প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের ‘চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী সেনা’ নিয়োগ প্রকল্প ‘অগ্নিপথের’ বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারত। শুক্রবার তেলঙ্গানায় উত্তেজিত বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে গুলি চালিয়েছে পুলিশ। ওই ঘটনায় এক আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।
অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রথম বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল বুধবার বিহার রাজ্যে। এরপর এটি তেলেঙ্গানা, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তরপ্রদেশে ছড়িয়ে পড়ে।
শুক্রবার সকাল থেকেই তেলেঙ্গানায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। রাজধানী হায়দরাবাদ ও খম্মাম, নালগোন্ডার মতো জেলায় হয় অবরোধ। ঘটনাচক্রে, দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে ভারতীয় সেনায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় রয়েছেন তেলুগুভাষীরাই। ব্রিটিশ আমলে গঠিত মাদ্রাজ রেজিমেন্টের অন্তর্গত ব্যাটেলিয়নগুলির সেনাদের বড় অংশই তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা। ওই দুই রাজ্যের যুবকদের দীর্ঘ দিন ধরেই সেনায় যোগদানের প্রবণতা রয়েছে। ফলে আগামী দিনে সেখানে অগ্নিপথ বিরোধী আন্দোলন আরও তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শুক্রবার দুপুরে সেকেন্দ্রাবাদ স্টেশনে আগুন লাগানো হয় প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা একটি যাত্রিবাহী ট্রেনে। স্টেশন চত্বরে ঢুকে পড়ে আন্দোলনকারীরা ট্রেন পোড়ায়। ওই সময় উত্তেজিত জনতাকে ঠেকাতে অন্তত ১৭ রাউন্ড গুলি চালানো হয়। আহতদের মধ্যে ১৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা অন্তত তিনটি ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করেছে।
মঙ্গলবার অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। ওই প্রকল্পে ১৭-২১ বছরের তরুণ-তরুণীরা চার বছরের জন্য মাসিক ৩০-৪৫ হাজার রুপি চুক্তির ভিত্তিতে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখায় যোগ দিতে পারবেন। তাদের বলা হবে ‘অগ্নিবীর’। সেনায় শূন্যপদ ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চতুর্থ বছরের শেষে সেই ব্যাচের সর্বাধিক ২৫ শতাংশ অগ্নিবীরকে বাহিনীকে স্থায়ী করা হবে। বাকিদের ১১-১২ লাখ রুপি হাতে দিয়ে পাঠানো হবে অবসরে। তাদের থাকবে না কোনও পেনশন।