‘রিয়েলি!’ বলে তাকাই সন্দিগ্ধ চোখে। ‘হু ইজ দ্যাট লাকি!’
চোখের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বলে ‘মাই গড।’
থমকে যাই। ওর ভগবান! ভগবান ওর বন্ধু! কি বোঝালো এ কথা বলে! আমাকে একটু বোকার মতো তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে, ভগবানই তো মানুষের সবচেয়ে বড় বন্ধু। নয় কি!
তবুও ঢোকে না মাথায়। হেসে বলে ওঠে, আমার ভগবান কি এখন নাশতা করবে না! ক্ষিধে লাগেনি?
সম্বিৎ ফেরে। বলি, এ্যা:, ও:, আই এ্যম সরি। এই দেখো ভুলেই গেছিলাম ব্রেকফাস্ট অর্ডার দেয়ার কথা।
বলে, অর্ডার কিন্তু একজনের জন্য।
একজন! আর একজন?
এখানে এখনো অনেক রয়ে গেছে। আমি এগুলো গড়ম করে খেতে পারবো। তুমি শুধু তোমার জন্য অর্ডার দিতে পারো।
অবাক হয়ে যাই। বলি, এখানে আছে মানে! কি আছে!
কেন, কাল বিকেলে তোমার বন্ধু যে নাশতাগুলো এনেছিলো, তার অর্দ্ধেকের বেশীই তো রয়ে গেছে।
তো! কি করেছো ওগুলো! ফেলে দাওনি!
খাওয়ার জিনিষ কেউ ফেলে দেয়? ফ্রিজে রেখে দিয়েছি।
কিন্তু ওগুলো তো বাসি হয়ে গেছে!
ফ্রিজে রাখা খাবারকে কখনো বাসি বলা হয় না।
তুমি ওগুলো খেতে পারবে না।
কেন পারবো না! বাসায় কি ফ্রিজের খাবার গড়ম করে খাই না?
সে তো বাসায়!
তো! এ রুমটা এখন আমার বাসা না! বলে কয়েক মূহুর্ত তাকিয়ে থাকে চোখের দিকে। তারপর গিয়ে ফ্রিজ খুলে কাল সন্ধ্যায় হেলিমের আনা নাশতার প্যাকেটটা বের করে আনে। রাখে টেবিলের ওপর।
হতভম্ব হয়ে থাকি কয়েক মূহুর্ত। কি বলবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। আমাদের এ রুমটাই এখন ওর বাসা! নিজের বাসার মতোই চাইছে সব কিছু স্বাভাবিকভাবে নিতে। বেশ তো!
বলে, ওই গেস্ট হাউসের কিচেনে মাইক্রো ওভেন আছে এখানেও নিশ্চয়ই আছে। সেখান থেকে এগুলো গড়ম করে আনা যায়। আর তুমি যদি ফেলে দিতে বলো তাও দিতে পারি। কোনটা করবো? বলে তাকিয়ে থাকে মুখের দিকে।
ওর ভাব দেখে এবার আমি হেসে দেই। বলি, তুমি এ রুমটাকে নিজের মনে করেছো, সে জন্যে আমি অবশ্যই কৃতজ্ঞ। কিন্তু ম্যাডাম, দিন শুরু করতে হয় ফ্রেশ খাবার দিয়ে। আমিও ফ্রিজ থেকে খাবার গড়ম করে খেতে অভ্যস্ত। তবে এসো এখন কিছু টাটকা খাই।
তার মানে কিছু টাকার অপচয়।
হেসে বলি, অপচয় নয়, এটা প্রয়োজন।
কোন কথা না বলে চুপ হয়ে থাকে। আমি রিসিভার তুলে নাশ্তার অর্ডার দেই। এই ফাঁকে আমাকে রেডী হয়ে নিতে হবে। নাশ্তা খেয়েই বের হয়ে যেতে হবে। জামা প্যান্ট হাতে তুলে নেই। এই এক সমস্যা এসব চায়নীজ গেষ্ট হাউসের। রুমগুলো তেমন বড় নয়। প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সব আছে কিন্তু রুমে হাঁটাচলার জায়গা কম। সব চেয়ে বড় কথা জামা কাপড় বদলানোর জন্য কোন চেঞ্জ রুম বা জায়গা নাই। রুমে কেউ থাকলে বাথরুমে গিয়ে বদলাতে হয়। আবার বাথরুমও অত প্রশস্ত নয় যে ইচ্ছামতো নড়াচরা করা যায়।
আমি প্যান্টশার্ট পরে ফিরে রেডি হতে হতে নাশ্তা এসে যায়। নিশা টেবিলে সাজাতে থাকে তা। মাথা আচড়ে এসে বসি। দশটা বেজে গেছে। মহিলাকে দেয়া চব্বিশ ঘন্টা শেষ হতে যাচ্ছে। সে ফোন করেনি। অবশ্য তার ফোন করার কথাও নয়। আমিই করবো। জানিনা কি বুদ্ধি এঁটে বসে আছে। ফোন করে যদি না পাই। দেরী না করে পুলিশের কাছে যেতে হবে। যদি পালাতে চায়, বিকেলে চেন্নাইয়ের ফ্লাইট ধরবে। এয়ারপোর্টে আটকাতে হবে। সব মিলিয়ে একটা বড় রকমের গ্যাঞ্জাম। মনে মনে চাইতে লাগলাম যেন না পালায় মহিলা।
আমাকে একধ্যানে কিছু ভাবতে দেখে শুধায়, কি ভাবছো?
বলি, ভাবছি মহিলা কোন পথ নিতে পারে। তোমার কি ধারনা সে পালাবে?
Disclaimer:
The editorial team is not responsible for the content of the writing.