করোনাভাইরাসের পর বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে আরেক ভাইরাস মাঙ্কিপক্স। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৪টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাসটি। ভাইরাসের এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার মধ্যেই যারা এই ভাইরাসে সংক্রমিত হবে, তাদের জন্য তিন সপ্তাহের কোয়ারেন্টাইনে বাধ্যতামূলক করার ঘোষণা দিয়েছে বেলজিয়াম সরকার।
রোববার (২২ মে) দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এ কথা জানিয়েছে। বেলজিয়ামে এখন পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত তিন জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকরা সতর্কতা উচ্চারণের পরপরই বেলজিয়াম সরকার এমন পদক্ষেপ নিলো।
ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর সেক্সুয়াল হেলথ অ্যান্ড এইচআইভি পরিচালক ডা. ক্লেয়ার ডিউসন্যাপও বলেছেন, ভাইরাসটির প্রাদুভাব ব্রিটেনের যৌন স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলোর ওপর ‘ব্যাপক প্রভাব’ ফেলতে পারে।
এর আগে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ জানান, নতুন করে মঙ্কিপক্সে আমাদের দেশে ১১ জন শনাক্ত হয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত দেশটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২০ জনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে। যার বর্তমান অবস্থা আশঙ্কাজনক।
স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডা. ডা. ক্লেয়ার ডিউসন্যাপও বলেন, আমরা ভাইরাস প্রতিরোধে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি তা খুবই সমালোচনামূলক। এটা বলা কঠিন কতোজন আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো ভাইরাসটি ইউরোপে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। এটি সাধারণ মানুষদের আক্রান্ত করছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের আশপাশে আরো রোগী শনাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া এই সপ্তাহ শেষে রোগীর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
মাঙ্কিপস্ক খুবিই বিরল প্রকৃতির ভাইরাস। এটি মূলত পশ্চিম এবং মধ্য আফ্রিকার দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হয়। এই ভাইরাসে আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসলে যে কেউ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন।
মাঙ্কিপক্স ভাইরাসে আক্রান্তদের প্রায়ই জ্বর, পেশীতে ব্যথা, লসিকা গ্রন্থি ফোলা, ঠান্ডা লাগা, ক্লান্তি অনুভব এবং হাত ও মুখে চিকেনপক্সের মতো ফুসকুড়ি দেখা দেয়। সংক্রমিত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ থেকে এই ভাইরাস ছড়ায়। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে, ত্বকের ক্ষত থেকে এবং নাক, মুখ ও চোখের ভেতর দিয়ে এই ভাইরাস মানুষের দেহে প্রবেশ করে।