতে প্রতিনিয়ত শুধু মানুষ মরে।
তেমনই আফগানিস্তান, ভারত ও পাকিস্তানের সন্ত্রাসের আখড়া থেকে চোরাগোপ্তা হামলায় সাধারণ মানুষের প্রাণহানি ঘটছে নিত্যকার দৃশ্য!
শুধু কি তাই? বাংলাদেশেও মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে পালায় পালায়। গণ মানুষের ভেতরকার সুশীল চিন্তাধারার পরিবর্তে হীনমন্যতার কুটিল বিস্তার ও দুষ্টুচারিতায় ভরে গেছে সমাজ। প্রতিহিংসা পরায়ণতা নির্মম পাশবিকতা, নৃশংসতা ও নির্দয় পাশবিকতার উদ্ভব ঘটেছে। রাষ্ট্রীয় ¶মতাসীন মাধ্যমে এবং রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় নৃশংসতা নিপীড়ন নিত্যকার বিষয়। অন্যদিকে ধর্মীয় উন্মাদনা ও সামাজিক অব¶য়ের এক চরম পরিণতির দিকেই যেন ধাবমান।
এছাড়া সমগ্র বিশ্বের সব রকম বর্বরতা ও নৃশংসতাকে হার মানিয়ে বার্মায় ঘটেছে মানব সভ্যতার সবচেয়ে বড় বিপর্যয়? মিয়ানমারের সামরিক জান্তার নির্মম শিকার বার্মার রোহিঙ্গা জাতি। এক সময় যারা সভ্যতা এনে দিয়েছিল, আলাউলের সেই বার্মায় আরাকানের রাজসভা নেই। নেই কোথায় সভ্যতার ঐতিহ্যগাঁথা সুপ্রাচীন স্মৃতির নিদর্শন। সবকিছুই মিয়ানমারের অসভ্য বর্বর সরকার ও মগাদস্যুরা নিঃশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। বছরের পর বছর অকথ্য নির্যাতন আর অত্যাচার চালিয়ে ল¶ ল¶ রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যা করেছে। মিয়ানমারের বর্বরতা ও নৃশংসতা মধ্যযুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়ে দিয়েছে। মানব বিধ্বংসের সবচেয়ে নিকৃষ্টতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সমগ্র পৃথিবীর মানুষ ও সকল দেশ একযোগে বার্মার শাসককে ধিক্কার দিয়েছে। কিন্তু বর্মীয় বর্ররতা বিরামহীনভাবে চলছে। শুধুমাত্র নিন্দা আর সং¶ুব্ধতা প্রকাশ ব্যতিত বিশ্বের সুপার কিংবা কোন রাষ্ট্রই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এ্যাকশন নেয়নি। যেটি মানব সভ্যতার একটি গ্লানিকর দিক।
বার্মার হত দরিদ্র রোহিঙ্গা মানুষদের প্রতি যে নির্দয়ভাবে নৃশংস হত্যাকান্ড চালিয়েছে তা বিশ্বের সমস্ত বর্বরতাকে হার মানিয়ে দিয়েছে। কিভাবে সরকারি বাহিনীও লেলিয়ে দেয়া মগ দস্যুরা রাখাইন রাজ্য এবং রোহিঙ্গা বসতিকে সম্পূর্ণ বিলীন করে দেয়া হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের শত বছরের ভিটাবাড়ি ও জনপদ অগ্নিদগ্ধ করে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। নারী ও শিশুসহ সে দেশের ল¶ মানুষকে বর্বর নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করেছে।
পরিণামে বার্মার ল¶ ল¶ হতভাগ্য রোহিঙ্গা জীবন বাজি রেখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। পালাতে গিয়ে পথিমধ্যে অনেকেই মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারিয়েছে। নিজ মাতৃভ‚মি থেকে পাষন্ড দস্যু শাসকের অত্যাচার আর নিপীড়ন থেকে বাঁচতে গিয়ে কত নারী, শিশু এবং নানান বয়সের কত মানুষ হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছে তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই।
তেমনই আমাদের ¯^াধীনতার আগে পাকিস্তানি শাসকদের বর্বরতায় বাংলাদেশেও গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল। পাকিস্তানি শাসকদের চাপিয়ে বৈষম্য ও নিপীড়ন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে তারা আমাদের মাতৃভাষা বাংলার ¯^াধিকারের উপরও হস্ত¶েপ করতেও দ্বিধা করেনি। বাংলাভাষার ¯^াধীনতার জন্য যেমন আমাদের রক্ত দিতে হয়েছে। তেমনই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছিল তিরিশ লাখ মানুষ।
উন্নিশ শো একাত্তুরের পঁচিশে মার্চ তৎকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতা, নৃশংসতা ও নির্মম গণহত্যার বীভৎসতায় সমগ্র বিশ্বকে হতবাক করে দিয়েছিল।
পৃথিবীতে মানবতার বিপর্যয়ের এমন অসংখ্য দৃষ্টান্ত আছে।
সভ্যতার নিরিখে এখনও মানবভ‚বন অন্ধকারে নিমজ্জিত। যেখানে প্রতিনিয়ত মানবতা ভ‚লুন্ঠিত হয়। আলো নেই। ছায়া নেই!
এত ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও কিন্তু প্রতিবাদ আছে। আছে ঘুরে দাঁড়ানোর উদ্যম ও স্পৃহা। আর মানুষের মধ্যকার বৈষম্য দূরীকরন ও সকল প্রকার অসভ্যতার প্রতিরোধ করবার দৃষ্টান্তও মানুষই সৃষ্টি করে। সেখানেই মানুষের ¯^ার্থকতা।
কেননা সভ্যতার আলোয় মানবিকতার উন্নয়নে আমাদের ¯^প্ন আছে। প্রত্যাশা আছে। ¯^াধীনতা, মুক্তি ও অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় আছে। আরও আছে শান্তিময় জীবন যাপনের স্পৃহা। যার শক্তিতে মানুষ ফিরে পায় বেঁচে থাকার প্রভ‚ত অবলম্বন। পৃথিবীতে যেমন ধ্বংস আছে। তেমনই আছে তাকে র¶া করবার কার্যকরি ব্যবস্থা। মানুষের কাছে জ্ঞান আছে। আরও আছে আধুনিক বিজ্ঞানের অস্ত্র। আছে প্রেম, আছে ভালোবাসা।
মানুষ সতত ¯^প্ন দেখেÑ শান্তি ও ¯^স্তির।
মানুষ মুক্তি ও ¯^াধীনতার জন্য লড়াই করে।
জীবন যুদ্ধের মাধ্যমে জগৎ থেকে অন্ধকার সরিয়ে মানুষ আলোর পথ আবিষ্কার করে।
আশা-আকাক্সখার প্রতিফলন ঘটায়।
ইহাই মানুষের ¯^ভাবজাত প্রক্রিয়া। আমরাও তার ব্যতিক্রম নই। সভ্যতার নবতর আলোয় পৃথিবীর ক্রমমুক্তি, ¯^াধীনভাবে বেঁচে থাকার পথ খুঁজে পাওয়ার বাসনা সবার মাঝেই আছে। কেননা ইহাই মানুষের জন্মগত মৌলিক অধিকার। সেই অধিকারের উপর হস্ত¶েপ কারো কাম্য নয়।
¯^প্ন-উচ্ছ¡াস আর সম্ভাবনা নিয়েই মানুষ বেঁচে থাকে। মানুষের অধিকার যত বেশি বাস্তবায়ন ও বেগবান হবে পৃথিবী দূষণমুক্ত হবে। প্রকৃতি হবে আলোকিত। কেটে যাবে নৈরাশ্যের ঘন আঁধার। সভ্যতার বর্ণচ্ছটায় প্রকৃতি ধন্য হবে। মানবভ‚বন হয়ে উঠবে দ্যুতিময়। আর সেই প্রত্যাশায় সর্বদা আলোর সন্ধানে আমাদের অবিরাম কাঁদে মন।।
কবি ও প্রাবন্ধিক