-মানস ঘোষ
যেমনটা ধারনা করা হয়েছিলো দেশের রাজনীতির ঘটনা প্রবাহও চলছে তাই। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর নতুন সরকারের শপথ এবং তারপর একাদশ জতীয় সংসদের যাত্রা শুরু- সবটাই ছিলো নির্বিগ্ন। বলা চলে তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কোন বেগই পেতে হয়নি। বরং উল্টো রাজনীতিতে তার প্রতিপক্ষ আরো কোনঠাসা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কৌশলের কাছে আরেক দফা হেরে, ভরাডুবির পর ঘরে বাইরে প্রশ্নের মুখে পরে বিএনপি’র শীর্ষ নেতৃত্ব। ভাংগনের মুখে পরেছে ২০ দলীয় জোট। বিএনপি’র সঙ্গ ছাড়ার অপেক্ষায় তাদের দীর্ঘদিনের বন্ধু জামায়াত ইসলামী। আর ওদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে তড়িঘড়ি করে বিরোধীদলগুলোর শেষ মুর্হূতে করা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টেও চলছে টানাপোড়েন।
টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে জাতীর উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষনে আগামী ৫ বছর সরকারের কর্মকান্ড ক্যামন হবে, তার একটা ইংগিত দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। অধিকতর ক্লিন ইমেজের নতুন মুখ দিয়ে মন্ত্রীসভা গঠন করে প্রথম দিন থেকেই দূর্নীতির বিরূদ্ধে সোচ্চার হন তিনি। একই সঙ্গে থাকে মাদকের বিরূদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা। তার এই আওয়াজের পরপরই নড়েচড়ে বসে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগ। দূর্নীতিবাজদের ধরতে তৎপর হয় দূর্নীতি দমন কমিশন, দুদক। আর ওদিকে ইয়াবা কারবারিদের খুজতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত এলাকায় শুরু হয় চিরুনী অভিযান। একই সঙ্গে চলতে থাকে ক্রসফায়ার, যার বাংলাদেশী নাম বন্দুকযুদ্ধ। এটা স্পষ্ট যে এই মেয়াদে অন্তত্য এই দুই ইসূত্যে দৃশ্যমান কোন অর্জন চায় সরকার। আর তাই শুরু থেকে এই তোড়জোড়।
তবে প্রায় অনভিজ্ঞ নতুন মুখের এই মন্ত্রিসভার সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জকে কতটা সফল করতে পারবেন এনিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুন এবং চট্টগ্রামে বিমানের ফ্লাইট ছিনতাইয়ের চেষ্টা, সাম্প্রতিক এই দুটি ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের কর্মকান্ডের পর এই প্রশ্ন আরো জোড়ে সোরে হচ্ছে। যদিও নতুন মন্ত্রীদের পারফরমেন্স বিচার করতে কমপক্ষে ছয় মাস সময় দেয়ার পক্ষে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা। অনেকে আবার এও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ১০ বছর আগে ২০০৯ সালের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রীসভার কথা। সেখানেও বেশিরভাগ সদস্যের মন্ত্রীত্বের পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিলো না।
যাইহোক আনকোড়া মন্ত্রীসভা, মাদক আর দূর্নীতির বিরূদ্ধে যুদ্ধ, এসবের পাশাপাশি সুশাসন আর আর্থিক খাতে শৃক্সখলা- এই দুটি চ্যালেঞ্জও থাকছে শেখ হাসিনার সরকারের সামনে। বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতে যে অস্থিরতা, সেটি এই দফায় ক্যামন করে মোকাবিলা করা হয়, তার দিকে নজর থাকবে অনেকেরই। আরো আছে র্যাব আর পুলিশ বাহিনীর দৌরাত্ম। এর লাগামও টানা দরকার, এমনটাও দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহলে। এটা নিশ্চিত আগামী ৬ মাস এসব ক্ষেত্রে সরকারের কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণ হবে, তারপর বিশ্লেশন।
এর বাইরেও সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ পদ্মা সেতু, রাজধানীতে মেট্রোরেল, চট্টগ্রামে কর্নফুলি নদীর তলদেশে সুরঙ্গ পথ কর্নফুলি টানেলের মতো মেগা প্রকল্প সময়মতো সুষ্ঠুভাবে শেষ করা। আরো আছে রাজধানীর যানজট সমস্যার সমাধান, নিত্য দূর্ঘটনার প্রেক্ষিতে সড়কে শৃক্সখলা ফিরিয়ে আনার মতো বিষয়। গ্রামিণ অবকাঠামোতে শহুরে সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দেয়ার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ক্যামন করে বাস্তবায়ন হয়, সেটিও দেখার অপেক্ষায় থাকবে দেশবাসী।
নিউজ এডিটর, এটিএন বাংলা, ঢাকা-বাংলাদেশ।
Saved as a favorite, I love your web site!
Here is my web blog; Buy CBD